গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
নিজের অফিসেই একটি ভুয়ো লোক নিয়োগের অফিস খুলে দেদার ‘ব্যবসা’ চালাচ্ছিলেন একটি নামজাদা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার এক সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। দেওয়া হচ্ছিল পাঁচতারা হোটেলে লোভনীয় চাকরির টোপ। তার জন্য বিভিন্ন রাজ্যের মহিলা আবেদনকারীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছিল তাঁদের নগ্ন ছবি। ভিডিয়ো। তার পর সেই সব নগ্ন ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মহিলা আবেদনকারীদের কাছ থেকে যথেচ্ছ টাকা তোলা হচ্ছিল। এই ভাবে ১৬টি রাজ্যের ৬০০ মহিলার নগ্ন ছবি ও ভিডিয়ো সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চেন্নাইয়ে নিজের অফিসেই ওই ভুয়ো লোক নিয়োগের অফিস খুলেছিলেন একটি নামজাদা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ক্লেমেন্ট রাজ চেঝিয়ান ওরফে প্রদীপ। বেশির ভাগ দিনেই তাঁর থাকত নাইট শিফ্ট। আর ওই সময়েই তিনি এই সব কাজ করতেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এক স্থানীয় মহিলা আবেদনকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবারাবাদ পুলিশ ক্লেমেন্টকে তাঁর চেন্নাইয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে শনিবার হায়দরাবাদে নিয়ে এসেছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বেশ কিছু দিন ধরেই ওই ‘ব্যবসা’ চালাচ্ছিলেন ক্লেমেন্ট। পাঁচতারা হোটেলে লোভনীয় চাকরির টোপ দিয়ে ইতিমধ্যেই ক্লেমেন্ট ১৬টি রাজ্যের ৬০০ মহিলা আবেদনকারীর কাছ থেকে তাঁদের নগ্ন ছবি ও নগ্ন ছবির ভিডিয়ো নিয়েছেন।
অভিযুক্ত ক্লেমেন্ট পুলিশের কাছে তার অপরাধ কবুল করেছেন। জানিয়েছেন, তিন মহিলা আবেদনকারীদের কাছ থেকে তাঁদের মোবাইল ফোনের নম্বরও সংগ্রহ করতেন। এও জানিয়েছেন, তাঁকে অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে মহিলা আবেদনকারীরা ইতিমধ্যেই নগ্ন ছবি ও ভিডিয়ো পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন- প্যান্টের পিছনে মৌচাক! দেখেছেন বা শুনেছেন কখনও?
আরও পড়ুন- পথে উচ্চবর্ণের বাধা, দড়ি বেয়েই শ্মশানে দলিতের দেহ
পুলিশি জেরায় ক্লেমেন্ট জানিয়েছেন, প্রথমে তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন একটি নামকরা পাঁচতারা হোটেলের কর্মীনিয়োগ ম্যানেজার হিসাবে। সেই পরিচয় দিয়েই মহিলা আবেদনকারীদের কাছ থেকে ফোন নম্বর সংগ্রহ করতেন। তাঁদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। তার পর তাঁদের ডেকে পাঠাতেন দ্বিতীয় পর্যায়ের একটি ইন্টারভিউয়ে। সেই সময় তাঁকে সাহায্য করতেন আর এক মহিলা। তাঁর নাম অর্চনা জগদীশ।
এক তদন্তকারী পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ইন্টারভিউয়ের পরেই সম্পূর্ণ অচেনা একটি ফোন নম্বর থেকে ক্লেমেন্ট হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠাতেন মহিলা আবেদনকারীদের। সেই মেসেজেই তিনি তাঁদের নগ্ন ছবি ও ভিডিয়ো পাঠাতে বলতেন। তার কারণ হিসাবে বলতেন, কাজটা একেবারে সামনে থেকে করতে হবে বলে, লোকজনের সঙ্গে মিশতে হবে বলে পাঁচতারা হোটেল কর্তৃপক্ষ যাঁদের নিয়োগ করবেন, তাঁদের ফিগার কেমন, তা-ও জেনে-বুঝে নিতে চান।
সেখানেই শেষ হত না। এর পর ওই মহিলা আবেদনকারীদের ভিডিয়ো কল করতেন ক্লেমেন্ট। কলের মধ্যেই তাঁদের পোশাক খুলে দেখাতে বলতেন। সেই সময়েই তিনি আলাদা একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেই ভিডিয়ো রেকর্ড করতেন। আর তা তুলে রাখতেন একটি গোপন গ্যালারিতে। যে গ্যালারি খোলার জন্য একটি গোপন পাসওয়ার্ড ছিল ক্লেমেন্টের।
পুলিশের মিয়াপুর ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার এস রবি কুমার বলেছেন, ‘‘যে গ্যাজেটগুলি উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলিকে পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy