পড়াশোনা হোক বা খেলাধূলা,যে কোনও বিষয়ে সন্তানকে তুখোড় করে তুলতে চাইলে সকালের সময়টুকুকে কাজে লাগাতেই হবে। শিশু ঘুম থেকে ওঠার পর স্কুলে যাওয়ার আগে অবধিই হল সেই সময়। অনেক বাবা-মাই বলেন, খুদেকে তৈরি করে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, তাঁদের অফিস— সব মিলিয়ে বিস্তর তাড়াহুড়ো থাকে সকালে। কিন্তু যদি সকালের সময়টাকে কয়েকটি কাজের নিরিখে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নেওয়া যায়, তা হলে লাভ হবে সন্তানেরই। সাধারণত পাঁচ বছর বয়সের মধ্যেই শিশুর মস্তিষ্কের প্রায় সার্বিক গঠন ও বিকাশ হয়। এই বয়স থেকেই অভিভাবকেরা কিছু নিয়ম মেনে চললে, শিশুর স্মৃতিশক্তি যেমন বাড়বে, তেমনই বুদ্ধিরও বিকাশ হবে।
শিশুকে যদি তাড়াতাড়ি ঘুমোনোর অভ্যাস করানো যায়, তা হলে ভোরে উঠতে কোনও সমস্যাই হবে না। ভোরে ঘুম ভাঙার পর থেকে স্কুলে যাওয়ার আগে অবধি যত টুকু সময় পাওয়া যাবে, তাতে প্রথম কাজ হবে শরীরচর্চা। বিভিন্ন রকম স্ট্রেচিং, জগিং অভ্যাস করাতে পারেন শিশুকে। প্রাণায়াম, যোগাসন করলেও খুব ভাল। সকালের রোদ গায়ে লাগাতে পারলে সবচেয়ে ভাল নয়।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয়ত, পড়ার অভ্যাস। স্কুলের পড়ার পাশাপাশি যে কোনও ছোটদের গল্পের বই, অথবা রোজের খবরের কাগজ, ছোটদের ম্যাগাজিন থেকে শিক্ষামূলক কিছু বিষয় পড়তে হবে। অন্তত ১৫ মিনিট সময় রাখুন পড়ার জন্য। এতে চারদিকে কী ঘটছে সে বিষয়েও শিশু ওয়াকিবহাল থাকবে।
খেলার ছলেই বুদ্ধির বিকাশ হবে দ্রুত। অন্তত ১০ মিনিট সময়ে যে কোনও ব্রেন-গেম খেলান। শিশুকে রপ্ত করাতে পারেন দাবার ছক। অন্য যে কোনও খেলার চেয়ে এই খেলা শিশুকে মানসিক ভাবেও দৃঢ় হতে সাহায্য করবে। ছোট ছোট অঙ্কের হিসেব মুখে মুখে করতে উৎসাহিত করুন। রপ্ত করান সেই কৌশল।ছোটবেলা থেকেই এই অভ্যাস আয়ত্তে আনতে পারলে মস্তিষ্ক অনেক সক্রিয় থাকবে।
চতুর্থত, লেখার অভ্যাস থাকা জরুরি। তার জন্যও ১০-১৫ মিনিট সময় দিন। যে কোনও বিষয়ে লিখতে বলুন। সে পড়ার বিষয় হতে পারে, চারদিকে কী কী ঘটছে সেই বিষয়ে অথবা শিশুর আগ্রহ আছে এমন কোনও বিষয়ে নিয়ে অন্তত এক পাতাও লেখার অভ্যাস করান। এতে শিশুর চিন্তাশক্তি প্রখর হবে।
শিশুর বুদ্ধির বিকাশে সহায়তা করতে পারে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ যেমন, নাচ, গান, আবৃত্তি ইত্যাদি। ছোটদের মনোযোগ বাড়াতেও নাচ বা গান শেখাতে পারেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের চর্চা করাও ভাল। তা না হলে, বাগান করা বা গাছের পরিচর্যা করতে শেখান। তার জন্যও ১০-১৫ মিনিট সময় রাখুন। তা হলে দেখবেন সকালে উঠে মোবাইল বা ট্যাব হাতে নেওয়ার সময় পাবে না শিশু, টিভিও দেখতে চাইবে না। ছোট ছোট এই পাঁচ অভ্যাস নিয়মিত মেনে চলতে পারলে শিশুর মন হালকা থাকবে, যাবতীয় অস্থিরতা দূর হবে এবং পড়াশোনাতেও মন বসবে।