কপিল সিব্বল। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
কংগ্রেসের অভ্যন্তরে অধীর চৌধুরী-কপিল সিব্বল কাজিয়া আরও ঘোরাল হল। ঘনিষ্ঠ মহলে আবার অধীর-সহ দলীয় নেতৃত্বের কড়া সমালোচনা করেছেন সিব্বল। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীরের সমালোচনার পাল্টা সিব্বল তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ‘‘অধীর যা বলেছেন, তা দুর্ভাগ্যজনক। কারণ, অধীর-সহ কংগ্রেসের বাকি নেতারা জানতেনই না যে, বেশিরভাগ ‘জি-২৩’ নেতারা বিহারে দলের হয়ে প্রচারে যাননি। শুধু তা-ই নয়, দল তাঁদের আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা কেউ বিহারে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেননি।’’
প্রসঙ্গত, কপিল যে ‘জি-২৩’ নেতাদের কথা বলেছেন, তাঁরা কংগ্রেসের সেই ‘বিদ্রোহী’ ২৩ জন নেতা, যাঁরা দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনা করে গত অগস্টে চিঠি দিয়েছিলেন শীর্ষ নেতৃত্বকে। তার অব্যবহিত পরেই কংগ্রেসের অভ্যন্তরে ঝড় শুরু হয়। ওই নেতাদের দলের বিভিন্ন পদ থেকে সরিয়েও দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, সদ্যসমাপ্ত বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের খারাপ ফলের জন্য মহাজোটকে হারতে হয়েছে, এটা স্পষ্ট হওয়ার পর সিব্বল অভিযোগ করেন, দলের শীর্ষনেতৃত্ব সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। যার উত্তরে সিব্বলকে দল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার ‘পরামর্শ’ দেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, অধীরের সেই বক্তব্যে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের অনুমোদন ছিল। অধীর বলেছিলেন, ‘‘কিছু নেতার যদি মনে হয়, কংগ্রেস তাঁদের জন্য সঠিক দল নয়, তাহলে তাঁরা নতুন দল গড়তেই পারেন। অথবা অন্য কোনও দলকে প্রগতিশীল বলে মনে হলেসেখানেও চলে যেতে পারেন। তা না-করে এই ধরনের আচরণে দলকে বিব্রত না করলেই পারেন। এতে দলের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হতে পারে।’’
অধীরের এই মন্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ঘনিষ্ঠ মহলে সিব্বল বলেছেন, বিহার নির্বাচনে অধীর-সহ কংগ্রেসের শীর্ষনেতারা ভোটপ্রচারের শুরু থেকে না যাওয়ায় তিনি ‘বিস্মিত’ হয়েছিলেন। সিব্বল-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতারা বলছেন, তাঁদের কাছে দলের অধিকাংশ নেতা একান্তে স্বীকার করেছেন, দলের অভ্যন্তরে ‘বড় ধরনের বিভাজন’ তৈরি হয়েছে, যা অবিলম্বে মেটানোর প্রয়োজন। সলমন খুরশিদ বা অশোক গহলৌতের নাম উল্লেখ না করলেও তাঁরা বলেন, দলের অভ্যন্তরে এই বিভাজন ক্রমেই বাড়ছে। সিব্বল-অনুগামী এক নেতার কথায়, ‘‘সমস্যা সমাধানে দল কোনও কঠোর পদক্ষেপ না করলে এবং শক্তিশালী ও কর্মোদ্যোগী কোনও নেতাকে সামনে না আনলে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ নেতৃত্বাধীন বিজেপির সঙ্গে লড়াইয়ে দল আরও পিছিয়ে পড়বে।’’
বস্তুত, ‘কংগ্রেস বনাম কংগ্রেস’-এর এই দ্বন্দ্ব ভিন্নমাত্রা পায় সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সিব্বল দলীয় নেতৃত্বকে তুলোধনা করার পর। সাক্ষাৎকারে সিব্বল বলেছিলেন, ‘‘যে সব রাজ্যে কংগ্রেস শক্তিশালী ছিল, সে সব রাজ্যে দল শক্তি হারিয়েছে। দলের শীর্ষনেতৃত্বেরআত্মসমীক্ষার সময় এসেছে।’’ সদ্যসমাপ্ত বিহারে বিধানসভা ভোটে এবং গুজরাত ও মধ্যপ্রদেশে উপনির্বাচনে ভরাডুবির প্রেক্ষিতে ওই মন্তব্য করেন সিব্বল। সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘দলের অভ্যন্তরে এ নিয়ে কোনও আলোচনা হচ্ছে না। শীর্ষনেতৃত্ব দলীয় সমস্যা নিয়ে মাথাই ঘামাচ্ছেন না।’’
আরও পড়ুন: সিব্বলের পরে ভরাডুবি নিয়ে সরব চিদম্বরমও
আরও পড়ুন: অন্য দলে যান বা নতুন দল গড়ুন, সিব্বলকে হুঁশিয়ারি দিলেন অধীর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy