সকাল-বিকেল হাঁটছেন। কিন্তু এর পরেও ওজন কমছে না। হাঁটলে সারা শরীরের ব্যায়াম হয় ঠিকই, তবে হাঁটারও কিন্ত সময় ও নিয়ম আছে। এত দিন জানা ছিল, ভোরে হাঁটলে নাকি দ্রুত ওজন কমে। তাই অনেকেকই দেখবেন, কার্ডিয়ো বা ভারী ব্যায়াম না করলেও প্রাতর্ভ্রমণ ঠিক করেন। এখন কথা হল, ভোরে হাঁটলেই কি ওজন কমবে?
হাঁটলে শরীর ভাল থাকে, এই নিয়ে কোনও দ্বিমতই নেই। হাঁটাহাঁটির উপকারিতা যে কত, তা একবাক্যে মেনে নেন চিকিৎসক থেকে ফিটনেস প্রশিক্ষক, পুষ্টিবিদ সকলেই। আর ভোরে উঠে হাঁটলে শরীর ও মন ভাল থাকে, সে নিয়েও কোনও সন্দেহ নেই। প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছু ক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে মানসিক চাপও অনেক কমে যায়। কিন্তু কথা হল, ওজন কমানো নিয়ে। তার জন্য ভোরে উঠেই যে হাঁটতে হবে এমন কোনও কথা নেই। বরং ঠিক কোন সময়ে হাঁটলে ক্যালোরি ঝরবে, তা জানিয়েছেন হায়দরাবাদের পুষ্টিবিদ ঋদ্ধি পটেল। তাঁর মতে, দুপুরে হোক বা রাতে, খেয়ে উঠে মিনিট দশেক হাঁটলে যা উপকার হবে তা ভোরে উঠে হাঁটার চেয়ে অনেক বেশি। তাঁর পরামর্শ, ওজন কমাতে হলে খাওয়ার পরে হাঁটাই ভাল।
আরও পড়ুন:
এই বিষয়ে একমত পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীও। তিনি জানান, ১০ হাজার পা হাঁটা নিয়ে খুব চর্চা হচ্ছে চারদিকে। প্রতি দিনে ১০ হাজার পা হাঁটতেই হবে, এমন কথা নেই। যদি খাওয়ার পরে ১০-১৫ মিনিট হাঁটেন, তা হলে যেমন হজম ভাল হবে, তেমনই মেদ জমবে না শরীরে। আর রক্তে শর্করার পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ডায়াবেটিকদের জন্যও এই অভ্যাস খুবই ভাল।
খেয়ে উঠে হাঁটারও কিন্তু নিয়ম আছে। খাওয়ার পরেই অনেকে হাঁটতে বেরোন। মিনিট ১৫ বা ৩০ কেউ জোরে হাঁটেন কেউ আবার পায়াচারিও করেন। তবে কারও কারও ভরপেট খাওয়ার পরেই হাঁটলে শরীরে অস্বস্তি হয়। পেটেও কষ্ট হয়। সে ক্ষেত্রে বিরতি নিয়ে হাঁটা ভাল। একটানা ৫ মিনিট হাঁটার পরে একটু থামুন। কিছুটা জল খেয়ে নিন। তার পরে আবার হাঁটুন।
দৌড়দৌড়ি নয়, বরং ধীরেসুস্থে হাঁটলেই হবে, এমনটাই জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ। বেশি জোরে হন্তদন্ত হয়ে হাঁটলে খাবার হজমে সমস্যা হবে। যাঁদের অম্বলের ধাত আছে, তাঁদের ধীরেই হাঁটতে হবে। না হলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা হতে পারে। হাঁটার সময়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে নজর দিতে পারেন। হাঁটতে হাঁটতেই শ্বাস নেওয়া-ছাড়ার ব্যায়াম করে নিতে পারেন। নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস টেনে মুখ দিয়ে ছাড়তে হবে। এই ভাবে অভ্যাস করলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। হার্টও ভাল থাকবে।