Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

বাড়িতে বসেই হতে পারে করোনার চিকিৎসা, কেমন ব্যবস্থা নিতে হবে

বাড়িতে কিছু ব্যবস্থা রাখতে হবে। খেয়াল রাখা দরকার, কী ভাবে নিজেদের চিকিৎসার অনেকটাই করা যায় হাসপাতালে না ভর্তি হয়েই।

হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতেও চিকিৎসা সম্ভব।

হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতেও চিকিৎসা সম্ভব। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সুচন্দ্রা ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২১ ১৮:০৩
Share: Save:

করোনায় আক্রান্ত হওয়া মানেই ভয়ের নয়। চিকিৎসা হতে পারে বাড়ি থেকেও। সংক্রমণ সম্পর্কে কয়েকটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা দরকার।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেই ফের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। হাসপাতালে জায়গা পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে আশঙ্কা। কিন্তু সংক্রমণের ভয়ের মাঝেও এ কথা মাথায় রাখা জরুরি যে, বাড়িতে কিছু ব্যবস্থা রাখতে হবে। খেয়াল রাখা দরকার, কী ভাবে নিজেদের চিকিৎসার অনেকটাই করা যায় হাসপাতালে না ভর্তি হয়েই। তবে প্রয়োজন মতো চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হবে।

তাতে কম যত্ন হবে কি রোগীর?

৮৫ শতাংশ করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা বাড়ি থেকে করা সম্ভব বলে মনে করাচ্ছেন চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। তাঁর বক্তব্য, বাড়িতে কয়েকটি ওষুধ মজুত রাখা যায় এ সময়ে। প্যারাসিটামল, মাল্টি ভিটামিন আর কাশিতে কাজে লাগার মতো অ্যান্টিহিস্টামিন। এ ছাড়াও, একটি অক্সিমিটার থাকা দরকার। পরিস্থিতি বুঝে মজুত রাখা যায় অক্সিজেন সিলিন্ডারও।

জেনে রাখা জরুরি, কোন উপসর্গ দেখা দেওয়া মানে কতটা গুরুতর হয়েছে সংক্রমণ। যেমন করোনা সংক্রমণের তিনটি মূল স্তর রয়েছে। প্রথম স্তরে ভাইরাস থাকে নাক-গলায়। এই স্তরে বিশেষ জ্বর বা বড় কোনও অসুবিধা দেখা দেয় না। সংক্রমণ গলা পর্যন্ত গেলে, কারও কারও গলা জ্বালা করে। এমন উপসর্গ দেখা দিলে ভিটামিন-সি খেতে শুরু করে দেওয়া জরুরি।

দ্বিতীয় স্তর হল, যখন কাশি বেশি হয়। জ্বরও বাড়ে এমন ক্ষেত্রে। শরীরের প্রতিরোধ শক্তি অনেকটাই নড়বড় হয়ে পড়ে সংক্রমণ এই স্তরে পৌঁছে গেলে। ফুসফুস আক্রান্ত হলে কাশি বাড়ে। শ্বাসের অসুবিধাও হতে পারে। তবে শ্বাসের সমস্যা বেশি না হলে এই স্তরেও আতঙ্কিত হয়ে পড়ার কারণ নেই। বাড়িতেই বারবার গরম জল করে ভাপ নেওয়া, গরম জলে ওষুধ ফেলে গার্গল করা এবং নিয়মিত ভিটামিন খাওয়া গেলে ধীরে ধীরে ভাল হয়ে উঠবেন রোগী।

সংক্রমণের তৃতীয় স্তরের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বেশি মাত্রায় হতে পারে। ফুসফুসের পাশিপাশি হৃদ্‌যন্ত্র, বৃক্কেও ক্ষতি করতে পারে ভাইরাস। দুর্বলতাও মারাত্মক পর্যায় পৌঁছোয়। এমন ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হতেই হবে।

চিকিৎসকেদের মতে, করোনায় আক্রান্ত যাঁরা হচ্ছেন, তাঁদের একটা বড় অংশের সংক্রমণের মাত্রা থাকছে মাঝারি স্তরের। এমন রোগীদের বারবার জল খাওয়া প্রয়োজন। আর ভাল ভাবে খাওয়াদাওয়া করতে হবে। অরুণাংশু বলেন, ‘‘করোনা এখন ঘরে ঘরে হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হলে চলবে না। যাঁদের উপসর্গ তেমন থাকছে না, তাঁরা বাড়িতে আরামে চিকিৎসা করালেই ভাল।’’ যাঁরা ডায়াবিটিস, উচ্চরক্তচাপ কিংবা থাইরয়ডের ওষুধ খান নিয়মিত, তাঁদের নিজেদের নিয়মের বাইরে বেরোলে চলবে না। করোনার চিকিৎসা চলাকালীনও সে সব ওষুধ খেয়ে যেতে হবে।

যত ক্ষণ না শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে, তত ক্ষণ চিকিৎসা বাড়ি থেকে করাই ভাল বলে মত চিকিৎসক সাত্যকি হালদারের। তবে তিনি বলেন, ‘‘নিজের ইচ্ছা মতো চিকিৎসা করা যাবে না। সংক্রমিত হয়েছেন টের পেলেই কোনও ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যেতে হবে নিয়মিত। অক্সিজেনের মাত্রা কতটা থাকছে, তার খেয়াল রাখতে হবে নিয়ম করে।’’ সংক্রমণের মাত্রা অল্প থেকে মাঝারি হলে সবচেয়ে জরুরি হল বিশ্রাম নেওয়া, মনে করেন সাত্যকিবাবু। আর তাঁর পরামর্শ, বাড়িতে এক জন সংক্রমিত হলেই সকলকে সাবধান হতে হবে। অসুস্থ ব্যক্তির সেবা যেমন করতে হবে দূরত্ব বজায় রেখে, তেমন আর কারও যাতে ক্ষতি না হয় দেখতে হবে। ফলে পরিবারের এক জন করোনা আক্রান্ত হলেই বাকিদেরও নিভৃতবাসে থাকতে হবে।

তবে চিকিৎসকদের মত, হঠাৎ শরীর বেশি খারাপ হলে কোথায় যেতে হবে, সে বিষয়ে আগে থেকে জেনে রাখা দরকার। হাতের কাছেই রাখা থাকুক কাছের কোনও হাসপাতালের নম্বর।

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus COVID 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy