উদ্যাপন: সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জোধপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী। পিটিআই
গোপন অভিযান থাকেনি গোপনে। প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছিল দু’বছর আগেই। লোকসভা ভোটের আগে এ বার মহা মহাধুমধাম ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ নিয়ে। আজ তিন দিনের ‘পরাক্রম পর্ব’ পালন শুরু হল দেশের ৫১টি শহরে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হাজির ছিলেন জোধপুরে। সেখানে বিমানবন্দরে নেন বায়ুসেনার ‘গার্ড অব অনার’। এর পরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে উদ্বোধন করেন ‘পরাক্রম পর্ব’ প্রদর্শনীর। গুজরাতিতে বার্তা লেখেন বীর জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানিয়ে। ফুল দেন কোনার্ক যু্দ্ধ স্মারকে। টিভি চ্যানেলগুলিতে ঢালাও প্রচার চলে এ সবের।
ভারতীয় বাহিনী ২০১৬-র ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে নিয়ন্ত্রণরেখার ও-পারে গিয়ে জঙ্গিদের ৭টি লঞ্চিং প্যাড গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে তার পরের দিন ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। বিরোধীরা বলছেন, ভোটে ফায়দা পেতেই ‘পরাক্রম পর্ব’ নিয়ে এত হইচই। সেনাবাহিনীর একটি অংশ পছন্দ করছেন না এ সব। তাঁদের বক্তব্য, গোপন অভিযানের কথা গোপন রাখাই উচিত। শত্রুপক্ষ কিছু বুঝে ওঠা বা সতর্ক হওয়ার আগেই কার্যসিদ্ধির জন্য এমন অভিযান চালানো হয়। এ নিয়ে প্রচার চললে, ভবিষ্যতে প্রতিপক্ষকে হতচকিত করে দেওয়ার সুযোগ কমে যায়। এক জন প্রবীণ সেনা অফিসারের কথায়, ‘‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ভিডিয়োও প্রকাশ হয়ে গিয়েছে।... হোক মুখ ঢাকা, ওই দলের কয়েক জন তো টিভিতেও হাজির হয়েছেন। গোপন অভিযান গোপনই থাকা উচিত।’’
সেনাবাহিনীর অন্দরে আরও প্রশ্ন উঠেছে সরকারের এই উদ্যোগ নিয়ে। কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করে বলছেন, ‘‘গত বছর তো কই পরাক্রম পর্ব পালন হয়নি! এই বছরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রক হঠাৎ করে নির্দেশ দিয়েছে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের (দ্বিতীয়) বর্ষপূর্তি বড় করে উদ্যাপন করতে হবে।... দেশের ৫১টি শহরে!’’ সেই নির্দেশ মেনেই জম্মুতে আজ ২০১৬-র ওই অভিযানে ব্যবহৃত সাজসরঞ্জাম নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য। আপাত উপলক্ষ বায়ুসেনার ৮৬তম বর্ষপূর্তি। আগামিকাল জম্মু-কাশ্মীরের স্কুলগুলিতে ‘পরাক্রম পর্ব’ পালন করতে বলা হয়েছে। পরাক্রম পর্বের অনুষ্ঠান কলকাতায় হবে কাল।
জোধপুরে এ দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ও মুখ্যমন্ত্রী বিজয়রাজে সিন্ধিয়া। প্রদশর্নী ঘুরে দেখার পরে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী যান জোধপুর বায়ুসেনা ঘাঁটিতে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে সম্মেলনে যোগ দিতে। ২০১৫-তে যা হয়েছিল দিল্লিতে। তার পরে এই নিয়ে তিন বার এই বার্ষিক সম্মেলন হল দিল্লির বাইরে। ২০১৬-তে হয় রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্যে। পরের বছর দেহরাদূনে মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে। এ বার বেছে নেওয়া হল প্রতিরক্ষার দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাকিস্তান লাগোয়া রাজ্যের ঘাঁটিকে। সরকারি সূত্রের খবর তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, সরকারি শীর্ষ কর্তাদের এই সম্মেলনে জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমন অভিযানের হাল হকিকত পর্যালোচনা করা হয়। কথা হয় চিন সীমান্তের পরিস্থিতি ও ভারতের তিন দিক ঘেঁষে সমুদ্রপথের নিরাপত্তা প্রসঙ্গেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy