শি চিনফিং। ফাইল চিত্র।
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের চিনা সামরিক গুরু ও দার্শনিক সুন জু-র প্রবর্তিত কৌশল আজও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ‘ওয়ার জ়োন ডকট্রিন’-এর অন্যতম উপাদান। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই একই সমর কৌশলের কথা চাণক্যও বলেছিলেন। সেই কৌশলটির আধুনিক নাম ‘সাই অপস’ বা মনস্তাত্ত্বিক অস্ত্র। ডোকলাম সংঘাতের সময় যার ব্যবহার হয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে চলতি লাদাখ সীমান্তের সংঘাতেও।
‘সাই অপস’-এর কাজ হল, প্রতিপক্ষকে সন্ত্রস্ত করা, ভুল পথে চালিত করা, বিভ্রান্তি তৈরি করা এবং বিরোধী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক মতপার্থক্য তৈরি করা। শি চিনফিং সরকার এই অস্ত্রেই সোশ্যাল মিডিয়া, নিজেদের নিয়ন্ত্রিত প্রচারমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মনোবল কমানোর প্রয়াস করে যাচ্ছে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগ্রহণকারীদের বিভ্রান্ত করার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে।
সূত্রের মতে, চিনের তরফে পরিকল্পনামাফিক বেশ কিছু ভিডিয়ো, স্থিরচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে, যা প্রতিপক্ষের কাছে বিভ্রান্তিকর। জমায়েত হওয়া সেনা এবং তাদের অস্ত্র সম্পর্কেও কিছুটা বাড়িয়ে বলা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। একটি অনামা ভিডিয়ো বেজিং সুকৌশলে বাজারে ছাড়ে দিন পনেরো আগে, যেখানে দেখা যায় ভারতীয় সেনাকে সীমান্তে বেধড়ক মারছে চিনা সেনাবাহিনী। বিদেশ মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে জানায় এটি একটি জাল ভিডিয়ো।
এখন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় কত সেনা জমায়েত হয়েছে এবং তাদের কী প্রস্তুতি, তা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে স্পষ্টই বোঝা যায়। তা সত্ত্বেও চিনের পক্ষ থেকে ছবি তৈরি করে দেখানো হচ্ছে, আসল জমায়েতের প্রায় তিন গুণ বড় সৈন্য সমাবেশ। ভারত সরকারের উপর মানুষের বিশ্বাস নষ্ট করার চেষ্টাই এর লক্ষ্য। সম্প্রতি বেজিং-এর সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস চিনের একটি হেলিকপ্টার ড্রোন নিয়ে ঢাক পিটিয়ে বলে, সেটি সমুদ্রপৃষ্ঠের ৫০০০ মিটার উঁচুতে ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার গতিতে একটানা পাঁচ ঘণ্টা উড়তে পারে। সেটিকে সীমান্তে মোতায়েন করা হবে বলেও জানানো হয়। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি নিছকই উপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা।
ড্রোনের মতো নিরীহ হেলিকপ্টার বাগে আনার সরঞ্জাম ভারতের রয়েছে। সেই সঙ্গে মোটরচালিত ক্যানন, ক্ষেপণাস্ত্র সীমান্তে মজুত করা নিয়েও বেশ কিছু ভুল তথ্য চিনের পক্ষ থেকে হাওয়ায় ছড়ানো হচ্ছে বলে কেন্দ্রের অনুমান।
মনস্তাত্ত্বিক অপারেশন-এর আরও একটি দিক হল, আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফেরানোর কথা বলে এক দিকে আশার আলো তৈরি করা। অন্য দিকে ঠিক বিপরীত কাজ করে আশা ভঙ্গ করা। এক দিকে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলছেন, ভারত-চিন সীমান্তে যে মেকানিজম রয়েছে সেগুলিকে কাজে লাগিয়েই জট ছাড়ানো যাবে। ঠিক দু’দিন পরেই চিনের সরকারি মুখপত্র হুমকির সুরে লিখছে যে, সূচ্যগ্র জমিও ভারতকে দেওয়া হবে না। ভারত যেন আমেরিকার ফাঁদে পা না দেয়। দিলে মূর্খামির ফল ভুগতে হবে। ভারত সীমান্তের কাছেই চিনের হুবেই প্রদেশে চিনা সেনাবাহিনী এবং বায়ুসেনা মহড়া দিয়ে শক্তি প্রদর্শনের বার্তা দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy