প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে বাথরুমে গেলেন। কোনও রকমে ঘুম চোখে বেসিনে হাত ধুচ্ছেন। আয়নায় চোখ যেতেই হাড় হিম করা দৃশ্য। আয়নায় ওটা কে? কাকে দেখছেন আপনি! এমন দৃশ্য ভূতের ছবিতে প্রায়ই দেখে থাকি আমরা। ভূতের ছবিতে আয়না ভূতদের বড় প্রিয় বস্তু। তবে সেটা বিদেশি ভূতের ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য। আমাদের গ্রাম বাংলার ভূতদের আবার আয়নার ছায়া পড়ে না। আয়না দেখে বোঝা যায় কোনটা মানুষ, কোনটা অশরীরী। তবে বিদেশি ভূতেরা অন্য রকম। বেসিনে মুখ ধুতে গেলেই তাঁরা ঘাপটি মেরে আপনার পিছনে দাঁড়িয়ে থাকে। মুখে ঘোরালে কাউকে দেখা যায় না, কিন্তু আয়নায় দিব্যি একটা মুখ ভেসে ওঠে!
অনেকে কিন্তু দাবি করেন, বাস্তবেও তাঁদের সঙ্গে এমনটি ঘটেই থাকে। আয়নায় তাকালে একটি বিকৃত মুখ চোখে পড়ে। ভয়ে গা-হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায় তাঁদের। মজার বিষয় হল, সেই মুখ আদপে কোনও ভূতের নয়। বরং আপনারই! বিশ্বাস না হলেও কথাটা সত্যি।
এটিকে বলে ট্রক্সলার এফেক্ট। দীর্ঘক্ষণ এক দিকে তাকিয়ে থাকলে কিছু রেখা আমাদের মস্তিষ্ক আবছা করে দেয়। তাতেই এই ধরনের অপটিক্যাল ইলিউশন তৈরি হয়। যার ফলে মুখটি বিকৃত লাগে। এখনও বিশ্বাস না হলে আরেকটু বুঝিয়ে বলা যাক। ধরুন, আপনি এখন এই প্রতিবেদনটি পড়ছেন মন দিয়ে। আপনার ঠিক চোখের সামনে কিন্তু আপনার নাক। সেটি আপনার মস্তিষ্ক প্রায় মুছে দিচ্ছে। ল্যাপটপের মাদারবোর্ডের আওয়াজ, ত্বকের উপর জামার অনুভূতি, কিছুই আপনি টের পাচ্ছেন না। আমাদের মস্তিষ্ক অনেক তথ্য চেপে রেখে শুধু যেটা জরুরি তাতে মনোযোগ দেয়। আপাতত আপনার কাছে সবচেয়ে জরুরি চোখ দিয়ে এই প্রতিবেদনটি পড়া। তাই বাকি অনুভূতিগুলি আপনার মস্তিষ্ক এড়িয়ে চলতে শেখাচ্ছে। না হলে কোনও কাজই ঠিক করে হবে না। তেমনই ঠিক এক দৃষ্টিতে যদি একটি বৃত্তের মধ্যে একটি মাত্র লাল ডটের দিকে তাকিয়ে থাকেন, কিছুক্ষণ পর (প্রায় ২০ সেকেন্ড) বাইরের বৃত্তটি তেমন আর চোখে পড়বে না। মনে হবে যেন মিলিয়ে যাচ্ছে। আয়নায় অনেকক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে অনেকের তাই একই রকম একটি ইলিউশন হতে পারে।
১৮০৪ সালে ইগনাজ ট্রক্সলার নামে এক বিজ্ঞানী এই বিষয়টি আবিষ্কার করেন। ওঁর নামেই এই ইলিউশনের নামকরণ। এই একই ইলিউশনের জন্য অনেকক্ষণ আয়নায় তাকিয়ে থাকলে মনে হবে কপালের চারপাশটা মিলিয়ে যাচ্ছে বা মুখের আকার পাল্টে যাচ্ছে। বা সব রং মিশে যাচ্ছে। মস্তিষ্কের আরেকটি ধরন হল অনেক ইলিউশনের সময়ে ছবিটা চেনা কোনও অন্য ছবির মতো দেখতে বাধ্য করে আমাদের। তাই এই ইলিউশনে অনেকেই হয়তো অন্য কোনও ছবিতে বা ভূতের সিনেমায় দেখা কোনও ছবির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন হঠাৎ করে। আর ভাবেন, আয়নায় বোধহয় কোনও ভূত রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy