মহিলাদের জীবনে ঋতুস্রাব সবচেয়ে স্বাভাবিক বিষয়গুলির একটি। আর স্বাভাবিক বলেই হয়তো অধিকাংশ সময় ঋতুচক্র সংক্রান্ত ছোটখাটো বিষয়ে চোখ এড়িয়ে যায়। যেমন স্তনে ব্যথা। মহিলারা জানেন, মাসের নির্দিষ্ট সময়ে এই ব্যথা হতে থাকে এবং সেটি ঋতুচক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু ব্যথার কারণ সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। অথবা কখন সেই ব্যথাকে আর ‘স্বাভাবিক’ আখ্যা দেওয়া যাবে না, তা সকলের মধ্যে সচেতনতা নেই। এই দুই বিষয় নিয়েই বিস্তারিত জানালেন স্ত্রীরোগ চিকিৎসক সুভাষ হালদার।
আরও পড়ুন:
আনন্দবাজার ডট কম-কে চিকিৎসক বললেন, ‘‘স্তনে ব্যথার কারণ স্বাভাবিক এবং অস্বাভাবিক, দুই-ই হতে পারে। কিন্তু কত ক্ষণ সেটি নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই, আর কখন চিকিৎসকের পরামর্শের প্রয়োজন, তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি হওয়া দরকার।’’
আরও পড়ুন:
দুই ঋতুচক্রের মাঝের সময়টিকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথমটি, ডিম্বাণু নিষ্ক্রমণের পূর্ববর্তী এবং ডিম্বাণু নিষ্ক্রমণের পরবর্তী সময়। পূর্ববর্তী সময়কালে মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন বেশি থাকে। পরের সময়টায় প্রোজেস্টেরনের পরিমাণ বেশি হয়। মহিলাদের প্রজননের অঙ্গগুলিতে প্রোজেস্টেরনের প্রভাব পড়ে। নারীদেহে ডিম্বাশয় এবং জরায়ুই কেবল প্রজনন অঙ্গ হিসেবে পরিচিত নয়, স্তনও পড়ে এই তালিকায় (যদিও গৌণ)। প্রোজেস্টেরনের প্রভাব তাই স্তনেও পড়ে। আর ডিম্বাণু নিষ্ক্রমণের পরবর্তী সময়ে প্রোজেস্টেরন বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই সব জায়গায় রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। দুই স্তনেই রক্ত সঞ্চালন বেড়ে গেলে ব্যথা হতে থাকে। আর তার ঠিক দিন কয়েক পরেই ঋতুস্রাব শুরু হয়।

দুই স্তনেই রক্ত সঞ্চালন বেড়ে গেলে ব্যথা হতে থাকে। ছবি: সংগৃহীত।
কিন্তু কখন সতর্ক হতে হবে?
চিকিৎসক বললেন, ‘‘যখন দেখবেন, ঋতুচক্রের দুই ভাগের কোনওটির সঙ্গে সম্পর্ক নেই, মাসের যখন-তখন ব্যথা অনুভব হচ্ছে, তখনই সতর্ক হতে হবে। সেই সময়ে দেখা যাবে, কোনও একটি স্তনের নির্দিষ্ট এলাকায় ব্যথাটি হচ্ছে। এমন নয় যে, ব্যথা কোথায় হচ্ছে, বুঝতে পারছেন না। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া উচিত। তাকে স্তনের ক্যানসারের লক্ষণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। তবে দুই স্তনে একই সঙ্গে ব্যথা হলে ক্যানসারের সম্ভাবনা কম।’’