গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
দেশে প্রতি দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় রেকর্ড অব্যাহত। রবিবার নতুন করে আক্রান্ত হলেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯৯৭১ জন। এক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যায় এটাই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এই নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও পৌঁছে গেল প্রায় আড়াই লক্ষে। রবিবার সকালের হিসেবে দেশে মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬২৮।
রবিবারের এই আক্রান্তের পরিসংখ্যান আসার পর বিশ্বের করোনা আক্রান্ত দেশগুলির তালিকায় আরও এক ধাপ উপরে উঠে এল ভারত। এখন ভারতের স্থান পঞ্চম। ভারতের চেয়ে বেশি কোভিড আক্রান্ত রয়েছে মোট চারটি দেশে— আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া এবং ব্রিটেন। রবিবারের এই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে স্পেনেরও উপরে উঠে এল ভারত।
উদ্বেগ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা নিয়েও। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২৮৭ জনের। এই নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৬,৯২৯। মৃতের তালিকায় এখনও শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সে রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ২,৬৬৯ জনের। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে গুজরাত (১,২১৯), দিল্লি (৭৬১), মধ্যপ্রদেশ (৩৯৯), পশ্চিমবঙ্গ (৩৮৩), উত্তরপ্রদেশ (২৫৭), তামিলনাড়ু (২৫১), রাজস্থান (২৩১) এবং তেলঙ্গানার (১২৩) মতো রাজ্য।
আরও পড়ুন: করোনা-আক্রান্ত পুলিশকর্মীর মৃত্যু
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে রাজ্যে মোট কোভিড আক্রান্ত ৭,৭৩৮ জন। কেন্দ্রের হিসেবে রাজ্যে কোভিডে মৃতের সংখ্যা ৩৮৩। তবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যানে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩১১ জনের। কোভিড আক্রান্ত কিন্তু অন্য কারণে অর্থাৎ কো-মর্বিডিটিতে মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের।
আরও পড়ুন: রাজ্যে এক দিনে মারা গেলেন ১৭ জন, নতুন করে করোনা আক্রান্ত ৪৩৫
মৃতের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাতেও দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র (৮২,৯৬৮)। দ্বিতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। দক্ষিণের এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ১৫২। আক্রান্তের সংখ্যায় এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে দিল্লি (২৭,৬৫৪), গুজরাত (১৯,৫৯২), রাজস্থান (১০,৩৩১), উত্তরপ্রদেশ (৯,৭৩৩), মধ্যপ্রদেশ (৯,২২৮), পশ্চিমবঙ্গ (৭,৭৩৮), কর্নাটক (৫,২১৩), অন্ধ্রপ্রদেশ (৪,৫১০), বিহার (৪,৯১৫), হরিয়ানা (৩,৯৫২), তেলঙ্গানা (৩,৪৯৬), জম্মু-কাশ্মীর (৩,৪৬৭), ওড়িশা (২,৭৮১), পঞ্জাব (২,৫১৫) এবং অসমের (২,৩৯৭) মতো রাজ্য।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
তবে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি দিন লাফিয়ে বাড়লেও একাধিক স্বস্তির খবরও রয়েছে। প্রথমত, আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক সংখ্যক মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দেশে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন কোভিড আক্রান্ত ১ লক্ষ ১৯ হাজার ২৯৩ জন। আবার আক্রান্তের সংখ্যায় যে সব দেশ ভারতের কাছাকাছি রয়েছে, সেই সব দেশের জনসংখ্যা ভারতের তুলনায় অনেক কম। মৃত্যুর হারও ওই সব দেশের তুলনায় কম ভারতে।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy