Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
India

বাবার স্বপ্নপূরণে সেনায় যোগ দেন কর্নেল সন্তোষ

সন্তোষের বাবা পি উপেন্দ্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী। তিনি মনে করেন, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার অর্থ দেশের সেবা করা।

বিধ্বস্ত: সন্তোষ বাবুর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পরে তাঁর পরিজন। তেলঙ্গানার সূর্যপেটে। পিটিআই

বিধ্বস্ত: সন্তোষ বাবুর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পরে তাঁর পরিজন। তেলঙ্গানার সূর্যপেটে। পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৫:৩১
Share: Save:

পরিবারের অনেকেরই আপত্তি ছিল। কিন্তু সে সবে আমলই দেননি তিনি। বাবার স্বপ্নপূরণকেই নিজের স্বপ্ন করেছিলেন লাদাখে চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত কর্নেল সন্তোষ বাবু।

লাদাখ থেকে গত রবিবার সন্তোষ বাড়িতে ফোন করেছিলেন। কথা হয়েছিল বাবা-মায়ের সঙ্গে। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কর্নেলের মৃত্যুসংবাদ পৌঁছল তাঁর পরিবারের কাছে। সন্তোষের বাবা পি উপেন্দ্র অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী। তিনি মনে করেন, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার অর্থ দেশের সেবা করা। এই সন্তানহারা পিতার কথায়, ‘‘সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশের সেবা করতে পারিনি। সব সময়ই চেয়েছি, ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে দেশ সেবা করুক। ছেলে আমার স্বপ্ন সফল করছে। আত্মীয়-পরিজন অনেক বাধা দিয়েছিল। কিন্তু সন্তোষ তা শোনেনি।’’ উপেন্দ্র জানিয়েছেন, ছেলের জন্য তিনি গর্বিত। রবিবার রাতে বাড়িতে ফোন করে সন্তোষ বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেছিলেন তাঁর মায়ের সঙ্গে। সন্তোষের মা বলেন, ‘‘লাদাখে গন্ডগোলের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম। ও বলল, এ সব ফোনে আলোচনা করা যায় না। আমি বলেছিলাম, সাবধানে থাকিস।’’ এর পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পুত্রহারা মা। পরে কিছুটা সামলে নিয়ে বললেন, ‘‘ছেলে দেশের জন্য জীবন দিল, আমার গর্ব তো হবেই।’’ পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, শীঘ্রই হায়দরাবাদে সন্তোষের পোস্টিং হওয়ার কথা ছিল। রবিবার ফোনে মায়ের সঙ্গে সে ব্যাপারেও কথা হয়েছিল। কিন্তু ছেলেকে আর কাছে পাওয়া হল না বাবা-মায়ের।

সন্তোষের বাবা জানান, পড়াশোনা শেষ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছিলেন সন্তোষ। ২০০৪ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পোস্টিং ছিল জম্মু-কাশ্মীরে। ১৬ বিহার রেজিমেন্টে ছিলেন তিনি। গত বছরের ২ ডিসেম্বর লাদাখে কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

আরও পড়ুন: রাতের সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত, চিনের তরফেও হতাহত ৪৩

আরও পড়ুন: মোদীর ‘দোলনা নীতি’ নিয়ে প্রশ্ন বিরোধীর

লাদাখে চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত কর্নেল সন্তোষ বাবু।

সন্তোষ আদতে তেলঙ্গানার সূর্যপেট জেলার বাসিন্দা। এক ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে দিল্লিতে থাকেন সন্তোষের স্ত্রী। সব ঠিক থাকলে আগামিকাল সূর্যপেট জেলায় পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে সন্তোষের মরদেহ। জেলার পুলিশ সুপার আর ভাস্করন বলেন, ‘‘আমরা জেনেছি, সন্তোষের দেহ প্রথমে দিল্লি নিয়ে আসা হবে। সেখান থেকে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে মরদেহ নিয়ে বুধবার সূর্যপেটে আসবেন।’’

ঝাড়খণ্ডের জওয়ান কুন্দন ওঝা মাত্র ১৭ দিন আগে এক কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছিলেন। মেয়ের মুখ দেখা হয়নি তাঁর। তার আগেই মৃত্যু এসে ছিনিয়ে নিল তাঁকে। হাবিলদার পাঝানির বাড়ি তামিলনাড়ুর রামনাথপুরমে। তাঁর ১০ বছরের ছেলে এবং আট বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। জানুয়ারি মাসে শেষ বাড়ি গিয়েছিলেন পাঝানি। এ মাসেই নতুন বাড়ি তৈরি হয়েছিল। নতুন বাড়ি আর দেখা হল না। ওঁদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর টুইট, ‘‘দেশের সেবা করতে গিয়ে সেনাবাহিনীর যে তিন জন শহিদ হলেন, তাঁদের বীরত্বকে স্যালুট করছি। তাঁদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি। এই চরম সময়ে ঈশ্বর তাঁদের কঠিন আঘাত সহ্য করার শক্তি দিন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

India China Ladakh LAC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy