ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে খুব জোর পা মচকে গিয়েছিল। পায়ের লিগামেন্টে বেশ চোটও পেয়েছিলেন। তখনকার মতো ওষুধপত্র খেয়ে, ঠান্ডা-গরম সেঁক দিয়ে কাজ হয়েছিল। কিন্তু চোট যে পুরোপুরি সারেনি তা বুঝলেন বেশ কয়েক বছর পর।
অফিসে একটানা চেয়ারে বসে থাকতে হয়, উঠে দাঁড়াতে গেলেই ব্যথা করে। দৌড়নো তো বিলাসিতা, দ্রুত হাঁটতেই পারেন না। কারও কারও আবার পা ফুলেও থাকতে দেখা যায়। ব্যথা নিরাময়ে চিকিৎসকেরা ওষুধের পাশাপাশি নানা ধরনের থেরাপির সাহায্য নিয়ে থাকেন। তবে যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, এই ধরনের সমস্যা বশে রাখতে দারুণ কাজ করে যোগাসন। পায়ের নমনীয়তা দ্রুত ফেরাতে নিয়মিত অভ্যাস করা যেতে পারে উত্থিত পার্শ্বকোণাসন।
সংস্কৃতে ‘উত্থিত’ শব্দের অর্থ ‘প্রসারিত’। ‘পার্শ্ব’ শব্দের অর্থ ‘পাশ’। ‘কোণ’ মানে ইংরেজিতে যাকে ‘অ্যাঙ্গেল’ বলা হয়। সবটা মিলিয়ে দেহের ভঙ্গি হবে অনেকটা কোণাসনের মতো। তবে তার মধ্যেও ট্যুইস্ট থাকবে। শিখে নিন পদ্ধতি।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে করবেন?
প্রথমে ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ান। পিঠ, কোমর টান টান রাখুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে।
দু’পায়ের মাঝে বেশ খানিকটা ব্যবধান রাখুন। এ বার ডান পায়ের পাতা ৯০ ডিগ্রি কোণ করে রাখুন। বাঁ পায়ের পাতা রাখতে হবে ৪৫ ডিগ্রি কোণে।
ধীরে ধীরে ডান হাঁটু ভাঁজ করুন। বাইরের দিকে, অর্থাৎ ৯০ ডিগ্রি কোণে হাঁটু ভাঁজ হবে।
যে পা ভাঁজ করলেন, সেই পায়ের উপর ধীরে ধীরে শরীরটা হেলিয়ে দিন। ডান হাতের তালু সমান্তরাল ভাবে রাখুন পায়ের পাতার সোজাসুজি। বাঁ হাতটি সোজা মাথার উপরে তুলে দিন।
চোখ থাকবে ঘরের ছাদের দিকে। সুতরাং মাথা কেমন অবস্থানে রাখবেন বোঝাই যাচ্ছে। এই অবস্থানে থাকুন ৩০ সেকেন্ড।
তার পর আবার প্রথম ভঙ্গিতে ফিরে আসুন। একই ভাবে অন্য পায়েও এই ভঙ্গিটি অভ্যাস করুন।
আরও পড়ুন:
কেন করবেন?
পায়ের পেশি মজবুত করতে সাহায্য করে এই আসনটি। দেহের ভারসাম্য ধরে রাখে। রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। দেহের নিম্নাঙ্গের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে নিয়মিত উত্থিত পার্শ্বকোণাসন অভ্যাস করলে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ‘হ্যাপি হরমোন’ ক্ষরণেও বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।
সতর্কতা:
কোমরে, মেরুদণ্ডে চোট থাকলে এই আসন অভ্যাস করতে যাবেন না। ফ্রোজ়েন শোল্ডার বা কার্পল ট্যানেলের মতো সমস্যা থাকলেও উত্থিত পার্শ্বকোণাসন করার প্রয়োজন নেই। যাঁদের আর্থ্রাইটিস রয়েছে, তাঁরাও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন। না হলে কোমর, হাঁটুর ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এই আসন অভ্যাস করা নিষিদ্ধ।