পুরীতে জিভে জল আনা খাবারের সন্ধানে। ছবি: সংগৃহীত।
পুরী নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক উত্তাল সমুদ্রের ছবি। অবিরাম সেই ঢেউ উঠছে, ভেঙে পড়ছে বালুতটে। সমুদ্রের ধারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ঝিনুক-শাঁখের টুকরো। পুরী বললেই মনে ভেসে ওঠে জগন্নাথ মন্দির, পুজো দেওয়া ও ভোগ প্রসাদ খাওয়ার অভিজ্ঞতা। ওড়িশার এই সৈকত শহরের সঙ্গে সেই কোন কাল থেকে বাঙালির নিবিড় সম্পর্ক। এখন অবশ্য এই শহর অনেক বেশি ঝকঝকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেবল সমুদ্রের ধারের ছোট ছোট দোকানগুলির সাজ বদলায়নি, শহরের রেস্তরাঁগুলিরও ভোল বদলেছে অনেকখানি।
জগন্নাথের শহরের ঘুরতে গেলে সেখানকার খাবার চেখে না দেখলেই নয়। পুরীতে রকমারি মিষ্টি, আলুরদম চাট, দই বড়া, বাঙালি খাবারের দোকান— রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাহারি খানার দোকান অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। তবে পুরী ঘুরতে যাওয়ার আগে জেনে নিন, কোন কোন খাবারের বিপণিতে ঢুঁ না মারলে সৈকত শহরে আপনার সফরটি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
পদ্মালয় রেস্টর্যান্ট: পুরীর সমুদ্র সৈকত থেকে গাড়িতে করে এই রেস্তরাঁয় যেতে সময় লাগবে মিনিট পনেরো। খাঁটি ওড়িয়া খাবার খেতে হলে ৪০ বছরের পুরনো এই রেস্তরাঁয় ঢুঁ মারতেই পারেন। কলাপাতায় খাবার পরিবেশন করা হয় এখানে। এখানে গেলে চেখে দেখতে পারেন চুড়া কদম আর ডালমা। চিড়ে, খোয়া আর মালাই একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই চুড়া কদম। সঙ্গে পরিবেশন করা হয় পাঁচমিশেলি ডাল, তিন রকমের সব্জি আর একটি মিষ্টির পদ। টক-মিষ্টি-ঝালের অদ্ভুত এক মেলবন্ধন রয়েছে এই থালিতে। এখানকার ছানার জিলিপি আর মালপোয়ার স্বাদও দারুণ। ১৫০ টাকা খরচ করলেই এখানে পেট ভরে খেতে পারবেন আপনি। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে চন্দনপুরের এই রেস্তরাঁটি।
ওয়াইল্ডগ্রাস রেস্টর্যান্ট: ওড়িয়া খাবারের পাশাপাশি উত্তর ভারতীয় খাবার খেতে চাইলে এই রেস্তরাঁয় এক বার ঢুঁ মারতেই পারেন। এখানে গেলে ঘি-ভাতের সঙ্গে মাংসের ঝোল, চিল্কা ক্র্যাব বা কাঁকড়া কষা না খেলে পরে আফসোস করতে হবে। খুব বেশি মশলাদার না হলেও এখানকার খাবারের স্বাদ আপনার মন জয় করবেই। দু’জনের খরচ পড়বে প্রায় ৮০০টাকা থেকে ১০০০টাকার মতো। ভিআইপি রোডের রেস্তরাঁটি দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
দালমা রেস্টর্যান্ট: ভিআইপি রোডের এই রেস্তরাঁয় গেলে আপনি খাঁটি ওড়িয়া খাবারের খোঁজ পাবেন। এখানে গেলে পখালা থালি (পান্তা) খেতে ভুলবেন না যেন। পান্তার সঙ্গে পরিবেশন করা হবে বড়ি চুড়া, চিংড়ির পোড়া, সব্জি, মাছ ভাজা, ভর্তা আর চাটনি। এই পুরো খাওয়াদাওয়া করতে খরচ পড়বে ৩০০ টাকা-৩৫০ টাকা মতো। পান্তা ছাড়াও এখানকার মটনের পাতলা ঝোল-ভাতের স্বাদও মনে থেকে যাবে বহু দিন।
মুন্না মটন পয়েন্ট: গ্র্যান্ড রোডের এই রেস্তরাঁ মটন-ভাতের জন্য বেশ জনপ্রিয়। কলাপাতায় ঘিয়ে মাখা ভাত, মাটির ভাঁড়ে পাঠার মাংস আর রায়তা। ২২০ টাকায় এই থালি কিন্তু আপনার মন জয় করবেই। বুধ, শুক্র ও রবিবারে গেলে বিরিয়ানিও পেয়ে যাবেন। এখানে কিন্তু খাবারের খুব বেশি বৈচিত্র পাবেন না। তবে চিকেন থালি বা মটন থালি আপনার মন জয় করবেই।
সং অফ বেঙ্গল: পুরীর সমুদ্রসৈকত থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথে হোটেল পুলিন পুরী। এই হোটেলের একতলায় পেয়ে যাবেন সং অফ বেঙ্গল রেস্তরাঁটি। রেস্তরাঁর পরিবেশে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া রয়েছে। পুরীতে ভাল বাঙালি রেস্তরাঁর খোঁজ করলে এই রেস্তরাঁটিকে রাখতেই পারেন পছন্দের তালিকায়। ইলিশ, চিতল, চিংড়ির রকমারি পদ পেয়ে যাবেন এই ঠিকানায়। মাছপ্রেমী হলে এই রেস্তরাঁটি কিন্তু পছন্দের তালিকায় রাখতেই পারেন। এখানকার মেনুতে পেয়ে যাবেন রকমারি নিরামিষ পদও। চেখে দেখতে পারেন মুরগি, পাঁঠার বিভিন্ন পদও। আর শেষপাতে যদি পড়ে নলেন গুড়ের আইসক্রিম, তা হলে তো কথাই নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy