Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নের মুখে পড়ে ‘বাছাই’ ইউরোপীয় এমপিদের কাশ্মীরে যাওয়ার ব্যবস্থা করল মোদী সরকার

সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকের পরে ২৮ জনের এই প্রতিনিধিদলটি মঙ্গলবার কাশ্মীরে পৌঁছচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাংসদদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। এপি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাংসদদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। এপি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১৩
Share: Save:

বিরোধী দলের সাংসদেরা কাশ্মীরে ঢুকতে চাইলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমপি-দের একটি দলকে কাশ্মীরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিল মোদী সরকার।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকের পরে ২৮ জনের এই প্রতিনিধিদলটি মঙ্গলবার কাশ্মীরে পৌঁছচ্ছে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেই জানিয়েছে, এটি সরকারি সফর নয়। বিদেশি এমপি-রা প্রত্যেকেই বেসরকারি ভাবে এ দেশে এসেছেন। এই প্রতিনিধিদলের অনেকেই আবার অতি-দক্ষিণপন্থী, শরণার্থী-বিরোধী বলে পরিচিত দলের সদস্য। বিরোধীদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নের মুখে পড়ে বিজেপি সরকারই বাছাই করা এমপি-দের আমন্ত্রণ জানিয়ে কাশ্মীরে পাঠাচ্ছে। যাতে তাঁদের ইতিবাচক রিপোর্টে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সওয়াল করতে সুবিধা হয়। প্রতিনিধিদলের সদস্য বি এন ডান বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের সবটাই ব্যাখ্যা করেছেন। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে বাস্তব পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করব।’’

কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ এবং তার পরে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার পরে এই প্রথম কোনও বিদেশি প্রতিনিধিদল কাশ্মীরে যাচ্ছে। তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, মেহবুবা মুফতি, ফারুক ও ওমর আবদুল্লা-সহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাকেই আটক করে রাখা হয়েছে। কাশ্মীরের বাইরে থেকে কোনও রাজনীতিক সেখানে যেতে গেলেও বাধা পাচ্ছেন। আজ কংগ্রেসের জয়রাম রমেশের অভিযোগ, এটা দেশের সংসদের অপমান। পিডিপি নেত্রী মেহবুবার অভিযোগ, কাশ্মীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এসেছে বলে বোঝাতে মরিয়া সরকার অবিরাম কূটনৈতিক ভুল করছে। ফ্যাসিবাদী, অতি দক্ষিণপন্থী ও শরণার্থী-বিরোধী ইউরোপীয় এমপি-দের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

কিছু দিন আগেই মার্কিন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নয়াদিল্লির কাছে দাবি তোলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের কাশ্মীরে যেতে দেওয়া হোক। কারণ নয়াদিল্লি যা বলছে, সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট তার সঙ্গে মিলছে না। বিরোধীরা মনে করছেন, চাপ কাটাতে মার্কিন কংগ্রেসের বদলে নিজেদের বাছাই করা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের কাশ্মীরে নিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার।

আজ মেহবুবা তাঁর মেয়ের মাধ্যমে টুইট করে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ওঁরা কি তিন জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন না?’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘৩৭০ রদ করা যদি জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়, তা হলে রাহুল গাঁধীকে কাশ্মীরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? ফ্যাসিবাদী না হলে, মনে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা না থাকলে কাশ্মীরের টিকিট পাওয়া সম্ভব নয়!’’ বিজেপির মধ্যে থেকেও সুব্রহ্মণ্যম স্বামী দাবি তুলেছেন, ‘‘এটা জাতীয় নীতির বিকৃতি। অবিলম্বে এই অনৈতিক সফর বাতিল করা হোক।’’

ইউরোপীয় দলটিতে ব্রেক্সিট পার্টি, ল পেন’স পার্টি, বেলজিয়ামের ভিবি-র মতো অতি দক্ষিণপন্থী দলের এমপি-রা রয়েছেন। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘এই বেসরকারি দলটি মূলত অতি দক্ষিণপন্থী ফ্যাসিবাদীদের, যাঁদের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক রয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, কেন আমাদের সাংসদরা কাশ্মীরে ঢোকার অনুমতি পান না। অথচ মোদী এঁদের স্বাগত জানান।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jammu and Kashmir Article 370 Narendra Modi Ajit Doval European Union
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy