গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
হিন্দুদের তো বটেই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও জয়। অযোধ্যা রায়কে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করল মার্কিন মিডিয়া। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’, ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর মতো অধিকাংশ দৈনিকের এক সুর, এই রায় মোদীর জয় এবং তাঁর হাত আরও শক্ত করবে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলির বক্তব্যের সুরও প্রায় এক। যদিও এই রায়ের হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে সংঘাত আরও বাড়বে— এমন মতও প্রকাশ করেছে পাক মিডিয়ার একাংশ।
শনিবারই সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমিতে মন্দির তৈরি করতে কেন্দ্র একটি প্রকল্প তৈরি করবে। অন্যত্র মসজিদ তৈরির জন্য মুসলিমদের ৫ একর জমি দেবে রাজ্য বা কেন্দ্র। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের এই রায়ের খবর বিশ্বের অধিকাংশ সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় এই খবর রয়েছে। এই রায়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জয়ই দেখেছে মার্কিন মুলুকের অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যম। তবে একই সঙ্গে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভিত্তিতে এতে আঘাত লাগতে পারে— এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে সংবাদ মাধ্যমের একাংশ।
‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ যেমন লিখেছে, ‘কয়েক শতাব্দীর বিতর্কিত জমি নিয়ে শনিবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হিন্দুদের পক্ষে রায় দিয়েছে। মোদী এবং তাঁর অনুগামীরা যে নতুন করে ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ ভিত্তি থেকে সরিয়ে হিন্দুত্বের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে, তার পক্ষে এটা বড় জয়।’ অর্থাৎ মোদী এবং তাঁর অনুগামীদের জয় বলে কার্যত হিন্দুত্ব লাইনের সমালোচনাই করেছে মার্কিন এই দৈনিক।
প্রায় একই সুর ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-এরও। তবে ‘মোদীর বড় জয়’-এর পাশাপাশি ভারতকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’র বদলে ‘হিন্দু’ রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করায় বিতর্ক তৈরি হতে পারে। এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘মুসলিমদের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বিতর্কিত জমি হিন্দুদের পুরস্কার দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বড় জয়।’ আরও বলা হয়েছে, ‘হিন্দু জাতীয়বাদী ও ভারতীয় জনতা পার্টি দীর্ঘদিন ধরেই অযোধ্যায় হিন্দু দেবতা রামের মন্দির তৈরির চেষ্টা করে আসছে।’ তবে একই সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ নয়’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অযোধ্যাতেই বিকল্প ৫ একরে মসজিদ, মন্দির বিতর্কিত জমিতে
আরও পড়ুন: ওয়াকফ বোর্ড মানল, ওয়াইসি, ল বোর্ড অসন্তুষ্ট
ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর ব্যাখ্যাও প্রায় একই রকম। অযোধ্যা রায়কে মোদীর লোকসভা ভোটে জয়ের সঙ্গে তুলনা টানা হয়েছে। জয়ের সঙ্গে তুলনা টানা হয়েছে। প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য, ভোটে বিপুল জয়ের পর আদালতেও বিরাট জয় পেলেন নরেন্দ্র মোদী। আর এক ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি অবশ্য মূল ঘটনার রিপোর্টের উপরেই জোর দিয়েছে। খুব বেশি মতামত প্রকাশ করেনি।
পাকিস্তানি দৈনিকগুলিতেও স্বাভাবিক ভাবেই প্রাধান্য পেয়েছে অযোধ্যা রায়ের খবর। অধিকাংশ সংবাদপত্র ও টিভিতে শিরোনামে অযোধ্যার বিতর্কিত জমির রায়। তবে ‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর জয়’-এর চেয়েও পাক মিডিয়ায় গুরুত্ব পেয়েছে হিন্দু মুসলিম সম্পর্ক। ‘দ্য ডন’-এ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায় ‘ভারতের যুযুধান হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।’ জিও টিভির রিপোর্টে অবশ্য শুধু রায়ের অংশই বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ আবার অযোধ্যার রায়কে ‘হিন্দু জাতীয়বাদী এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর জয়’ বলে উল্লেখ করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy