Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Rajasthan

বিধানসভা ডাকতে ফের গহলৌতের চিঠি, এড়ালেন আস্থা-প্রসঙ্গ

রাহুল গাঁধী রবিবার টুইটারে রাজস্থান প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘‘একজোট হয়ে গণতন্ত্র বাঁচাতে আওয়াজ তুলুন।’’

বিধানসভা ডাকার জন্য রাজ্যপালকে ফের চিঠি অশোক গহলৌতের। ছবি: পিটিআই।

বিধানসভা ডাকার জন্য রাজ্যপালকে ফের চিঠি অশোক গহলৌতের। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
জয়পুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০ ১৬:০৭
Share: Save:

রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের ‘যুক্তি’ মেনে নিয়ে রাজস্থান বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য নতুন করে চিঠি পাঠালেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। রাজ্যপালকে পাঠানো দ্বিতীয় চিঠিতে গহলৌত লিখেছেন, ‘‘রাজ্যের করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে আগামী ৩১ জুলাই বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চিঠিতে কোথাও আস্থাভোটের প্রসঙ্গই নেই! রাজভবনের তরফে রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার প্রস্তাব সম্পর্কে বিবেচনা করছেন।

কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব অবশ্য কর্নাটক এবং মধ্যপ্রদেশের ‘অভিজ্ঞতা’র প্রেক্ষিতে এ বার রাজ্যপালের তরফে ‘ইতিবাচক বার্তা’র আশা কার্যত ছেড়ে দিয়েছেন। বরং তাঁরা চাইছেন রাজস্থান ইস্যুকে রাজনীতির হাতিয়ার করতে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের পদ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধী সরকার ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। এর প্রতিবাদে সোমবার দেশের প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।

রাহুল গাঁধী আজ টুইটারে রাজস্থান প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে বিঁধেছেন। ‘স্পিকআপফরডেমোক্র্যাসি’ হ্যাশট্যাগ-এ তিনি লিখেছেন, ‘‘একজোট হয়ে গণতন্ত্র বাঁচাতে আওয়াজ তুলুন।’’ বিজেপি ছল-কপটতার মাধ্যমে গণতন্ত্র খুন করতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

এর আগে গহলৌতের তরফে রাজ্যপালের কাছে বিধানসভা অভিবেশন ডাকার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে সচিন পাইলট-সহ ১৯ জন বিদ্রোহীর বিধায়কপদ আপাতত সুরক্ষিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গহলৌত শিবির চাইছে দ্রুত বিধানসভার অধিবেশন ডেকে আস্থাপ্রস্তাব পাশ করিয়ে নিতে। পরিষদীয় বিধি অনুযায়ী সে ক্ষেত্রে ছ’মাস সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনে রাজ্যপাল দ্রুত বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে রাজি হননি।

রাজ্যপালের যুক্তি, সাধারণ ভাবে পরিষদীয় বিধি মেনে অন্তত ২১ দিন সময় প্রয়োজন। বিজেপি বা অন্য কোনও বিরোধী শিবির রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাবও আনেনি। এই পরিস্থিতিতে কেন বিধানসভার অধিবেশন ডাকা প্রয়োজন, সে বিষয়ে মন্ত্রিসভার কাছে ছ’দফা প্রশ্নের জবাব চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, গহলৌতের চিঠিতে প্রস্তাবিত অধিবেশনের তারিখ নেই কেন!

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ঘনিষ্ঠ বিধায়করা বিধানসভা অধিবেশনের জন্য রাজভবনে পাঁচ ঘণ্টা ধর্নায় বসেছিলেন। রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র তাঁদের আশ্বাস দেন, তিনি সংবিধানের ১৭৪ ধারা (মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মেনে পদক্ষেপ করা) মেনে চলবেন। এরপর ধর্না প্রত্যাহার করেন কংগ্রেস বিধায়করা। রাতেই মন্ত্রিসভার আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিধানসভার অধিবেশন ডাকা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: ‘বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তান’, নাম করেই মন কি বাত-এ আক্রমণ মোদীর

কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এখনও অশোক গহলৌতের কাছে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ম্যাজিক ফিগার’ রয়েছে। কিন্তু তাঁর শিবিরের অনেক বিধায়কও আর হোটেলবন্দি হয়ে থাকতে রাজি হচ্ছেন না। এক বিধায়ক অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। আবার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের আগেই বিধায়করা ‘বাইরে’ এলে ঘোড়া কেনাবেচায় খেলায় বিজেপিকে ঠেকানো কঠিন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা গহলৌত শিবিরের।

আরও পড়ুন: ‘প্রয়োজনে ধর্না রাষ্ট্রপতি ভবনে’, ঘোষণা গহলৌতের​

এই পরিস্থিতিতে শনিবার মরুরাজ্যের প্রতিটি জেলায় বিজেপি এবং রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অবস্থান বিক্ষোভ করেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। গহলৌত বিধায়কদের কাছে আবেদন জানান, প্রয়োজনে আরও ২১ দিন হোটেলবন্দি থাকার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে। এমনকি, দরকার পড়লে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে ধর্নার বসার জন্যও তিনি কংগ্রেস বিধায়কদের বার্তা দেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE