প্লাস্টিক মানি বলতে যা বোঝায়, সাম্প্রতিক কালে তার গুরুত্ব ও ব্যবহার অপরিসীম। বাড়ির পাশের বাজারে নিয়মিত যেতে না হলে বেশির ভাগ সময়েই পকেটে খুব বেশি ক্যাশ নিয়ে চলাফেরা করেন না কেউই। ইদানীং বাজারটুকুও গ্রসারি অ্যাপের মাধ্যমে করে ফেলেন এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। সেই সঙ্গে স্মার্টফোন ছাড়াও অচল জেন নেক্সট। ফোনের বিষয়টি অবশ্য যে কোনও বয়সের মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে এর উপরে নির্ভরশীলতা এতই বেড়ে গিয়েছে যে, কার্ড কিংবা ফোনটি হাতের নাগালে না থাকলেই চূড়ান্ত অসহায় লাগবে নিজেকে। রোজনামচাও যাবে আটকে। অতএব, স্মার্টফোন কিংবা স্মার্টকার্ডটি কোনও ভাবে খোয়া গেলে বা খুঁজে না পেলে তৎক্ষণাৎ কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা জেনে রাখাও জরুরি। অনেক ক্ষেত্রেই এমন সময়ে মাথা কাজ করে না। আগে থেকে সতর্ক হলে বিপদের মুহূর্তে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগানো সম্ভব। ঠিক মতো সন্ধান করলে ফিরে পেতে পারেন আপনার সাধের ক্রেডিট/ডেবিট/স্মার্টকার্ডটি।
যত্নে রাখুন কার্ড
এটিএম কার্ড, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড যত্ন নিয়ে ব্যবহার করুন। সাধারণত যাঁরা নিয়মিত কাজে বেরোন, তাঁরা মানিব্যাগেই রাখেন কার্ড। একাধিক কার্ড থাকলে কার্ডহোল্ডারও ব্যবহার করেন অনেকে। সবসুদ্ধ খোয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। যে কার্ডটি হারিয়েছে বা চুরি গিয়েছে, তার সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করে লক করতে বলুন। কার্ডের ডিটেল নিজের কাছে লিখে রাখা জরুরি। ফোনের কনট্যাক্ট লিস্টে পার্সোনাল ব্যাঙ্কারের নম্বর সেভ করে রাখেন অনেকে। তাঁকে ফোন করুন, অথবা সরাসরি ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করুন। ব্যাঙ্কের অ্যাপ ফোনে ডাউনলোড করে রাখলে বা নেটব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে নিজেই কার্ড লক করতে পারবেন। কার্ডের ব্যাপারে যে কোনও সাহায্যের জন্য টোল ফ্রি নম্বরটি ফোনে সেভ করে রাখুন। এ ছাড়া, কার্ড প্রোটেকশন প্ল্যানও অ্যাক্টিভেট করে রাখতে পারেন নির্দিষ্ট প্রিমিয়ামের বিনিময়ে। কার্ড প্রোটেক্টেড থাকলে তা অনেক সময়ে ইমার্জেন্সি ক্যাশ অ্যাসিস্ট্যান্সেও কাজে লাগে। বিশেষ করে, বেড়াতে গিয়ে বা চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি দরকারে। অনেক সময়ে এটিএম ট্রানজ়্যাকশনের সময়ে মেশিন পুরনো হলে বা কোনও ত্রুটি থাকলে কার্ড লক হয়ে মেশিনেই আটকে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের নির্দিষ্ট শাখায় সেই কার্ড জমা পড়ে যায়। সেখানে যোগাযোগ করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে কার্ডটি ফেরত পাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।
ফোনের ও পারে
অ্যান্ড্রয়েড হোক কিংবা আইওএস, এখন স্মার্টফোন হারালে ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। কারণ প্রায় প্রতিটি আধুনিক ফোনেই সিকিয়োরিটি এবং ট্র্যাকারের বন্দোবস্ত করা সম্ভব। ফোন হারালে সেই মারফত তার সন্ধান পাওয়া খুব দুষ্কর নয়। তার জন্যেও আগে থেকে কয়েকটি সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। অ্যান্ড্রয়েডের ক্ষেত্রে নামী কয়েকটি ব্র্যান্ড এবং আইফোনে নিজস্ব সিকিয়োরিটির ব্যবস্থা থাকে। যদি ঠিক মতো নিজের অ্যাকাউন্টটি ট্র্যাকে রাখেন, তা হলে সহজে সুরাহা সম্ভব। ফোন হারিয়ে ফেলেছেন, বুঝতে পারা মাত্রই অন্য কোনও ফোন থেকে নিজের নম্বরে ফোন করার চেষ্টা করুন। রিং হলে বুঝবেন, ফোনটি কোথাও খোয়া গিয়েছে, চুরি যায়নি। সাধারণত চুরি গেলে সিম সঙ্গে সঙ্গে খুলে ফেলা হয়। হারিয়ে যাওয়া ফোনে যদি রিং না হয় কিংবা ডেড টোন আসে, তা হলে বুঝতে হবে, হয় ব্যাটারি ড্রেনড হয়েছে অথবা ফোনটি চুরি গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হোন। চুরি হওয়া ফোনের ক্ষেত্রে প্রথমেই স্থানীয় থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি করুন। ফোনের জিপিএস ট্র্যাকার অন থাকলে সাইবার ক্রাইম বিভাগের থেকে ফোনটি ট্র্যাক করার ক্ষেত্রে সাহায্য পেতে পারেন। ব্যক্তিগত তথ্য, যা অন্য কারও জানা সম্ভব নয়, তা দিয়ে লক স্ক্রিন মেসেজ সেট করে রাখতে পারেন। গুগলে অ্যাকাউন্ট থাকলে ফোনে থাকা কনট্যাক্ট, ছবি বা ডেটা সবই উদ্ধার করে ফেলা সম্ভব। ফোন হারিয়ে গেলে অন্য কোনও ডিভাইস থেকে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ম্যানেজার খুলে সব ক’টি অ্যাকাউন্ট থেকে লগ আউট করুন। ফোনে ফাইন্ড মাই অ্যাপ চালু রাখুন। চুরি হয়েছে বুঝতে পারলে আপনার অ্যান্ড্রয়েড কিংবা আইফোনের ব্যক্তিগত তথ্য সরিয়ে ফেলা দরকার। না হলে হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা থেকে যায়। মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট ম্যানেজারের সাহায্যে পার্সোনাল ডেটা ফোন থেকে মুছে ফেলুন। পাসওয়র্ড বদলে নিন। ফোন, ল্যাপটপের মতো ডিভাইস চুরি গেলে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখতে হবে। কল/ইন্টারনেট সার্ভিসও সাসপেন্ড করতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। ‘মার্ক অ্যাজ় লস্ট’ করতে ভুলবেন না।
দৈনন্দিন যাপনের অপরিহার্য গ্যাজেট সামলে রাখুন। জীবনকে আরও সহজ, মসৃণ করে তোলে যা যা, তা সাবধানে রাখার মার নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy