Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Corona

বাঁচবে সময়, খেতেও দারুণ, করোনা আবহে বাড়ির খাবার হোক এ রকম

ঘরে উপকরণও সীমিত৷ ফলে কী যে বানাবেন আর কী খাবেন তাই এক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে

দুপুরের খাবার হোক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ছবি- পিক্স্যাবে

দুপুরের খাবার হোক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ছবি- পিক্স্যাবে

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ১১:২২
Share: Save:

গৃহ সহায়িকা রাখার মতো পরিস্থিতি এখন অনেকেরই নেই।সংক্রমণের ভয় যেমন একটা কারণ, কারণ আর্থিক সমস্যা।ফলে যে ধরনের খাবার খেয়ে এসেছেন এতকাল, এখন হয়তো আর তা হয়ে উঠছে না।সকালে হয়তো ব্রাউন ব্রেড খেতেন পি-নাট বাটার দিয়ে বা বিশেষ অ্যামন্ড মিল্ক দিয়ে মুসলি বা নির্দিষ্ট এক ধরনের ওটস, এখন সবই সাধ্যের বাইরে।

আটার রুটি খেলে হয়, কিন্তু রোজ রোজ বানাতে ভাল লাগে না।সকালটা তাই কেটে যায় ঘন ঘন চা ও বিস্কুটের উপর দিয়ে।কখনও দু-এক গাল মুড়ি, কখনও তাও নয়।ফলে দুপুরের গনগনে খিদের সঙ্গী হয় এক থালা ভাত।

ঘরে উপকরণও সীমিত।ফলে কী যে বানাবেন আর কী খাবেন তাই এক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভয়ও রয়েছে সঙ্গে। ভুলভাল খেলে পুষ্টির যেমন ঘাটতি হতে পারে, বাড়তে পারে ওজনও। দুই-ই কোভিডের জন্য বিপজ্জনক।

আরও পড়ুন:রোগ প্রতিরোধে পাতে থাকুক টক দই, তবে খাওয়ার আগে মাথায় রাখুন এ সব

কী করবেন

একটু বুঝে চললে ঘরে যা আছে তা দিয়েই পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবার বানানো যায়।কম খাটনিতে।কয়েকটা উদাহরণ দেওয়া হল।এর মধ্যে থেকে পছন্দসই কিছু বেছে নিন।

১. সকালে রোজ রোজ রুটি-সবজি-ডিম বানানোর ইচ্ছে না হলে, একটু চালে-ডালে বসিয়ে দিন।এবার তাতে ঘরে যা সবজি আছে সব দিন দু-এক টুকরো করে।বিনস, গাজর তো দেবেনই।আলু-পটলও দিতে পারেন।খোসা না ছাড়ালে খাটনি যেমন কমবে, ফাইবারের কারণে উপকারও বেশি পাবেন।ওজন বেশি হলে বা ডায়াবিটিস থাকলে বা কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সুফল পাবেন হাতে হাতে।এবার এতে সিকি চামচ ঘি বা মাখন মিশিয়ে নিলেই পেয়ে যাবেন পরিপূর্ণ সুষম খাবার।স্বাদও মন্দ লাগবে না।

উদ্বেগ কাটবে, মন ভাল হবে, পুষ্টিকরও, পাতে থাকুক এমন খাবার।ছবি: শাটারস্টক

মুখরোচক কিছু চাইলে বিনস, গাজর, বাদাম দিয়ে চিড়ের পোলাও বানাতে পারেন।সঙ্গে একটা ডিম সেদ্ধ খেয়ে নিন।

২. মাঝ-সকালে আগে হয়তো কাজু-কাঠবাদাম-আখরোট মিলিয়ে-মিশিয়ে খেতেন বা মিক্সড সিড।এখন তার বদলে ফল খেতে পারেন বা ফ্রুট স্যালাড কি দই ও ফলের স্মুদি।বা আধমুঠো চিনেবাদাম।

আরও পড়ুন: জ্বর না হয়েও করোনা আক্রান্ত অনেকেই, এ সব বিষয়ে সতর্ক হতে বলছেন চিকিৎসকরা​

৩. দুপুরে মনমতো মাছ-মাংস জোগাড় না হলেও প্রোটিনে যেন ঘাটতি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখুন।কিডনি বা হার্টের রোগ, হাই প্রেশার-কোলেস্টেরল না থাকলে ও খুব বেশি বয়স না হলে রোজ বা মাঝেমধ্যে দুটো ডিম খেতে পারেন। ডিমের সাদা অংশ গোটা তিনেক খেলেও ক্ষতি নেই।মএর পাশাপাশি গাউট বা অন্য কোনও সমস্যা না থাকলে একেক দিন একেক রকম ডাল খান।মসঙ্গে নিরামিষ প্রোটিন হিসেবে বিনস, ছোলা বা রাজমার তরকারি খেতে পারেন। এতে ফাইবারও বেশি পাবেন।

৪. সবজি নানা রকম খেতে হবে। কেটে বেছে রান্না করতে অসুবিধে হলে বা মানানসই সবজি না পেলে সবজি সেদ্ধ খান। দু-ফোটা কাঁচা তেল, নুন ও কাঁচা লঙ্কা মেখে গরম ভাতে।ডালের মধ্যেও দিয়ে দিতে পারেন। বানাতে পারেন সবজি দিয়ে মাছের ঝোল।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয় বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কতটা? রোগ ফেরার ভয় কাদের বেশি?​

৫. আগে হয়তো ব্রাউন রাইস খেতেন। এখন জোগাড় না হলে অল্প সাদা ভাতের সঙ্গে ডাল ও শাক-সবজি বেশি খান। বেশিই উপকার হবে বরং।ব্রাউন রাইসে আয়রনও বেশি থাকে।তার জন্যও চিন্তা নেই। ভাতের পাতে একটুকরো লেবু খেলেই খাবারে যতটুকু আয়রন আছে তার সবটুকু শরীরে শোষিত হবে।

৬. বাড়িতে গোটা মুগ বা ছোলা থাকলে সারা রাত ভিজিয়ে কল বার করে পেঁয়াজ, টোম্যাটো, শশা, লেবুর রস, নুন, কাঁচা লঙ্কা, ধনেপাতা মিশিয়ে স্যালাড বানিয়ে নিন। দু-চার টুকরো সেদ্ধ আলুও দিতে পারেন। বিকেলের টিফিন হিসেবে চমৎকার হবে।মুড়ি বা শুকনো খোলায় ভাজা চিড়েতে অল্প বাদাম বা ছোলা, একটু সেদ্ধ আলু, পেঁয়াজ, টোম্যাটো, শশা, লেবুর রস, নুন, কাঁচা লঙ্কা, ধনেপাতা মিশিয়েও খেতে পারেন।

ঝালমুড়িতে মিশিয়ে নিন কল বেরনো ছোলা। থাকুক গোলমরিচের গুঁড়োও। ছবি: পিক্স্যাবে

৭. কম খাটনিতে রাতের খাবারে বৈচিত্র আনতে চাইলে ছোট ছোট করে পেঁয়াজ, বিনস ও গাজর কেটে অল্প অলিভ অয়েল বা সর্ষের তেলে কম আঁচে নেড়ে নিন।অল্প টমেটো দিন।ডিম ফেটিয়ে ঝুড়ো করে নিন।এবার তাতে মেশান দুপুর বেলার থেকে যাওয়া ভাত।ভাল করে নেড়ে চেড়ে স্বাদ মতো নুন, লঙ্কা, চিনি ও ধনেপাতা মেশান।ডিমের বদলে সেদ্ধ চিকেনও দিতে পারেন।

৭. রাতে রুটি-তরকারি-ডাল-ভাত-সবজি-মাছ খেতে ইচ্ছে না হলে মাঝেমধ্যে রুটির রোল বানাতে পারেন।পরোটার রোলের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর হবে।একটা বা দুটো ডিম, পেঁয়াজ ও টমেটো দিয়ে সহজেই বানানো যায় এই রোল।

কম উপকরণে ও কম খাটনিতে এমনভাবে খাবার বানাতে হবে যাতে স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুই-ই বজায় থাকে।রসনার খাতিরে স্বাস্থ্যকে অবহেলা করার সময় এটা নয়। সুস্থ থাকুন সুষম আহার খেয়ে। একই সঙ্গে বাইরে বেরলে মাস্ক ব্যবহার করতে, বারবার হাত ধুতে ভুলবেন না যেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE