ফল এমন এক খাবার, যা স্বয়ংসম্পূর্ণ। ফল খাওয়ার জন্য খুব কসরতও নেই। অন্য খাবারের মতো এটা রান্না করে খাওয়ার ব্যাপার নেই। ফলে সময়ও সাশ্রয় হয়। তবে শুধুমাত্র ফল দিয়েই যদি ডায়েট করতে চান, তখন কেমন হবে সেই ডায়েট? সেটাই এ বার জানার পালা।
ফল কেন খাবেন?
ফল পরিবারের দিকে তাকালেই দেখা যায় এতে কত ধরনের উপাদান মজুত। শর্করা তো থাকছেই, প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় খনিজ থেকে শুরু করে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টেও ভরপুর। তাই নিয়মিত ফল খাওয়া জরুরি। কিন্তু শুধু ফল দিয়ে যদি ডায়েট করতে চান, তা হলে তা টানা দু’-তিন দিনের বেশি করা উচিত নয়। কোষ্ঠ পরিষ্কার করতে বা শরীর ডিটক্স করতে পরপর ভারী খাওয়াদাওয়া হয়ে গেলে দু’তিন দিন এই ধরনের ফলের ডায়েট করতে পারেন। তবে তার জন্য কী ধরনের ফল কখন খাবেন বা কী পরিমাণে খাবেন, তা-ও জানা জরুরি।
ফল দিয়েই ডায়েট
• সকালে বেরি দিয়ে এই ধরনের ডায়েট শুরু করতে পারেন। ভারতে খুব বেশি ধরনের বেরি পাওয়া না গেলেও স্ট্রবেরি, রাস্পবেরির উপরেই ভরসা রাখতে পারেন। বেরিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস থাকে। কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস থাকে। অর্থাৎ সাধারণত যতটা পুষ্টির প্রয়োজন হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিগুণে ভরপুর এই বেরি।
• এর পরে একটা স্মুদি খেতে পারেন। স্মুদি বানানোর জন্য পাকা কলা, বেরি জাতীয় ফল ব্যবহার করতে পারেন। কলা নেওয়ার আগে দেখে নেবেন তা যেন বেশ পাকা হয়।
• এর দু’-তিন ঘণ্টা পরে রাখুন ফ্রুট সালাড। তাতে শসা, জামরুল, আঙুর, পাকা পেঁপে, আপেলের মতো মরসুমি ফল রাখতে পারেন। ফল ছোট ছোট টুকরো করে তার উপরে পাতিলেবুর রস ও নুন ছড়িয়ে নিতে পারেন।
• লাঞ্চে রাখুন তরমুজ, পাকা পেঁপে, বেদানা জাতীয় ফল। এই ধরনের ফল হজম করতে বেশি সময় লাগে।
ফলে দুপুরেই এ ধরনের ফল খেতে পারেন।
• বিকেলের খাবারে ভরসা রাখুন সিট্রাস ফলের উপরে। একটা মুসাম্বি বা কমলালেবু খেতে পারেন।
• রাতের খাবারে রাখতে পারেন অ্যাভোকাডো, পেয়ারা, কলাজাতীয় ফল। অ্যাভোকাডোর দাম বেশি হলেও এতে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।
মনে রাখবেন
• এক একবারে কখনও ২০০ গ্রামের বেশি ফল খাবেন না। দুই থেকে তিন ঘণ্টা বাদে বাদে ফল খেতে পারেন।
• আম, কাঁঠাল জাতীয় ফল একেবারে বাদ দেওয়ার দরকার নেই। সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ দিনে একটি আম রাখতেই পারেন এই ডায়েটে। ডায়াবেটিক রোগী হলে অবশ্য সতর্কতা জরুরি। যেমন প্রি-ডায়াবেটিক হলে ব্রেকফাস্টে দু’-তিন স্লাইস আম খেতে পারেন।
• অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে সকালে উঠে প্রথমেই ফল খাওয়া যাবে না। কোনও সলিড খাবার খেয়ে তার পরে ফল খেতে হবে।
• এ বার প্রশ্ন, দিনে তা হলে কতটা ফল খাওয়া যেতে পারে। শুধু ফলের ডায়েট মেনে চললে একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ পুরুষ দিনে দেড় কিলোগ্রাম ও পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মহিলা দিনে ১ কিলোগ্রাম ফল খেতে পারেন।
• এ বার আসা যাক ড্রাই ফ্রুটসে। মনে রাখতে হবে, ড্রাই ফ্রুটসে কিন্তু ফ্যাটও থাকে অনেক পরিমাণে। তাই কাজু, আখরোট, পেস্তা জাতীয় ড্রাই ফ্রুটস যদি রাখতে চান ডায়েটে, তা থাকবে খুব অল্প পরিমাণে এবং সন্ধের দিকে। কিন্তু সেটা ফলের ডায়েটের মধ্যে পড়বে না। দু’দিন ফলের ডায়েট মেনে তার পরে অল্প অল্প করে ড্রাই ফ্রুটস অ্যাড করতে পারেন ডায়েটে।
• শুধু ফলের ডায়েট মেনে চলতে চাইলে তা টানা দু’-তিন দিনের বেশি করবেন না। তার পরে ফলের ডায়েটেই আনাজপাতি, অল্প প্রোটিন বা শস্য অ্যাড করে নিতে পারেন। ফলের পরিমাণ বেশি রেখে অল্প অল্প করে কার্বস বা প্রোটিন অ্যাড করলে ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে।
• তবে ফল কেনা ও খাওয়ার সময়ে সচেতন থাকতে হবে। কারণ ফলে প্রচুর পরিমাণে পেস্টিসাইডস ব্যবহার করা হয়। তাই খুব ভাল করে ধুয়েই ফল খাবেন।
ফলের ডায়েট মেনে চলুন বা না-ই চলুন, মনে রাখবেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিমাণে ফল রাখা দরকার। ফলের পুষ্টিগুণ থেকে শুরু করে ফাইবার... সবই শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
তথ্য সহায়তা: ডায়াটিশিয়ান প্রিয়া আগরওয়াল
মডেল: শ্রীলগ্না বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি: অমিত দাস; মেকআপ: চয়ন রায়; লোকেশন ও হসপিটালিটি: এপিসোড ওয়ান, তপসিয়া
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy