বিরোধী জোটের শক্তি প্রদর্শনের ফোটো থাকলেও, বিধানসভায় ফোটোফিনিশে জিতবেন তারাই। বিরোধী শিবিরের ১৬২ বিধায়ককে হোটেলে হাজির করার পাল্টা হিসেবে দাবি করল বিজেপি। শিবসেনা-এনসিপি-জোটের শক্তি প্রদর্শনকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি বিজেপি নেতৃত্ব। দলের মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা আশিস শেলারের খোঁচা, ‘‘শনাক্তকরণ প্যারেড তো অপরাধীদের জন্য হয়।’’ কর্নাটকের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও দাবি বিজেপির।
সোমবার মুম্বইয়ের হোটেলে ১৬২ জন বিধায়ককে হাজির করে শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোট। রীতিমতো শপথ নিয়ে তাঁরা জানান, কোনও প্রলোভনেই পা দেবেন না। কিন্তু ওই হোটেলে আদৌ ১৬২ জন বিধায়ক ছিলেন কি না, তা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আশিস শেলার। তাঁর কথায়, ‘‘শক্তি দেখানোর জন্য আপনার কাছে ফোটোগ্রাফার থাকতে পারে, ফোটোও থাকতে পারেন। তবে ফোটোফিনিশের সময় দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং অজিত পওয়ারের নেতৃত্বে বিজেপিই জিতবে।’’ বিরোধী জোটের ওই শক্তি প্রদর্শন যে বিধানসভার আস্থাভোটের সমান নয়, তা-ও মনে করিয়ে দেন তিনি। শেলারের দাবি, ‘‘বিধানসভায় আস্থাভোট যখনই হোক না কেন, আমরাই জিতব।’’ একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘শনাক্তকরণ প্যারেড তো অপরাধীদের জন্য হয়!’’
তবে বিজেপি শিবির আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য করলেও এ দিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর যথেষ্ট চাঙ্গা জোট-শিবির। গত কাল মুম্বই হোটেলে ওই শক্তি প্রদর্শনের পর এ দিন সকালে ওই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বুধবার বিকেল ৫টার আগেই বিধায়কদের শপথ গ্রহণ করতে হবে। তার পর আস্থাভোটে নিজেদের শক্তি পরীক্ষা দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকারের। এবং সেই পরীক্ষায় যে ফডণবীস সরকারের পরাজয় ঘটবে, তেমনটাই আশা প্রকাশ করেছেন জোটের নেতারা।
আরও পড়ুন: সেচ দুর্নীতির ৯টি মামলা বন্ধের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ, সুপ্রিম কোর্টে সেনা-এনসিপি-কংগ্রেস
তবে শীর্ষ আদালতের ওই রায়ের আগে উৎসাহিত দেখিয়েছে বিজেপি শিবিরকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, কর্নাটকের ঘটনা থেকে যথেষ্ট শিক্ষা নিয়েছেন তাঁরা। ফলে প্রয়োজনীয় সংখ্যা নিয়ে নিশ্চিত না হলে ফ্লোর টেস্ট-এর মুখোমুখি হবে না বলেও জানান তিনি।

সোমবার মুম্বইয়ের হোটেলে জোটবদ্ধ থাকার শপথ শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস বিধায়কদের। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
গত বছরের মে মাসে কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে একক দল হিসাবে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গড়ার ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারেনি বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়া বিজেপির বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে ১৫ দিনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলেন রাজ্যপাল বজুভাই বালা। তবে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস-জেডিএস জোট। আদালত রায় দেয়, বিজেপি সরকারকে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে। তবে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হওয়ার আগেই ইস্তফা দেন ইয়েদুরাপ্পা।
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের পাঁচতারা হোটেলে ১৬২ জন বিধায়ককে হাজির করল শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস
জেতার বিষয়ে আশাবাদী বিজেপি তার প্রাক্তন শরিক শিবসেনার সমালোচনা করতেও ছাড়েনি। শেলার বলেন, ‘‘যে ভাবে শিবসেনা নেতারা কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, তাতেই বোঝা যায়, ওদের রাজনৈতিক মতাদর্শ কতটা ফাঁপা।’’