Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বাড়িতেই পড়ছে কাশ্মীরি পড়ুয়ারা

২০১৬ সালের জুলাইয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পরেও উত্তাল হয়েছিল উপত্যকা। সেই সময়ে লাগাতার অশান্তি ও কার্ফুর জেরে প্রায় ৯০ দিন বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ।

নিশানায় নিরাপত্তা বাহিনী। পাল্টা ছররা থেকে বাঁচতে ঢাল টিনের শেড। শ্রীনগরের রাস্তায় শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স

নিশানায় নিরাপত্তা বাহিনী। পাল্টা ছররা থেকে বাঁচতে ঢাল টিনের শেড। শ্রীনগরের রাস্তায় শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স

সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৯
Share: Save:

শ্রীনগরের হজরতবালে তাঁর নিজের বাড়িতে অন্তত শ’দুয়েক ছাত্রছাত্রীকে পড়ানো শুরু করেছেন মুনাজ়া ইমরান বাট। অগস্টের মাঝামাঝি স্কুল খুললেও দফায় দফায় কার্ফুতে উপত্যকার অধিকাংশ পড়ুয়াই হাজির হতে পারছে না স্কুলে। ফলে মুনাজ়ার মতো প্রাইভেট শিক্ষকদের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় নেই অভিভাবকদের। মুনাজ়া বলেছেন, ‘‘আমি আগে থেকেই তুতো ভাইবোনদের পড়াতাম। গত কয়েক দিন ধরে বহু অভিভাবক এসে অনুরোধ করছেন তাঁদের এলাকায় গিয়ে পড়ানোর জন্য। আসলে পরীক্ষার সময় গেলেও ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো উচিত হবে কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না বাবা-মায়েরা।’’

২০১৬ সালের জুলাইয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পরেও উত্তাল হয়েছিল উপত্যকা। সেই সময়ে লাগাতার অশান্তি ও কার্ফুর জেরে প্রায় ৯০ দিন বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ। মুনাজ়া জানিয়েছেন, তখনও এ ভাবে রমরমা শুরু হয়েছিল প্রাইভেট শিক্ষকদের। অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, বেশিরভাগ স্কুলের পরীক্ষা শুরু হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। তাই দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকলেও ছেলেমেয়েদের পরীক্ষায় বসতে যাতে অসুবিধা না-হয়, সেই দিকে নজর রাখছেন তাঁরা। এই বছরে এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার ফর্ম দেওয়া হয়নি কাশ্মীরের কোনও স্কুলে। পরীক্ষা ছাড়াই সরকার সব ছাত্রছাত্রীদেরই পরের ক্লাসে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। আগেও ২০০৮, ২০১০, ২০১৬ সালে একই ভাবে পরীক্ষা না-নিয়ে পরের ক্লাসে তুলে দেওয়া হয় সব পড়ুয়াকে।

স্কুলে না গেলেও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া যাতে বন্ধ না-হয়, সেই দিকে নজর রাখছেন অভিভাবকেরা। নওগামের বাসিন্দা আসিফা যেমন জানাচ্ছেন, গত মাস থেকেই বাচ্চাদের বাড়িতে পড়াচ্ছেন তিনি। তাঁর মতে, স্কুলে না-যাওয়ার যে ক্ষতি, তা অনেকটাই সামলানো যাবে এতে। ওই গৃহবধূর বক্তব্য, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের জেরে হঠাৎ ৫ অগস্ট থেকে স্কুল কেন বন্ধ হয়ে গেল, তা বোঝানো যাচ্ছে না ছোটদের। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজের বাচ্চাদের পড়ানো শুরু করতেই আত্মীয়, প্রতিবেশীরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের পাঠাতে শুরু করেছেন। যদিও এ ভাবে স্কুলের অভাব মেটানো সম্ভব নয়, তবে দিনের কিছুটা সময়ে ওদের ব্যস্ত রাখা যায়।’’ স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা ইউনিস মালিক বলেন, ‘‘কোনও ছাত্র বা অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। কী ভাবে পরীক্ষার ফর্ম দেব? আমরা দেখছি কী করা যায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Article 370 Kashmir Jammu And Kashmir Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy