পোষা বিড়ালের যত্ন নেবেন কী ভাবে? ছবি: ফ্রিপিক।
ছোট্ট ছটফটে বিড়ালছানা যখন পায়ে পায়ে ঘুরবে, তখন মনের সব উদ্বেগ কেটে যাবে আপনার। সারা দিনের ক্লান্তি, মনের চাপ, তিক্ততা— সব কিছুই লহমায় দূর করতে পারে আদরের পোষ্য। কুকুর বা বিড়াল যা-ই পুষুন না কেন, তার সঠিক যত্ন নেওয়াই দরকার। খুঁটিনাটি কী কী বিষয়ে নজর দিতে হবে জেনে রাখুন।
বিড়াল তো পুষলেন, ওকে সুস্থ রাখতে কী কী করবেন জানেন তো?
বিড়ালের স্নান
বিড়াল জল ভয় পায়, তা ভুল নয়। কিন্তু বাড়ির পোষা বিড়ালকে ছোট থেকে উষ্ণ গরম জলে স্নান করানোর অভ্যাস করুন। কলের জল পড়ার শব্দে বিড়াল ভয় পায় অনেক সময়ে। তাই স্নান করানোর আগে সব প্রস্তুতি সেরে নিন। অল্প অল্প করে উষ্ণ গরম জলে ওর গা স্পঞ্জ করিয়ে দিন। জল যেন বেশি গরম না হয়।
দাঁত মাজাতেই হবে
পোষা বিড়ালের দাঁত পরিষ্কার রাখা খুব জরুরি। নিয়ম করে বিড়ালকে ব্রাশ করাতে হবে। বিড়ালের জন্য ব্রাশ পাওয়া যায়। কী ধরনের কিনবেন, তা পশু চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
খাবার ও জলের পাত্র পরিষ্কার রাখুন
বিড়ালকে যে পাত্রে খাবার বা জল দিচ্ছেন, সেটি রোজ পরিষ্কার করতে হবে। পোষ্যের জলের পাত্র সব সময়ে ভর্তি রাখতে হবে। মলমূত্র ত্যাগের জন্য আলাদা জায়গা রাখতে হবে। সেটিও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
গরুর দুধ একদম নয়
অনেকেই পোষা বিড়ালকে গরুর দুধ খাওয়ান। নিজেদের খাওয়ার জন্য যে দুধ আসে, তার থেকেই ভাগ দেন পোষ্যকে। পশু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই দুধ বিড়ালের ঠিকমতো হজম হয় না। বহু বিড়ালেরই ল্যাকটোজে সমস্যা থাকে। তাই পোষ্য বিড়ালকে দুধ খাওয়ানোর আগে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কী কী খাওয়াবেন?
সিদ্ধ ডিম থেকে হলুদ অংশ বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশ থেঁতো করে গুঁড়িয়ে নিন। ভাতের সঙ্গে সেই ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিয়ে বিড়ালকে খেতে দিন। ডিমের প্রোটিন বিড়ালের পুষ্টির চাহিদা অনেকটা মেটাবে। মাছ বা মাংস দিলে সেদ্ধ করে দিতে হবে। তবে মনে রাখবেন, এতে নুন বা কোনও মশলা যেন না থাকে। সেদ্ধ ভুট্টাও দিতে পারেন বিড়ালকে। তরমুজ বিড়ালের শরীরের জলের চাহিদা কিছুটা মেটায়। তবে প্রচুর পরিমাণে তরমুজ বিড়ালের ক্ষতি করতে পারে। তাই তরমুজ খাওয়ানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সঙ্গ দিন পোষ্যকে
পোষা বিড়ালকে সময় দিন। ওর সঙ্গে খেলুন। অনেকেই ভাবেন, বিড়াল স্বাধীনচেতা, একা থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু পোষা বিড়াল তেমন নয়। বরং একা রাখলে বিড়াল ভয় পায়, উদ্বেগেও ভোগে। প্রতি দিন বিড়ালকে ছাদে বা বাইরে নিয়ে গেলে ওর মন ভাল থাকবে। খেলাধূলা করালে ব্যায়ামও হবে। স্থূলতার আশঙ্কাও কমবে। পশু চিকিৎসকেরা বলেন, বিড়াল পুষলে বাড়িতেও তেমন ব্যবস্থা রাখতে হবে। পোষ্যের শোয়ার জায়গা আলাদা করুন। বিড়ালছানা হলে বাথরুম, রান্নাঘরের জানলা বা ঘরের জানলা, যেখান দিয়ে বিড়াল গলতে পারে, সেখানে নেট বা তার লাগিয়ে দিন। বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। পোষ্যকে যেখানে রাখছেন, তার আশপাশে যেন খোলা তার বা বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম না থাকে।
আর যা যা মনে রাখবেন
বছরে এক বার টিকা দিতে হবে বিড়ালকে। তবে বিড়াল যদি গর্ভবতী হয় বা প্রসব করে, তা হলে টিকা দেওয়া যাবে না।
বাড়িতে ঘাস রাখতেই হবে। বিড়ালের বদহজম হলে এই ঘাস খেয়েই ওরা বমি করে।
ইঁদুর মারার বিষ বাড়ির যত্রতত্র ছড়িয়ে রাখবেন না।
বিড়ালকে বেশি পেঁয়াজ-রসুন, চিনি দেওয়া খাবার, রেড মিট বা চিংড়ি খাওয়ানো যাবে না। শর্করা জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব কম দেওয়াই ভাল।
বাড়িতে একা রেখে গেলে জল ও খাবার দিয়ে যেতে হবে।
বিড়ালের কোনও রোগ হচ্ছে কি না, তা জানতে তিন থেকে ছ’মাস অন্তর পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেবেন।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। বিড়ালের যত্ন নিতে কী কী করতে হবে, কেমন খাবার খাওয়াতে হবে, তা পশু চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy