অশোক গহলৌত। ফাইল চিত্র
একবার বিধানসভায় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে ফেললে আগামী ছয় মাস নিশ্চিন্ত। এই অঙ্ক কষেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত দ্রুত বিধানসভার ছোট্ট অধিবেশন ডেকে আস্থা ভোটে যেতে চাইছেন। শনিবারই মুখ্যমন্ত্রী নিজে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কংগ্রেসে রাজস্থানের ভারপ্রাপ্ত নেতা অবিনাশ পাণ্ডে রবিবার জানিয়ে দিয়েছেন, অশোক গহলৌত তৈরি। তাঁর পক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন রয়েছে। প্রয়োজন পড়লে তিনি বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকতে পারেন।
‘বিদ্রোহী’ সচিন পাইলটের শিবিরে মাত্র ১৯ জন বিধায়ক। এত কম বিধায়ক উল্টো দিকে থাকলে সরকার পড়বে না বুঝে বিজেপি নেতৃত্বও এখন সরাসরি আস্থা ভোটের দাবি তুলছে না। কারণ গহলৌত একবার আস্থা ভোটে জিতে গেলে আগামী ছয় মাস অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। বিজেপি শিবিরের আশঙ্কা, সচিনের সঙ্গে যে ক’জন এখনও রয়েছেন, তাঁরাও ফের ডিগবাজি খেয়ে গহলৌতের দিকে চলে যাবেন।
বিজেপি সূত্রের খবর, এই বিপদ বুঝেই সচিন অনুগামী বিধায়কদের এখন হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে আনা হয়েছে। রাজস্থানে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক অজয় মাকেন বলেন, হরিয়ানার বিজেপি সরকারের পুলিশের পরে এখন অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তা দিচ্ছে! আলাদা আলাদা পাঁচতারা হোটেলে লুকিয়ে রাখা হয়েছে সচিন অনুগামী বিধায়কদের। সচিন ও তাঁর অনুগামী বিধায়কদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত টাকার লেনদেন করছিলেন বলে আগেই কংগ্রেস অডিয়ো টেপের ভিত্তিতে অভিযোগ তুলেছিল। শেখাওয়াতের পদত্যাগ দাবি করে মাকেনের যুক্তি, তাঁর মন্ত্রী পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই।
কংগ্রেস সচিন ও তাঁর শিবিরের মোট ১৯ জন বিধায়কের বিধানসভার সদস্যপদ খারিজের দাবি জানানোয় স্পিকার তাঁদের নোটিস পাঠিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে সচিনরা মামলা করেন। সোমবার রাজস্থান হাইকোর্টে ফের সেই মামলার শুনানি। ওই ১৯ জনের বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে গেলে গহলৌতের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ আরও সহজ হয়ে যাবে। কারণ ২০০ আসনের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ৯১ জন হলেই চলবে। গহলৌত শিবিরের দাবি, অন্তত ১০৭ জন তাঁদের সঙ্গে রয়েছে। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, “দিল্লিতে বিজেপির মুখপাত্র আস্থা ভোট চাইছিলেন। এখন রাজস্থান বিজেপির সভাপতি সতীশ পুনিয়া, বিধানসভার বিরোধী উপনেতা রাজেন্দ্র রাঠোর বলছেন, আস্থা ভোটের কী দরকার!”
খাতায়-কলমে এখনও কংগ্রেসের দাবি, সচিন পাইলটের জন্য দলের দরজা এখনও খোলা। কিন্তু তার জন্য ‘বিজেপির আতিথেয়তা’ ছেড়ে তাঁকে জয়পুরে এসে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। সুরজেওয়ালা বলেন, “সচিন এসে কথা বলুন। কংগ্রেস নেতৃত্ব আধ ডজনের বেশি বার সচিন পাইলটের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছে, তিনি কংগ্রেস পরিবারে ফিরে এসে নিজের বক্তব্য জানান। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির দুই প্রবীণ সদস্য ৮ বার সচিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। এআইসিসি-তে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল দু-তিন বার ওঁকে অনুরোধ করেছেন। এ বার ওঁকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, উনি বিজেপির ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে নির্বাচিত সরকার ফেলতে চান, না কি পরিবারে বসে মতভেদ দূর করবেন!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy