শাহিনবাগে চলছে আন্দোলন। -ফাইল চিত্র
আগামিকাল শনিবার দিল্লি বিধানসভার ভোটগ্রহণ। এই সময় আদালতের কোনও সিদ্ধান্ত ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আপাতত শাহিন বাগের প্রতিবাদীদের উচ্ছেদের দাবিতে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি সোমবার পর্যন্ত স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লির প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোরের দায়ের করা মামলার শুনানিতে সে কথা উল্লেখ করে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এস কে কল-এর সরস মন্তব্য, ‘‘ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে, তাই আমরা মামলার শুনানি স্থগিত রাখছি।’’
মামলাকারীর আইনজীবীরা সওয়াল করেছিলেন, সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়ার অর্থ দিল্লির বিধানসভা ভোটের আগে আর শুনানি হবে না। তার পরেই বিচারপতি ‘বিড়াল বেরিয়ে পড়া’ সংক্রান্ত মন্তব্য করেন। বিচারপতি কল আরও বলেন, ‘‘ঠিক এই কারণেই আমরা বলছি, সোমবার আসুন। আমরা কেন নির্বাচনকে প্রভাবিত করব? আমরা সমস্যা বুঝতে পেরেছি এবং কী ভাবে তার সমাধান করা যায়, সেটা দেখতে হবে। সোমবার আমরা শুনব। তখন পর্যন্ত আমরা আরও ভাল অবস্থানে থাকব।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দিল্লির শাহিন বাগে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন মহিলা ও শিশুরা। তীব্র শীত, পুলিশ-প্রশাসনের দমনের চেষ্টাকে উপেক্ষা করেও অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন কয়েকশো মহিলা-শিশু। সেই আন্দোলনের অনুকরণে কলকাতার পার্ক সার্কাস, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের মতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও একই ভাবে চলছে আন্দোলন। তার মধ্যেই এই সপ্তাহের গোড়ায় একটি মামলা দায়ের করেন বিজেপি নেতা নন্দ কিশোর।
আরও পড়ুন: সিএএ সমর্থনে হাতিয়ার ২ বাঙালি
নন্দ কিশোর অবশ্য সরাসরি শাহিন বাগে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেননি। তাঁর দাবি ছিল, জনসমক্ষে যে কোনও প্রতিবাদের উপর লাগাম টানতে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন বেঁধে দিক শীর্ষ আদালত। সেই মামলাতেই শাহিন বাগের উদাহরণ দেন নন্দ কিশোর। মামলায় দাবি করা হয়, আন্দোলনকারীদের হঠকারিতা ও কাল্পনিক চিন্তাভাবনার কাছে পুলিশ-প্রশাসন কার্যত অসহাr। তা ছাডা় যাঁরা প্রতিদিন দক্ষিণ দিল্লি থেকে নয়ডা যাতায়াত করেন, তাঁদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে শাহিন বাগের আন্দোলনের জন্য।
সেই মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এসকে কল এবং বিচারপতি কেএম জোসেফের বেঞ্চে। সোমবার পর্যন্ত শুনানি স্থগিত রাখার পাশাপাশি বিচারপতিরা মামলাকারীর আইনজীবীকে সতর্ক করেছেন, কেন এই মামলা দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি হবে না, তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য যেন প্রস্তুত হয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: ‘পশ্চিমবঙ্গে কী ভাবে নিরীহদের হত্যা করা হচ্ছে তা জানা আছে’
শুরু হওয়ার পর থেকেই লাগাতার আক্রমণ করে চলেছেন বিজেপি নেতা-নেত্রীরা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ গুলি করে মারার কথা বলেছেন। বৄহস্পতিবারও আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ বলেছেন, শাহিন বাগ এলাকা ‘আত্মঘাতী বোমারুদের আঁতুরঘর হয়ে উঠেছে’, রাজধানীতে থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন আন্দোলনকারীরা। এর পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও গোড়া থেকেই আন্দোলন তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোনও কিছুতেই দমানো যায়নি আন্দোলনকারীদের। শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালতে গিয়েও আপাতত কোনও সুরাহা পেল না বিজেপি।
আইনজীবী মহলের একাংশের পর্যবেক্ষণ, আদালত এই মুহূর্তে মামলাকারীর পক্ষে রায় দিলে বিজেপি ভোটে তার সুবিধা নিতে ঝাঁপিয়ে পড়ত। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy