পটনায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি সুশীল মোদী ও নীতীশ কুমার। পিটিআই
বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বেই এনডিএ জোট লড়তে চলেছে বলে আজ জানিয়ে দিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। জোট প্রশ্নে জটিলতা দূর করতে আজ আসন সমঝোতার মঞ্চ থেকে বিজেপি নেতা ভূপেন্দ্র যাদব, সুশীল মোদীরা জানিয়ে দেন, এনডিএ জোট ফের ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন নীতীশ কুমারই। এমনকি, জেডিইউ বিজেপির থেকে কম সংখ্যক আসন পেলেও মুখ্যমন্ত্রী হবেন নীতীশ কুমারই। একই সঙ্গে সুশীলরা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আসন্ন বিহার ভোটে এনডিএ-র শরিক হিসাবে নির্বাচন লড়ছে না রামবিলাস পাসোয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টি। বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, রামবিলাস পাসোয়ান সুস্থ থাকলে তাঁর পুত্র এ ভাবে বিরোধিতার পথে হাঁটতেন না।
রাজনীতির অনেকের মতে, বিজেপি আজ নীতীশের সমর্থনে মুখ খুলে এলজেপি নেতৃত্বকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেও আজও আক্রমণ শানিয়েছেন রামবিলাস-পুত্র চিরাগ। নীতীশ সরকারের শেষ পাঁচ বছরে ‘সাত নিশ্চয় যোজনা’-য় দুর্নীতির অভিযোগ এনে চিরাগ বলেন, ‘‘নতুন সরকার গঠিত হলেই সাত নিশ্চয় যোজনায় দুর্নীতির তদন্ত করে দোষীদের জেলে ভরা হবে। একই সঙ্গে বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দেওয়া হবে যাতে অসমাপ্ত কাজ দ্রুত শেষ হতে পারে।’’ এনডিএ শরিক চিরাগের বিদ্রোহ সত্ত্বেও বিজেপি নরম মনোভাব দেখানোয় জল্পনা শুরু হয় যে এ ক্ষেত্রে মদত জোগাচ্ছে বিজেপিই। জেডিইউ –সহ রাজনীতিকদের একাংশের আশঙ্কা, চিরাগের দল ভাল ফল করলে বিজেপি নীতীশকে ব্রাত্য করে দিয়ে এলজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করতে পারে।
জোটের স্বার্থে জল্পনা দূর করতে আজ তৎপর হয় বিজেপি। রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতা তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী বলেন, ‘‘এনডিএর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান সুস্থ থাকলে কোনও সংশয় তৈরি হত না।’’ কিন্তু সেই জবাবে ধোঁয়াশা সম্পূর্ণ কাটেনি বুঝেই মোদী যোগ করেন, ‘‘আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে যাঁরা নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেনে নেবেন, তাঁরাই এনডিতে থাকবেন।’’ নীতীশের দল বিজেপির তুলনায় কম সংখ্যক আসন পেলেও নীতীশই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন তা স্পষ্ট করে দেন অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ ভূপেন্দ্র যাদব। বিহার বিজেপির সভাপতি সঞ্জয় জয়সওয়ালও একই মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘এনডিএর নেতা নীতীশ। বিহারে বিজেপি নীতীশের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে। এনডির বাকি সঙ্গীরাও (আশা করছি) তাঁর নেতৃত্ব মেনে নেবেন। বিজেপি নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে যথাসম্ভব প্রয়াস করবে।’’ ওই বিবৃতি দিয়েই মঞ্চ থেকে চলে যান জয়সওয়াল। সূত্রের মতে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই ওই বিবৃতি দেন জয়সওয়াল।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচন, বিহার ভোটে বিজেপির চিন্তা দলিত ক্ষোভ
বিহারের ২৪৩টি আসনের মধ্যে ১২২টি আসনে লড়বে জেডিইউ। যা থেকে দলিত নেতা জিতনরাম মাঁঝীর দল ‘হাম’-কে সাতটি আসন দেবে নীতীশের দল। বিজেপি লড়বে বাকি ১২২টি আসন (রাতে ২৭টি আসনে বিজেপি প্রার্থীও ঘোষণা করেছে। প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দিগ্বিজয় সিংহের মেয়ে শ্রেয়সী জামুই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন)। বিজেপির প্রাপ্ত আসন থেকে পাঁচ-সাতটি আসন ছেড়ে দেওয়া হবে মুকেশ সাহনির ‘ভিআইপি’ দলকে। সুশীল বলেন, ‘‘বিজেপি, জেডিইউ, হাম এবং ভিআইপি দল এনডিএ-র শরিক হিসাবে বিহার নির্বাচনে লড়বে এবং এই চার দলই কেবল প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে প্রচার করতে পারবে।’’ অন্য কোনও দল (মূলত এলজেপি) যাতে নিজেদের প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করতে না পারে, তার জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: হাথরসের ঘটনা ভয়ঙ্কর: আদালত
সূত্রের মতে, গত ক’দিনে নীতীশের বিরোধিতার সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় সরব ছিলেন চিরাগ। এলজেপি যাতে প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচার না চালাতে পারে তা নিশ্চিত করতেই কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে বিজেপি। সূত্রের মতে, মূলত জেডিইউয়ের দাবি মেনে চিরাগকে রুখতে কমিশনকে লিখিত ভাবে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
সরাসরি না হলেও চিরাগ তথা এলজেপি শিবিরের উদ্দেশে আজ আক্রমণ শানিয়েছেন নীতীশও। তিনি বলেন, ‘‘জেডিইউ সাহায্য না করলে কি দু’টি বিধানসভা আসন পাওয়া রামবিলাস পাসোয়ান রাজ্যসভার সাংসদ হতে পারতেন? ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy