এই মুহূর্তে তিহাড় জেলে রয়েছেন অপূর্বা। —ফাইল চিত্র।
নাম করা রাজনৈতিক পরিবারে বিয়ে। নিজে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ছিলেন। কিন্তু স্বামীকে খুনের অভিযোগে এই মুহূর্তে জেলে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এনডি তিওয়ারির পুত্রবধূ অপূর্বা শুক্ল। আর এই জেলেই নাকি নতুন জগতের সন্ধান পেয়েছেন তিনি! অলৌকিক জগতের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়েছে তাঁর। এমনকি ট্যারো কার্ড দেখাও শিখতে শুরু করেছেন। তিহাড় জেল সূত্রে এমনই তথ্য সামনে এল।
কয়েদিদের জন্য গত দেড় বছর ধরে তিহাড় জেলে ট্যারো কার্ড শেখার ক্লাস করাচ্ছেন প্রতিভা সিংহ। প্রতি মঙ্গল এবং শুক্রবার দু’ঘণ্টার ক্লাস করান তিনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রতিভা সিংহ বলেন, ‘‘ট্যারো কার্ড দেখা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে বলে শুরুতেই আমাকে জানিয়েছিলেন অপূর্বা। নিয়মিত ক্লাসে আসেন উনি। একেবারে সামনের সারিতে বসেন। মন দিয়ে সব কিছু লক্ষ্য করেন। সব কথা শোনেন। কখনও ক্লাস কামাই করেন না। আদালতে শুনানির জন্য এক বার আসতে পারেনি। তার জন্য পরে আফসোস করেছিলেন আমার কাছে।’’
পাঁচ-ছ’বছর আগেই ট্যারো কার্ড দেখা শিখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি, এমনটা অপূর্বা নিজে তাঁকে জানিয়েছেন বলে দাবি প্রতিভা সিংহের। তিনি বলেন, ‘‘ইংরেজি এবং হিন্দি—দুই ভাষাতেই ক্লাস করাই। তবে অপূর্বা ইংরেজিতেই স্বচ্ছন্দ। এখনও পর্যন্ত সাতটি ক্লাস করেছেন তিনি। তাতেই ৭৮টির মধ্যে ১৫টি কার্ড দেখা শিখে ফেলেছেন। কোথাও কোনও অসুবিধা হলেই প্রশ্ন করেন। খাতায় নোটও নেন।’’
আরও পড়ুন: জাত-বজ্জাতি: আদালত চত্বরে পুলিশের সামনেই চড়থাপ্পড় খেলেন সেই বিজেপি নেতার জামাই
তিহাড় জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা বিভাগে রাখা হয়েছে অপূর্বাকে। শ্বাসরোধ করে স্বামীকে খুন করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু তা নিয়ে কখনও আফশোস করতে দেখা যায় না তাঁকে। একবার ক্লাস চলাকালীন তা নিয়ে প্রশ্নও করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সাফ জবাব ছিল তাঁর, ‘‘কোনও আফসোস নেই আমার। ভাগ্যে যা লেখা ছিল, হয়েছে।’’ শুরুতে কারও সঙ্গে তেমন কথা না বললেও, ধীরে ধীরে অপূর্বা সকলের সঙ্গে মিশতে শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: গলদ ‘ও’ রিংয়েই, ফুলে ফেঁপে ওঠেনি বলেই গভীর রাতে থমকে গেল চন্দ্রযান-২ অভিযান
প্রয়াত কংগ্রেস নেতা নারায়ন দত্ত তিওয়ারির ছেলে রোহিত শেখরের সঙ্গে ২০১৮ সালের মে মাসে সাতপাকে বাঁধা পড়েন অপূর্বা। কিন্তু তাঁদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়নি। একই বাড়িতে আলাদা আলাদা ঘরে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। গত ১৫ মে-র রাতে রোহিত মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরলে, তাঁর সঙ্গে অপূর্বার ঝামেলা বাধে। তার কয়েক ঘণ্টা পরই ঘরের মধ্যে থেকে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। শুরুতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোহিতের তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু এইমসে ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় তাঁকে। তিন দিন ধরে জেরার পর রোহিতকে খুন করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন অপূর্বা। তদন্তে নেমে জানা যায়, খুনের দেড় ঘণ্টার মধ্যে সব তথ্যপ্রমাণ মুছে ফেলেছিলেন তিনি। সম্পত্তির লোভেই অপূর্বা তাঁর ছেলেকে খুন করেছেন বলে পরে অভিযোগ করেন রোহিত শেখরের মা উজ্জ্বলা শর্মা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy