শুক্রবার সন্ধ্যায় অন্য শিল্পীদের সঙ্গে মুনমুন সেনের উপস্থিতিতে‘সামার শো’-এর সূচনা হয়। — নিজস্ব চিত্র।
ল্যান্ডস্কেপ পেন্টিং তো দেখা যায়। কিন্তু কোথায় শুরু হল? কেনই বা শুরু হল? হঠাৎ যে প্রকৃতিকে দেখা যাচ্ছে, রং-তুলিতে তা নতুন ভাবে ফুটিয়ে তোলা হল কেন?
এমন প্রশ্ন কি মনে এসেছে কখনও? কত জনে কত ভাবে ল্যান্ডস্কেপ আঁকেন, তা কি জানা আছে? সে সব প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে যাওয়া যেতে পারে দক্ষিণ কলকাতার সিমা গ্যালারিতে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানে শুরু হল ‘সামার শো’। ল্যান্ডস্কেপই এ বারের থিম। জলরং, পেন্টিং থেকে আলোকচিত্র— সব থাকছে এক ছাদের তলায়।
শিল্পের নানা মাধ্যমে ল্যান্ডস্কেপ ফুটে উঠতে শুরু করে মূলত নবজাগরণের সময় থেকে। ষোড়শ শতকের আশপাশে। তবে তা পশ্চিমের কথা। এশিয়া মহাদেশে শিল্পের ল্যান্ডস্কেপের ভাবনা এসেছে অনেক আগেই। চিনে নাকি নবজাগরণের বহু বহু শতক আগে থেকেই ছিল প্রকৃতিকে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলার চল।
তবে সে সব তো ইতিহাস। এ সময়ের ল্যান্ডস্কেপের সঙ্গে কি কোনও মিল রয়েছে তার? ২০ শতকে গোড়ায় যে নতুন করে ল্যান্ডস্কেপ গুরুত্ব পেল শিল্পে, তা কেমন? ইউরোপীয় শিল্পের ধারার সঙ্গে কি মিল আছে এখানকার শিল্পীদের কাজের? গাছ, নদী, সমুদ্র, পাহাড়ের কোমল চিত্র কি ধরে রাখল সময়ের বিবর্তনের কথা? কী ভাবে ইতিহাসের নানা মোড়ে এসে বদলাতে থাকল ক্যানভাসে ফুটে ওঠা প্রকৃতির ছবি? সে সবের উত্তর দেবে ‘সামার শো’। এ বছর সেখানে রয়েছে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পেন্টিং থেকে বুকু সরকার, সোহম গুপ্ত, অর্ক দত্তের আলোকচিত্র। যোগেন চৌধুরী, লালুপ্রসাদ সাউ, পরেশ মাইতি, শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়, জয়া গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো সমকালীন বহু শিল্পীর হাতে আঁকা ল্যান্ডস্কেপ দেখা যাবে সেখানে। থাকছে ইনস্টলেশন, গ্রাফিক পেন্টিং। দেখা যাবে উনিশ শতকের রাজস্থানি মিনিয়েচারও।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘সামার শো’-এর সূচনা হয় বহু শিল্পীর উপস্থিতিতে। গ্যালারির অধিকর্তা রাখী সরকার বলেন, ‘‘অনেকে মনে করেন ল্যান্ডস্কেপ মানে সুন্দর ছবি। কিন্তু শুধু তা তো নয়, এর মধ্যে সময়টা ধরা থাকে। এক এক সময়ের ছবি এক এক রকম। দেশেও তাই, বিদেশের ছবিও তেমন।’’ চারপাশের পরিবেশ যে ভাবে বদলাচ্ছে, ছবিও তেমন নতুন ধরনের হচ্ছে। যেমন কেরলে আজকাল এ ধরনের কাজ অনেক হয়। এর কারণ মূলত সেখানকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র। তার উপর যত ঝড়, বন্যা, খরা আসবে, তত রূপ বদলাতে থাকবে। সেই সব ছবি যদি আঁকা হয়, তা তো সময়ের কথাই বলে, মনে করান অধিকর্তা।
প্রদর্শনীর সূচনা অনুষ্ঠানে শিল্পীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুনমুন সেন। তিনি বলেন, ‘‘সিমার প্রদর্শনী আলাদা মাত্রার হয়। সে কারণেই তো দু’মাস ধরে চলে। শিল্পপ্রেমীরা ভিড়ও করেন।’’
একই জায়গার নানা রূপ কি দেখেছে শিল্প? সময়ের সঙ্গে যে শিল্পের নতুন মাধ্যম এল, তা কি বদলে দিল প্রকৃতিকে দেখার ভঙ্গি? তরুণ শিল্পী যশস্বী দুগ্গর লন্ডনে লেখাপড়া করেছেন। সিমা-র প্রদর্শনী দেখে মুগ্ধ। বলেন, ‘‘সে কাল আর এ কালের ল্যান্ডস্কেপ একসঙ্গে দেখে সমৃদ্ধ হলাম।’’
এমন সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যাবে গ্যালারির প্রতিটি দেওয়ালে। ফ্রেমে ফ্রেমে ধরা থাকছে ইতিহাস। প্রদর্শনী চলবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত। রবিবার বাদ দিয়ে যে কোনও দিন পৌঁছে গেলেই হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy