বিমানের গায়ে সাদা রং করা হয় কেন, কারণ জানেন? ছবি: ফ্রিপিক।
রঙিন যাত্রীবাহী বিমান কখনও দেখেছেন? যাত্রীবাহী বিমানের রং সবসময়েই দেখবেন সাদা। কেবল বিমানের গায়ে কোম্পানির লোগো আর লেজের কাছে খানিকটা রং থাকতে পারে। বাকি গোটা বিমানের গায়ের রঙই সাদা। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, যাত্রীবাহী বিমানের রং সাদা কেন? এতগুলি বিমান সংস্থা রয়েছে, তারা চাইলেই তো বিভিন্ন রঙে রাঙিয়ে দিতে পারত বিমান। কিন্তু তা হয় না। এর কিছু কারণ আছে। কী কী সেই কারণ জেনে নিন।
১) তাপমাত্রার ভারসাম্য
প্রথম কারণ হল, বিমানের ভিতর তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখা। সূর্যের চড়া রোদ সরাসরি বিমানে পড়ে। তাই বিমানের যন্ত্রপাতি, কেবিন যাতে গরম না হয়ে যায়, সে কারণেই সাদা রং করা হয় যাত্রীবাহী বিমানে। এর বিজ্ঞানসম্মত কারণও রয়েছে। সাদা রং সূর্যের রশ্মি শোষণ করে না, বরং প্রতিফলিত করে দেয়। তাই গরম কালে সাদা বা হালকা রঙের পোশাক পরতে বলা হয়। কারণ সাদা রং তাপ কম শোষণ করে। অনেক বেশি সহনশীল হয়। তাই বিমান যত ক্ষণই প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে থাকুক না কেন, কখনওই ভিতরটা গরম হয়ে যাবে না।
২) সূর্যরশ্মি প্রতিফলিত করে
বিমানের গায়ে সরাসরি সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি পড়ে। যত বেশি উচ্চতা দিয়ে উড়বে, ততই অতিবেগনি রশ্মির ঝাপটা সইতে হবে। সাদা রং যেহেতু সূর্যরশ্মি প্রতিফলিত করে দিতে পারে, সে কারণেই সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মিগুলি থেকে বিমানকে বাঁচানোর জন্যই সাদা রং করা হয়। সাদা রং সূর্যরশ্মির ৯৯ শতাংশ প্রতিফলিত করে দিতে পারে।
৩) ক্ষত চিহ্নিত করা যায়
যাত্রীবাহী বিমানের গায়ে বা ডানায় ফাটল ধরলে, অথবা বিমানের গায়ে আঁচড়ের দাগ পড়লে তা সহজে চিহ্নিত করার জন্য এই সাদা রং। গাঢ় রং হলে আঁচড়ের দাগ চট করে বোঝা যায় না। সাদা রং হলে সহজেই বোঝা যাবে যে কোথাও রং উঠে গিয়েছে কি না অথবা ঘষা লেগে ক্ষত তৈরি হয়েছে কি না।
৪) সাদা রং বেশিদিন টেকে
ঝড়ঝঞ্ঝা, বৃষ্টি, বিদ্যুতের চমকানি— বিমানকে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে উড়তে হয়। যদি অন্য গাঢ় রং হত, তা হলে অল্পদিনেই বিবর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু সাদা রং সহজে বিবর্ণ হয় না। বেশি দিন স্থায়ীও হয়। বিমান যত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়েই যাক না কেন, রং যাতে নষ্ট না হয় সে কারণেই এই সাদা রং।
৫) বিপদসঙ্কেত দেয়
আকাশে ওড়ার সময়ে পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগার ঘটনা নতুন নয়। এই কারণে বড় বিপদেও পড়তে হয়েছে অনেক বিমানকে। তাই বিমানের রং সাদা রাখা হয়, যাতে পাখিরা দূর থেকে বিমানকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারে। অন্য রং হলে চারপাশের প্রকৃতি আর বিমানকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারত না পাখিরা। ফলে দুর্ঘটনাও অনেক বেড়ে যেত। সাদা রং বিপদ এড়ানোর সঙ্কেত হিসাবেও কাজ করে।
৬) খরচ কম
অত বড় বিমান রং করার খরচ তো কম নয়। তাই পকেট বাঁচাতেও সাদা রঙই বেছে নেয় বিমান সংস্থাগুলি। একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান রং করাতে কম করেও ২৪০ লিটার রং লাগবে, সেখানে এয়ারবাস এ৩৮০ রং করতে লাগবে ৩৬০০ লিটারের মতো রং। যে রঙই করা হোক না কেন, লিটার প্রতি হিসাবে তার খরচ পড়বে বিশাল। সাদা রং সেখানে সবচেয়ে সস্তা। তাই এই রঙই বেছে নেওয়া হয়।
৭) ওজন কমে
সাদা রং করলে বিমানের ওজন বাড়ে না। অন্য গাঢ় রঙের কয়েকটি প্রলেপ দিতে হলে ওজনও বেড়ে যাবে। আর বিমানের ওজন বাড়লে তেলের খরচও বাড়বে। সাদা রং সেখানে অনেক সাশ্রয়ী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy