কর্নাটকে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বিজেপিকেই দুষলেন খড়্গে। —ফাইল চিত্র।
একের পর এক বিদ্রোহী বিধায়কের ইস্তফার হিড়িকে কর্নাটক হাতছাড়া হওয়ার জোগাড় কংগ্রেস- জনতা দল সেকুলার (জেডিএস) জোটের। এই পরিস্থিতির জন্য বিজেপির ‘ঘোড়া বেচাকেনা’-কেই দায়ী করলেন দলের প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিরোধীদের উচ্ছেদ করতে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। দল ভাঙানোর চেষ্টা করছে।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খড়্গে বলেন, ‘‘অ-বিজেপি সরকারগুলির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি। আঞ্চলিক দলগুলিকে দুর্বল করে দিতে চায় ওরা। দুর্ভাগ্যের বিষয়, প্রত্যক্ষ ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এই অশান্তিতে জড়িত, যা একেবারেই ঠিক নয়।’’
বিজেপির তরফে অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। উল্টে এই পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেসের দিকেই আঙুল তুলেছে তারা। দলের নেতা প্রহ্লাদ জোশীর দাবি, এইচডি কুমারস্বামীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে করতে চেষ্টা চালাচ্ছে কংগ্রেস। তাঁর জায়গায় নিজেদের দলের কাউকে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী করতে চাইছে। মল্লিকার্জুন খড়্গেকেই কংগ্রেস কুমারস্বামীর বিকল্প হিসাবে ভাবছে বলে বিজেপি দাবি করলেও, খড়্গে নিজে তা উড়িয়ে দেন। কুমারস্বামী-ই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন, তাই বিদ্রোহী বিধায়কদের নিশ্চিন্তে দলে ফিরে আসতে আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মেয়ের আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে! ‘শাপমুক্তি’-র জন্য ৩ বছরের শিশুকে বলির চেষ্টা শিক্ষক পরিবারের
তবে খড়্গের আশ্বাসে কাজ হয়নি। বরং একের পর এক বিধায়কের ইস্তফার বিরুদ্ধে রবিবার সকালে বেঙ্গালুরুতে কংগ্রেসের দফতরের বাইরে বিক্ষোভ দেখান দলীয় সমর্থকরা। ওই বিধায়কদের পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিতে হবে বলে দাবি জানান তাঁরা। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে এ দিন দুপুরে বেঙ্গালুরুতে বৈঠকে বসেন জেডিএস নেতারা। তাতে যোগ দেন এইচডি দেবগৌড়া এবং ডিকে শিবকুমারও।
গত বছর মে মাসে কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বিজেপি। কিন্তু তাদের টপকে সেখানে জোট সরকার গড়ে কংগ্রেস ও জেডিএস। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন এইচডি কুমারস্বামী। কিন্তু এ বছর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুই দলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। শুরু হয় দোষারোপের পালা।
সেই ঝড় সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলাকালীনই সম্প্রতি একের পর এক বিধায়ক ইস্তফা দিতে শুরু করেন। যার মধ্যে কংগ্রেস-জেডিএস মিলিয়ে শনিবারই ১৪ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন বলে সামনে আসে। তাতে কর্নাটক বিধানসভায় জোট সরকারের সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। বেলার দিকে বিধানসভার স্পিকারে দফতর থেকে জানানো হয়, পদত্যাগপত্র জমা পড়েছে ১৩টি।
আরও পড়ুন: গতির বিপ্লবই কাপ জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে কোহালির ভারতকে
একঝাঁক বিধায়ক একসঙ্গে ইস্তফা দেওয়ার পর এই মুহূর্তে ২২৪ আসনের বিধানসভায় জেডিএস-কংগ্রেস জোট এবং বিজেপি—দু’পক্ষেরই আসন সংখ্যা ১০৫। তবে বিধানসভার স্পিকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কংগ্রেস বা জেডিএস থেকে আরও বিধায়ক ইস্তফা দিলে, বিজেপির সামনে ক্ষমতা দখলের রাস্তা খুলে যেতে পারে। আবার কোনও কারণে স্পিকার বিধায়কদের ইস্তফা খারিজ করলে, আপাতত ক্ষমতায় টিকে থাকবেন কুমারস্বামী।
দলের সঙ্কট বুঝে শীঘ্রই আমেরিকা থেকে বেঙ্গালুরু ফিরছেন কুমারস্বামী। ফিরছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি দীনেশ গুন্ডুরাও। বিজেপির তরফে পদত্যাগী বিধায়কদের মধ্য থেকে ১০ জনকে বিশেষ বিমানে চাপিয়ে ইতিমধ্যেই মুম্বই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে বিলাসবহুল বিকেসি হোটেলে রাখা হয়েছে সকলকে। এ দিন সকালে ওই হোটেলের বাইরে দেখা গিয়েছে মহারাষ্ট্র বিজেপির বিধান পরিষদীয় সদস্য প্রসাদ লডকেও। যদিও ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি মল্লিকার্জুন খড়্গের। আগামী ১২ জুলাই কর্নাটক বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশন। তখনই ছবিটা স্পষ্ট হবে বলে জানান তিনি।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy