সংসদে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে ফের কংগ্রেসের ঘাড়ে দেশভাগের দায় চাপালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার সংসদে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেন তিনি। তা নিয়ে বিরোধিতার মুখে পড়ে শাহ জানিয়ে দেন, ‘‘ধর্মের নিরিখেই দেশভাগ করেছিল কংগ্রেস। তা না হলে আজ এই বিলের প্রয়োজনই পড়ত না।’’
এ দিন সংসদে নাগরিকত্ব বিল পেশ হলে, তার তীব্র বিরোধিতা শুরু করেন বিরোধীরা। এই বিলকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেন তাঁরা। তাতেই গর্জে ওঠেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘আজ এই বিলের প্রয়োজন পড়ল কেন? স্বাধীনতার পর কংগ্রেস ধর্মের নিরিখে দেশভাগ না করলে, আজ এই বিলের প্রয়োজনই ছিল না। আমরা নই, ধর্মের নিরিখে দেশভাগ করেছিল কংগ্রেসই।’’
এ প্রসঙ্গে ইন্দিরা গাঁধীর কথাও টেনে আনেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন ইন্দিরা গাঁধী। তখন তিনি পাকিস্তানি শরণার্থীদের আশ্রয় দেননি কেন? তা হলে কি ইন্দিরা গাঁধীও অসাংবিধানিক পদক্ষেপ করেছিলেন?’’
আরও পড়ুন: কংগ্রেস বলল, ‘অসাংবিধানিক’, ‘ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভেঙেছেন আপনারা’, নাগরিকত্ব বিল পেশ করে বললেন অমিত
দেশের সংখ্যালঘু বর্গকে নিশানা করতেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনা হয়েছে বলে এ দিন মন্তব্য করেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীরঞ্জন চৌধুরী। এই বিলের মাধ্যমে সংবিধানে উল্লিখিত সমানাধিকার সংক্রান্ত ১৪ ধরার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তৃণমূলের সৌগত রায়। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ উড়িয়ে দেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘দেশের .০০১ শতাংশ সংখ্যালঘুকে কোণঠাসা করা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের উদ্দেশ্য নয়। আগেই এর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সমানাধিকার নিয়ে আলোচনা চাইলে গোটা বিশ্বের উদাহরণ তুলে ধরতে পারি। কিন্তু সমানাধিকারের কথা যখন উঠছেই, তখন একটা কথা বলতেই হয়, সংখ্যালঘুরা যখন শিক্ষা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংরক্ষণ পায়, তখন সমানাধিকারের যুক্তি কোথায় যায়? তাতে সংবিধানের ১৪ ধারার লঙ্ঘন হয় না?’’
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় মুসলিমদের জমি দেওয়ার বিরুদ্ধে এ বার আবেদন হিন্দু মহাসভার
ধর্মীয় নিপীড়ণের জেরে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এ দেশে প্রবেশকারী হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নাগরিক সংশোধনী বিলে। এর আগে, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়, অন্তত ১১ বছর ভারতে থাকলে তবেই কোনও ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। নয়া বিলে ওই সংস্থান কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। তবে তাতে বাইরে থেকে আসা মুসলিমদের কথা বলা হয়নি। এতেই আপত্তি তুলছেন বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে বেছে বেছে অমুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। কিন্তু শাহের যুক্তি, পড়শি দেশ থেকে কোনও মুসলিম নাগরিকত্বের আবেদন জানালে, তা খতিয়ে দেখা হবে। শুধুমাত্র সংশোধনী বিলের আওতায় কোনও সুবিধা পাবেন না তাঁরা। কারণ পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো মুসলিম অধ্যুষিত দেশে তাঁদের ধর্মীয় নিপীড়ণের শিকার হতে হয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy