শীতে ত্বকে প্রদাহ হতে পারে গরম পোশাক থেকেও। ছবি: আইস্টক।
মেঘলা আকাশ আর এলোমেলো ঠান্ডা বাতাস শীতের আমেজ বাড়িয়ে দিয়েছে। উষ্ণতার ছোঁয়া পেতে রং-বেরঙের উলের সোয়েটার, ফ্যাশনেবল নকশার গরম পোশাক আমাদের সঙ্গী। শীতকালের বাতাস কিছুটা শুকনো থাকে বলে ত্বক শুকিয়ে গিয়ে নানা সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
বিশেষ করে যাঁদের অ্যালার্জি ও অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসের প্রবণতা আছে, তাঁদের সমস্যা বেড়ে যায়। এ ছাড়া সোরিয়াসিস-সহ কিছু ক্রনিক ত্বকের সমস্যাও বাড়ে।
আমাদের শরীরের সব থেকে বড় অঙ্গ ত্বক। প্রাথমিক সব ঝড়ঝাপটা সামলাতে হয় ত্বককে। শীতের সময় এক দিকে শুকনো আবহাওয়া অন্য দিকে উল ও নানা সিন্থেটিক ফাইবার দিয়ে তৈরি পোশাকের সংস্পর্শে ত্বকের অসুখবিসুখের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কেমন সে সব?
আরও পড়ুন: এই সব ফল খান প্রতি দিন, মেদ ঝরবে, কমবে ভুঁড়ি
কৃত্রিম তন্তু, উল-সহ নানা উপাদানের মিলমিশে তৈরি গরম কাপড়ের পোশাকে ও তাতে ব্যবহৃত নানা রঙের রাসায়নিকের সংস্পর্শে এবং পোশাকের ফিনিশিংয়ের গোলমালেও ত্বকের সমস্যা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। গরম পোশাকে অ্যাজো ডাই বা প্যারাফিনাইল ডাই অ্যামিন ব্যবহার করা হয়। এটি শিশুদের কোমল ত্বকে তো বটেই বড়দেরও ত্বকের জন্যেও ভাল নয়। এর সংস্পর্শে ত্বকে ইরিটেশন সৃষ্টি হতে পারে। বিভিন্ন কৃত্রিম রং ও পোশাকের কাপড়ে ব্যবহৃত নানা রাসায়ানিক— যেমন অ্যাফ্রাইলিক, ওরিয়ন, পলিভিনাইল রেজিন ইত্যাদি অনেকের ত্বকের জন্যে বেশ ক্ষতিকর। মোজা ও অন্তর্বাসে স্প্যান্ডেক্স নামে নামে একটি পলিইউরেথেন ফাইবার থাকে। এর থেকেও অনেকের ত্বকে র্যাশ হয়ে চুলকে সংক্রমণ হয়ে যেতে পারে। গরম পোশাকে থাকে ফরম্যালডিহাইড। এর থেকেও কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস হবার ঝুঁকি থাকে। ভেড়ার লোম থেকে তৈরি প্রাকৃতিক উলও কিন্তু অনেকের ত্বকে প্রদাহ ডেকে আনে। আসলে প্রাকৃতিক উলে থাকে ল্যানোলিন নামে এক প্রাকৃতিক তৈলাক্ত পদার্থ। যাদের এই তেলে অ্যালার্জি আছে তাদের উলের পোশাক পরলেই ত্বক চুলকে লাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁচি শুরু হতে পারে, চোখ দিয়ে জল পড়ে। কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস মূলত দু’ধরনের হয়। অ্যালার্জিক ডার্মাটাইটিস অর্থাৎ যাদের ত্বক সংবেদনশীল ও চট করে অ্যালার্জি হয়। আবার কিছু জনের ইরিট্যান্ট ডার্মাটাইটিস হয়। যে কোনও রাসায়ানিকের প্রভাবে এই সমস্যার ঝুঁকি থাকে।
কী কী উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন
গরমের পোশাক বা রংচঙে পোশাক পরার পর প্রথমে চুলকোতে শুরু করে। লাল লাল ফুসকুড়ি বা র্যাশ বেরয়। চুলকোতে গিয়ে নখের আঁচড়ে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। শুকনো ত্বকে সমস্যা বাড়ে। তাই শীতকালে স্নানের পর ও রাতে ঘুমোনর আগে আর একবার নারকেল তেল বা ভাল কোনও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ত্বক নরম রাখা দরকার।
আরও পড়ুন: শীতে রুক্ষ চুল ও খুশকির ভয়? এই সব উপায়ে দূরে রাখুন সমস্যা
ইচ্ছে মতো ওষুধে আরও বিপদ
ত্বকের অসুখ অনেক সময় বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায়। এর প্রধান কারণ নিজেদের ইচ্ছে মতো ওভার দ্য কাউন্টার স্টেরয়েড জাতীয় মলম কিনে লাগানো। তাই ত্বকের এই ধরণের সমস্যা হলে এটা-ওটা না লাগিয়ে প্রথমে বোঝার চেষ্টা করুন, কোন জিনিস থেকে ত্বকের প্রদাহ হচ্ছে। খেয়াল রাখুন, সরাসরি যেন সেই পোশাক ত্বকের সংস্পর্শে না আসে। নারকেল তেল ও ক্যলামিনল জাতীয় লোশন লাগিয়ে সুতির পোশাকের উপর গরম জামাকাপড় পরুন। এতেও সমস্যার সমাধান না হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখান। সোরয়াসিস বা এগজিমা জাতীয় ক্রনিক অসুখ শীতে বাড়ে। এর জন্যে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহার করুন। শীতের সময় ব্রণ ও খুশকির সমস্যা বাড়ে। তৈলাক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার কমিয়ে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ত্বক ভাল রাখুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy