Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

কার্ডহীন ৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন মাত্র ২০ লক্ষ!

লক্ষমাত্রার ধারে-কাছে পৌঁছনো যায়নি ডালের ক্ষেত্রেও। ৩৯ হাজার মেট্রিক টন ডাল বরাদ্দ হয়েছে। শ্রমিকদের বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ১০ হাজার ১৩১ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য।

লঙ্গরখানাতেই আহার সারছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। —ফাইল চিত্র

লঙ্গরখানাতেই আহার সারছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ১৭:৫৭
Share: Save:

রেশন কার্ড না থাকলেও খাদ্যসামগ্রী পাবেন পরিযায়ী শ্রমিকরা— ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে এই ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার পরেও প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। কিন্তু কার্ড নেই এমন পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্য বণ্টনের ছবিটা রীতিমতো আশঙ্কাজনক। কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রকের হিসেবেই বলা হয়েছে, কার্ড নেই এমন ৮ কোটি শ্রমিকের মধ্যে রেশন সামগ্রী পেয়েছেন মাত্র ২০ লক্ষের কিছু বেশি মানুষ। পরিযায়ী শ্রমিকদের এই দুর্দর্শার চিত্র উদ্বেগ বেড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে খাদ্য বণ্টনের প্রক্রিয়া নিয়েও।

‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে যুক্ত করা হয় রেশন কার্ড নেই এমন পরিযায়ী শ্রমিকদেরও। নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, ‘‘রেশন কার্ড না থাকলেও পরিযায়ী শ্রমিকরা মাথাপিছু পাঁচ কেজি করে চাল অথবা গম এবং এক কেজি করে ডাল পাবেন। এতে প্রায় ৮ কোটি শ্রমিক উপকৃত হবেন। এই খাতে কেন্দ্রের খরচ হবে প্রায় ৩৫০০কোটি টাকা।’’

সেই অনুযায়ী কার্ডহীন পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্য বণ্টন শুরু হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রকের অধীন খাদ্য ও গণবণ্টন বিভাগ রবিবার জানিয়েছে, ‘‘রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি এখনও পর্যন্ত মোট ৪.৪২ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্যপণ্য তুলেছেন। কিন্তু তার নামমাত্র অংশই বিলি করা সম্ভব হয়েছে। শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া গিয়েছে মাত্র ১০ হাজার ১৩১ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য। খাদ্যশস্য পেয়েছেন ২০ লক্ষ ২৬ হাজার কার্ডহীন পরিযায়ী শ্রমিক।’’

আরও পড়ুন: সবাই জানে সীমান্তে কী হচ্ছে, লাদাখের ইঙ্গিত করে অমিতকে কটাক্ষ রাহুলের

লক্ষ্যমাত্রার ধারে-কাছে পৌঁছনো যায়নি ডালের ক্ষেত্রেও। ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, কার্ড নেই এমন পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৯৬ লক্ষ। কেন্দ্র তাঁদের জন্য ৩৯ হাজার মেট্রিক টন ডাল বরাদ্দ করেছে। ইতিমধ্যেই ২৮ হাজার ৩০৬ মেট্রিক টন রাজ্যগুলিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মাত্র ১৫ হাজার ৪১৩ মেট্রিক টন ডাল তুলেছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের দেওয়ার জন্য। তার মধ্যে আবার বণ্টন করা হয়েছে মাত্র ৬৩১ মেট্রিক টন।

আরও পড়ুন: উপর্যুপরি হামলা লেকটাউনে, আক্রান্ত সব্যসাচী-শঙ্কু

তা হলে বাকি খাদ্যশস্য কোথায় গেল? ওয়াকিবহাল মহলের একটা অংশের মতে, এই খাদ্যশস্য রেশন ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে মজুত রয়েছে। তাঁদের যুক্তি, রাজ্যে ফেরার আগে পর্যন্ত তাঁরা এক জায়গায় ছিলেন না। ফলে তাঁদের খুঁজে বের করাই দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছিল। এখন অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক নিজেদের রাজ্যে ফিরেছেন। এখন ধীরে ধীরে তাঁদের চিহ্নিত করে বণ্টনের কাজ শুরু হবে। তবে দুর্নীতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে পর্যবেক্ষকদের একটি অংশের মত।

করোনাভাইরাস ও লকডাউনের মোকাবিলায় মার্চের মাঝামাঝি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে পাঁচ দফায় সেই প্রকল্পের বিস্তারিত জানান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার আগেই অবশ্য প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনায় পরিযায়ী শ্রমিকদের তিন মাস বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এই প্রকল্পে প্রত্যেক পরিবারকে মাথাপিছু পাঁচ কেজি চাল অথবা গম এবং এক কেজি করে ডাল দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু এতে শুধু যাঁদের রেশন কার্ড ছিল, তাঁরাই খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছিলেন। পরে কার্ডহীন পরিযায়ী শ্রমিকদেরও এতে যুক্ত করা হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Migrant Labours Ration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy