নানা রকম পদ সাজানো আমিষ-নিরামিষ থালি পাবেন ‘ইলিশ ট্রুলি বং’-এ। ছবি: সংগৃহীত।
এমনি দিনে প্রায়ই অনলাইনে খাবার অর্ডার করে খান। কিন্তু পুজোর সময় রেস্তরাঁয় না গেলে যেন মনটা কেমন করে। একদিন ছোটবেলার পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে, একদিন পরিবারের সঙ্গে, অন্য দিনগুলো সহকর্মীদের সঙ্গে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা থাকতেই পারে। তবে শুধু টইটই করে ঘুরলেই তো হবে না, পেটেও তো কিছু দিতে হবে। গোটা শহরের মতোই পুজো উপলক্ষে সেজে উঠছে কলকাতার রেস্তরাঁগুলি। উত্তর হোক বা দক্ষিণ— রসনা তৃপ্তিতে যেন খামতি না থাকে, সেই উদ্দেশ্যে কোমর বেঁধে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। কলকাতার কোন দিকে ঠাকুর দেখতে গেলে কোথায় খাবেন, রইল তার সুলুক সন্ধান।
১) ক্যান্টিন
কেউ একসঙ্গে স্কুলে পড়েছেন, আবার কেউ কলেজে। পুজোর সময় ছোটবেলার বন্ধুরা একজোট হলে কথায় কথায় উঠে আসে পুরনো স্মৃতি। ফ্লাশব্যাকে উঠে আসা সেই সব স্মৃতি আবার রঙিন হয়ে উঠতে পারে ‘ক্যান্টিন— পাব অ্যান্ড গ্রাব’-এর ছোঁয়ায়। সল্টলেকের কাছাকাছি ঠাকুর দেখতে গেলে সন্ধেবেলা এখানে কিছু ক্ষণ জিরিয়ে নিতেই পারেন। সঙ্গে পেটপুজোর ব্যবস্থাও রয়েছে ভরপুর। ‘চৌরাসিয়া পাপড়ি চাট’, ‘চিকেন ভেলপুরি’, ‘টক-মিষ্টি মাশরুম’ থেকে ‘মোচা চিংড়ির কাটলেট’, ‘দই কাতলা’, ‘মাংসের পোড়া কবাব’, ‘মিহিদানার নিখুঁতি’— সবই পাবেন। সুরাপানের ব্যবস্থাও আছে। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ২৫০০ টাকা।
ঠিকানা: ব্লক সি, সিটি সেন্টার সল্ট লেক, কলকাতা-৬৪।
সময়: সোম থেকে শুক্র দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। শনিবার রাত ২টো এবং রবিবার রাত ১টা পর্যন্ত।
২) বার্মা বার্মা
পুজোয় বন্ধুদের নিয়ে খেতে যাবেন। কিন্তু খাবারে থাকতে হবে অন্য দেশের ছোঁয়া। চিন্তা নেই, কাছেই আসে বার্মা বার্মা। ‘গ্রিন টোম্যাটো অ্যান্ড পিক্ল টি লিফ স্যালাড’, ‘ক্রাঞ্চি স্প্রিং রোল’, ‘ইছা কই অ্যান্ড হোয়াইট পি মাস’, ‘স্টিম্ড ব্ল্যাক রাইস কেক’, ‘মান্ডালে মি শয়’— কী নেই। নাম শুনে বোঝার উপায় নেই। গিয়ে খেয়ে দেখতে হবে। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ১৮০০ টাকা। সঙ্গে চা, মকটেলের ব্যবস্থাও রয়েছে।
ঠিকানা: ১৮এম, স্টিফেন কোর্ট, পার্ক স্ট্রিট, কলকাতা-৭১।
সময়: সোম থেকে শুক্র দুপুর ১২টা থেকে ৩টে এবং সন্ধে সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত।
৩) ফোর কয়েন্স ক্যাফে
ষষ্ঠীর দিন বিকেলে বন্ধুরা বসবেন চায়ের আড্ডায়। কারও বাড়ির বসার ঘর নয়। সকলে মিলে চলে যেতে পারেন ফোর কয়েন্স ক্যাফেতে। বন্ধুরা যদি সামুদ্রিক খাবার খেতে ভালবাসেন, তা হলে তো কথাই নেই। ‘গাম্বেরি সালসা বিয়াঙ্কা’, ‘হিলসা রোমানেস্কো’, ‘পেস্টো পেসকেয়ার’, ‘ফিলেটো ডি নাপোলিটানো’— স্বাদ চেখে দেখা যেতেই পারে। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ৮০০ টাকা।
ঠিকানা: ১৬২, ১৭০, লেক গার্ডেন্স, কলকাতা-৪৫।
৪) ক্যাফে ড্রিফটার
যাদবপুর, সন্তোষপুর কিংবা বাঘাযতীনের দিকে ঠাকুর দেখে ফেরার পথে খিদে পেলে ঢুঁ দিতে পারেন ক্যাফে ড্রিফটারে। আর পরিবারের সকলে যদি চাইনিজ খেতে ভালবাসেন, তা হলে তো কথাই নেই। ‘চিকেন হাক্কা নুডলস’, ‘লাট মে কাই’, ‘থাই গ্রিন কারি’, ‘চিকেন ফিঙ্গার্স’, ‘কুং পাও চিকেন’, ‘জিঞ্জার গার্লিক প্রন’, ‘ওয়েস্টার ফিশ’— সবই পাবেন। লেক গার্ডেন্স এবং বাঘাযতীন— এই দু’টি শাখার যে কোনও একটিতে গেলেই হল। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ৬৫০ টাকা।
ঠিকানা: পি-৫৪৭, লেক রোড, হেমন্ত মুখার্জি সরণী, কলকাতা-২৯। এবং ই১, বাঘাযতীন কলোনি, কলকাতা-৮৬।
সময়: সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা ।
৫) করিম্স
পুজোর সময়ে বান্ধবীকে নিয়ে ঘুরতে বেরোবেন। আগে থেকেই তিনি বিরিয়ানি খাওয়ার আবদার জানিয়ে রেখেছেন। কিন্তু সেখানেও শর্ত আছে। চেনাজানা যে সব রেস্তরাঁয় একাধিক বার বিরিয়ানি খাওয়া হয়েছে, তেমন জায়গায় নিয়ে গেলে হবে না। খুঁজতে হবে নতুন কোনও ঠিকানা। তা হলে বান্ধবীকে নিয়ে একবার করিম্সের বিরিয়ানি চেখে দেখতেই পারেন। মুরগি বা খাসির বিরিয়ানি তো আছেই, সঙ্গে ‘তন্দুরি পনির টিক্কা’, ‘মটন বড়া চাঁপ’, ‘মটন নল্লি বড়া’, ‘বাটার চিকেন’, ‘ফিশ মশলা’, ‘চিকেন মালাই কবাব’— সবই আছে। দু’জনের জন্যে খুব বেশি খরচ হবে না। ১০০০ টাকার মধ্যেই কাজ সেরে ফেলা যাবে।
ঠিকানা: পিএস সৃজন কর্পোরেট পার্ক, জিপি ব্লক, সেক্টর ফাইভ, বিধাননগর, কলকাতা-৯১।
২/২ চিনার পার্ক, কলকাতা-১৫৭।
৫৫বি, মির্জা গালিব স্ট্রিট, তালতলা, কলকাতা-১৬।
সময়: দুপুর ১২টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত।
৬) ইলিশ ট্রুলি বং
সারা বছর যতই বিরিয়ানি, কন্টিনেন্টাল খাবার খান না কেন, পুজোর ক’দিন খাঁটি বাঙালি খাবার না খেলে আর পেটপুজো হবে কী করে? মাছ, মাংস, নিরামিষ, মিষ্টি— এত পদের বাহার আর কোন ঘরানার খাবারে আছেন বলুন দেখি? ‘গন্ধরাজ লেবুর শরবত’ দিয়ে শুরু করে ভাজাভুজি, ভাত, নারকেলি মুগডাল, বাসন্তী পোলাও-পাঁঠার মাংস, ডাব চিংড়ি, মুরগি— সবই পাবেন। রসনা তৃপ্তি করতে গেলে আসতে হবে ‘ইলিশ ট্রুলি বং’ রেস্তরাঁয়। রয়েছে থালির ব্যবস্থাও। খরচ ৮১১ টাকা থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে।
ঠিকানা: ৮৩ বি, পার্ক স্ট্রিট, কলকাতা-১৬।
সময়: দুপুর ১২টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা।
৭) কপার কারিজ়
পুজোর একটা দিন বন্ধুরা মিলে কলকাতা উত্তর থেকে দক্ষিণে ঠাকুর দেখতে আসবেন। কিন্তু মাঝপথে যানজটে আটকে ঘেমেনেয়ে, প্রচণ্ড খিদে পেয়ে যাবে। গুগ্লে কাছাকাছি ভাল রেস্তরাঁর নাম না খুঁজে সোজা চলে যেতে পারেন ডানলপের গুরুদ্বারের কাছে ‘কপার কারিস’-এ। খিদের পেটে ‘বুট জলোকিয়া মুর্গ টিকিয়া’, ‘কাকোরি কবাব’, ‘তন্দুরি মাশরুম’ থেকে বিরিয়ানি, নান, ‘পনির সুখী লাল মির্চ’, ‘মটন রারা’-র মতো পদ সাজানো থাকলে অন্য কোনও দিকে চোখ যাবে না। দু’জনের জন্যে খরচ পড়বে ৮০০ টাকা।
ঠিকানা: গুরু ম্যানসন, ১৩১/৪ ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোড, কলকাতা-১০৮।
৮) তাই চি ৮
সিংহি পার্কের ঠাকুর দেখে জনস্রোতে গা ভাসিয়ে পৌঁছে যাবেন একডালিয়া এভারগ্রিনের মণ্ডপে। কিন্তু খিদে পেলে সেখান থেকে কোথায় যাবেন? পাশেই রয়েছে ‘তাই চি ৮’ চাইনিজ় রেস্তরাঁ। ১৫ অক্টোবর যাত্রা শুরু করেছে এই রেস্তরাঁটি। ‘ক্যালকাটা ৬৪’ এর পর এটিই তাদের দ্বিতীয় রেস্তরাঁ। একেবারে সাবেক চিনা ঘরানার খাবার যদি চেখে দেখতে চান, তা হলে এক বার ঢুঁ দিতে পারেন এই রেস্তরাঁয়। বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, স্যালাড, ডিম সাম, বাও, রামেন বোল— রয়েছে আরও অনেক কিছু।
সময়: দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা
ঠিকানা: ৫৭/২, একডালিয়া রোড, বালিগঞ্জ, কলকাতা-১৯।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy