Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

তেলে-ভিটামিনে ফিরুক প্রাণ

রুক্ষ ত্বক আর শুষ্ক চুলের প্রাণ ফেরানোর দাওয়াই ভিটামিন ই। রহস্য ভেদ করবেন কী ভাবে? খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, সিরাম, ময়শ্চারাইজ়ার, আই ক্রিম, হ্যান্ড অ্যান্ড ফুট ক্রিম থেকে শুরু করে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নানা প্রডাক্টেই ব্যবহার করা হয় এই ভিটামিন।

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

ঝলমলে চুল আর টানটান সতেজ ত্বক না হলে সৌন্দর্য যেন ফিকে পড়ে যায়। তাই তা ধরে রাখতে খোঁজ চলে কত কিছুর! ফেসিয়াল করার সময়ে অনেকেই মিশিয়ে নেন ভিটামিন ই ক্যাপসুল। ত্বক উজ্জ্বল রাখতে ভিটামিন ই-র বিকল্প আর কিছু নেই— প্রাথমিক ভাবে এই ধারণা থেকেই তা ব্যবহার করেন অনেকে। খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, সিরাম, ময়শ্চারাইজ়ার, আই ক্রিম, হ্যান্ড অ্যান্ড ফুট ক্রিম থেকে শুরু করে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নানা প্রডাক্টেই ব্যবহার করা হয় এই ভিটামিন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে ভিটামিন ই-র এত চাহিদা কেন?

গোড়ার কথা

এটি এমন এক ধরনের ভিটামিন, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট উপাদান। ত্বক তরতাজা রাখা ছাড়াও নানা সমস্যা দূর করে এই ভিটামিন। অতি বেগুনি রশ্মি থেকে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বক। তাও সারিয়ে তোলে এই ভিটামিন। অ্যান্টি এজিং উপাদান থাকার জন্য ভিটামিন ই বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া নানা শারীরিক সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে এটি।

সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজনীয়তা

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দিনের বেলা রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণ থাকার পরে যদি কারও রক্তে ভিটামিন ই-র পরিমাণ পরীক্ষা করে দেখা যায়, তা হলে সেই পরিমাণ অনেকটাই কম আসবে। অর্থাৎ ভিটামিনটি সেই সময়ে কার্যকরী। অতিরিক্ত সূর্যালোক ত্বকের নানা ক্ষতি করে। সেই ক্ষতিপূরণের কাজটা ভিটামিন ই করলেও অনেক সময়ে দরকার পড়ে আরও বেশি পরিমাণের। ঠিক এই কারণেই প্রয়োজন সাপ্লিমেন্টের। খেয়াল রাখতে হবে, শারীরচর্চার জন্য ব্যবহৃত প্রসাধনীতে যেন ভিটামিন ই-র মাত্রা থাকে বেশি।

ভিটামিনের উৎস

এক জন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ পুরুষ বা মহিলার দিনে সাধারণত ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই প্রয়োজন। দিনের রোজকার খাবারের মধ্য থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই গ্রহণ করে শরীর। ক্যানোলা বা সানফ্লাওয়ার অয়েলে রান্না করা খাবার, আমন্ড, চিনেবাদাম, ব্রকোলি, পালং ইত্যাদিতে থাকে ভিটামিন ই। ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্যাস্টর অয়েলের জুড়ি মেলা ভার।

ক্যাস্টর অয়েল ও ভিটামিন ই

গাছের বীজ পিষে পাওয়া যায় ক্যাস্টর অয়েল। তাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। হালকা হলদেটে রঙের এই তেলের গন্ধ কটু হয়। ভিটামিনের ঘাটতি মেটাতে ত্বক-চুলে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহারের আগে জেনে নেওয়া জরুরি, শরীর তা নিতে পারছে কি না।

• অনেকেই অল্প সময়ের মধ্যে একঢাল রেশমি চুলের স্বপ্ন দেখেন। সে ক্ষেত্রে দরকার ক্যাস্টর অয়েল। এই তেল স্ক্যাল্পের ভিতর পর্যন্ত প্রবেশ করে কন্ডিশনিং করে। চুল মজবুত হয়, ফিরে আসে জেল্লা। স্ক্যাল্পের পিএইচ ব্যালান্স ফিরিয়ে আনে, খুশকি দূর করে, চুলের ডগা ফাটার সমস্যা কমায় এই তেল। তার জন্য ক্যাস্টর অয়েল স্ক্যাল্পে মাসাজ করতে হবে।

• ক্যাস্টর অয়েলের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় এটি মিশিয়ে নিতে পারেন অল্প পরিমাণে নারকেল তেলের সঙ্গে। সপ্তাহে দু’দিন রাতে স্ক্যাল্প ও চুলে ক্যাস্টর-নারকেল তেল মাসাজ করে নিতে পারেন। পরের দিন সকালে মাইল্ড শ্যাম্পু করা দরকার।

• ক্যাস্টর অয়েলে বেশি পরিমাণে ভিটামিন ই থাকায়, শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে এটি ব্যবহার করতে পারেন। ক্যাস্টর অয়েল সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করা ঠিক নয়। সম পরিমাণে ক্যাস্টর অয়েল ও নারকেল তেল মিশিয়ে মাসাজ করতে হবে। মিনিট কুড়ি পরে ভাল করে স্নান করে নিন। হাতে সময় থাকলে রোজ মাসাজ করার সুফল মিলবে কয়েক সপ্তাহেই।

• ক্যাস্টর অয়েলে থাকা ভিটামিন ই ত্বকে ইলাস্টিন ও কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বকের কোঁচকানো ভাব বা রিঙ্কল দূর করতে কয়েক ফোঁটা তেল আলতো হাতে রিঙ্কলের জায়গায় মাসাজ করতে হবে। তবে এর ফল রাতারাতি পাওয়া সম্ভব নয়।

• ঠিক যে কারণে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্যাস্টর অয়েল চুল বাড়াতে সাহায্য করে, সে কারণেই এটি ব্যবহার করতে পারেন আইব্রো ও ল্যাশে। প্রোটিন, ভিটামিন ই ও ফ্যাটি অ্যাসিড ভ্রুপল্লবের ঘনত্ব বাড়ায়। কটন সোয়্যাবে অল্প তেল নিন। তার পরে ভুরুর উপরে লাগাতে পারেন। একই ভাবে ঘুমোনোর আগে চোখ বুজে আইল্যাশে লাগাতে পারেন এটি।

• স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে এক টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল ও দু’টেবিল চামচ আমন্ড অয়েল মিশিয়ে মাসাজ করতে পারেন। তাড়াতাড়ি ফল পেতে সরাসরি ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে হিটিং প্যাড ব্যবহারের পদ্ধতি মেনে চলতে পছন্দ করেন অনেকে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

• ফাটা ও শুষ্ক গোড়ালির প্রাণ ফিরিয়ে আনে এই তেল। ঈষদুষ্ণ গরম জলে মিনিট দশেক পা ডুবিয়ে রাখুন। পিউমিস স্টোন দিয়ে এক্সফোলিয়েট করে নিন। পা মোছার পরে কটন প্যাডে ক্যাস্টর অয়েল ভিজিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশে লাগান। এতে গোড়ালি মসৃণ ও নরম হবে।

ভিটামিন ই ও ক্যাস্টর অয়েলের যুগলবন্দি কাজ করে ম্যাজিকের মতো। দরকার শুধু ঠিক ভাবে তা কাজে লাগানোর।

অন্য বিষয়গুলি:

Canola Oil Frizzy Hai Vitamin E
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy