Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Consumer Spending

দেশের গ্রামাঞ্চলে খাবার-জামাকাপড়ের কেনাকাটা চার দশকে সর্বনিম্ন! বলছে রিপোর্ট

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশের ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশই গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। কিন্তু খাদ্য, শিক্ষা এবং পরিচ্ছদ— এই তিনটি ক্ষেত্রেই খরচের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

কমেছে নিত্যসামগ্রীর কেনাকাটা। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

কমেছে নিত্যসামগ্রীর কেনাকাটা। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:১৮
Share: Save:

অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়ে কাটাছেঁড়ার মধ্যেই মোদী সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াল জিনিসপত্র কেনাকাটা বাবদ সাধারণ মানুষের খরচের হিসাব। গত চার দশকে এই প্রথম তা সর্বনিম্নে এসে ঠেকেছে বলে দাবি করল ‘বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকা।

ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস (এনএসও)-এর ‘অপ্রকাশিত তথ্য’ তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওই পত্রিকা। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৭-র জুলাই থেকে ২০১৮-র জুনের মধ্যে গ্রামাঞ্চলে নিত্যপণ্যের কেনাকাটার হার ৮.৮ শতাংশ কমে গিয়েছে। ১৯৭২-’৭৩-এর পর একটানা এক বছর এমন পরিস্থিতি আর কখনও দেখা দেয়নি।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশের ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশই গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তাঁদের। কিন্তু খাদ্য, শিক্ষা এবং পরিচ্ছদ— এই তিনটি ক্ষেত্রেই খরচের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। এমনকি, কম খরচে শরীরে পুষ্টির জোগান দিতে যে দানাশস্যের উপর নির্ভরশীল জনসংখ্যার একটা বিশাল অংশ, সেই দানাশস্য কেনাও ২০ শতাংশ কমে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: বাবরির পরিবর্তে কিছু নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না, জানিয়ে দিল জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ

অন্য দিকে, গ্রামাঞ্চলের মতো শহরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন। তবে গ্রামাঞ্চলের সঙ্গে হিসাবে অনেকটাই ফারাক রয়েছে।

একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই পত্রিকা অভিযোগ করেছে, চলতি বছরের জুন মাসেই এনএসও-র এই রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক সঙ্কট নিয়ে একদিকে মোদী সরকার যখন জেরবার, ঠিক সেইসময় এই রিপোর্টটি প্রকাশ পেলে সরকারের প্রতি মানুষের ক্ষোভ বৃদ্ধি পাবে, সেই আশঙ্কায় রিপোর্টটি চেপে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

যদিও রিপোর্টটি অসম্পূর্ণ বলে সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের আধিকারিক একে মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘এনএসও-র রিপোর্টটি অসম্পূর্ণ। অনেক আধিকারিকই বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ না করা পর্যন্ত, বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে সেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত, মেয়াদ পূর্ণ করবে সরকার, দাবি পওয়ারের

তবে এর আগে, জানুয়ারি মাসেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। অপ্রকাশিত তথ্য তুলে ধরে সেইসময় ওই পত্রিকা জানায়, গত ৪৫ বছরে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চে গিয়ে ঠেকেছে। শিয়রে লোকসভা নির্বাচন থাকায় তখন ওই রিপোর্টের সত্যতা মেনে নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু ভোট মিটলে মে মাসে কেন্দ্রীয় সরকার যখন সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে, তখন দেখা যায় ওই পত্রিকার দাবিই ঠিক ছিল।

সেই ঘটনার কথা মাথায় রেখে তাই ইতিমধ্যেই মোদী সরকারকে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। বেকারত্বের রিপোর্টের মতো সাধারণ মানুষের খরচ কমিয়ে দেওয়ার তথ্যও লুকিয়ে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। ‘বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’-এর ওই প্রতিবেদনটি তুলে ধরে টুইটারে তিনি লেখেন, ‘মোদীর আমলে অর্থনীতির এমনই হাল যে নিজেদের রিপোর্টই গোপন করতে হচ্ছে সরকারকে।’

রাহুলের টুইট।

তবে শিল্পক্ষেত্রে মন্দা থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বিক্রিবাটা কমে যাওয়া, এ সবের জন্য মোদী সরকারের নোটবন্দি এবং জিএসটি চালুর সিদ্ধান্তকেই দুষছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE