সন্তান বড় হচ্ছে, কী ভাবে সঙ্গ দেবেন ওকে? ছবি: সংগৃহীত।
চাকরি-সংসার সামলে সন্তানের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর সময় হয় না বেশির ভাগ বাবা-মায়েরই। এখন প্রায় অধিকাংশ পরিবারেই মা-বাবা দু’জনে বাইরে কাজ করেন। ফলে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে সারা দিনে মা-বাবার দেখা হওয়ার সময় সীমিত। তাই দেখা যায়, মা বা বাবাকে কাছে না পেয়ে সন্তান অনেক সময়েই অভিমানী হয়ে যায়। কথা শুনতে চায় না। ফলে মা-বাবারও উদ্বেগ বাড়ে। মনোবিদেরা জানাচ্ছেন, হাজারটা কাজ সামলেও সন্তানকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করুন। সন্তানকে সঠিক পথে পরিচালনা করার জন্য সারা দিন তার সামনে বসে থাকার প্রয়োজন নেই। বরং নিজের মূল্যবোধ ও চিন্তাধারা একটু একটু করে তার মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে পারাই আসল।
কী করবেন?
১) সারা সপ্তাহের একটা রুটিন করে রাখুন। সন্তান কখন স্কুলে যাবে, কখন ফিরবে, কখন পড়তে বসবে, কখন খাবে, কত ঘণ্টা ঘুমোবে— তার একটা রুটিন করুন। বাচ্চার ঘরে এই রুটিন সেঁটে দিন। এই রুটিন আপনার সন্তান ঠিক ভাবে মেনে চললে মাঝেমধ্যে তাকে উপহার দিন। ছুটির দিনে ঘুরতে নিয়ে যান। এতে সন্তানও বুঝবে আপনি শত ব্যস্ততার মাঝেও তার সব দিকে খেয়াল রাখছেন।
২) সন্তান যদি অভিমান করে তাহলে টিফিন বক্সে, ব্যাগে, বাড়িতে তার ঘরে ছোট ছোট চিরকুট লিখে রাখুন। কখনও কখনও তার জন্য একটি বা দু’টি চিঠিও লিখে যান। তাতে লিখুন আপনি ওকে কতটা ভালবাসেন। এতে দূরে থাকলেও সন্তান আপনার ভালবাসার স্পর্শ পাবে। আপনাকে কাছে না পেলে, ওই চিঠি বা চিরকুটই তাকে সঙ্গ দেবে। এতে ওর চিন্তাশক্তি, ধৈর্যও বাড়বে।
৩) সারা দিনে ফোনে অন্তত দু’বার ওর সঙ্গে কথা বলুন। যত কম সময়ই হাতে থাকুক না কেন, তার মধ্য থেকেই কিছুটা সময় বার করে নিন। সেই সময়টুকু তাকে কোনও কারণে বকুনি বা নির্দেশ দিয়ে নষ্ট করবেন না। বরং শিশুর সঙ্গে তার মতো করে গল্প করুন। সারা দিনে তারও আপনাকে অনেক কিছু বলার থাকতে পারে, তা শোনার চেষ্টা করুন।
৪) মাসে অন্তত এক বার সন্তানের স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করুন। সন্তানের বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আলাপ করুন, তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলুন। তা হলে আপনিও বুঝবেন, সন্তান ঠিক কেমন পরিবেশে বেড়ে উঠছে।
৫) বাড়ি ফিরে যদি জানতে পারেন যে, সে অন্যায় কোনও কাজ করেছে, সঙ্গে সঙ্গে তাকে শাসন করতে বসবেন না। বরং পরে সময় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলুন। সে কেন অমন কাজ করেছে, তা জানার চেষ্টা করুন। তার কাজটা যে ভুল, সেটা বোঝানোর চেষ্টা করুন।
৬) যদি বোঝেন আপনার সন্তানের কোনও সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু সে খোলাখুলি কথা বলতে পারছে না, তবে আপনি নিজে শান্ত ভাবে এবং গুছিয়ে তার সঙ্গে কথা বলুন। বলতে হবে যে, আপনি বুঝতে পারছেন সে মানসিক চাপে রয়েছে। কোনও কিছু নিয়ে মন খারাপ হলে তা সে বলতে পারে। আপনি শোনার জন্য তৈরি বা আগ্রহী। সেই মুহূর্তেই যদি সে বলতে না চায়, ভয় পায়, তা হলে অতিসক্রিয়তা না দেখিয়ে বলুন আপনি পরেও শুনতে পারেন। পরিস্থিতি যা-ই হোক, এটা বোঝাতে হবে যে আপনি সব সময়ে পাশে আছেন। তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
৭) শিশুরা খুবই স্পর্শকাতর হয়। হয়তো আপনাকে কাছে পাচ্ছে না, এ দিকে স্কুলে কোনও সমস্যা হচ্ছে বা বন্ধুদের নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি হয়েছে এবং আপনাকে তা বলতে না পেরে ভিতরে ভিতরেই গুমরে রয়েছে। সেই সময়ে কোনও প্রশ্ন না তুলে সন্তানের কথাও শুনতে হবে। বুঝতে হবে এবং মানতে হবে যে সে কী ধরনের মানসিক যন্ত্রণায় রয়েছে। কোনও রকম উপদেশ না দিয়ে বরং কিছু দিন এই বিষয়ে কথা বলুন। বাড়াবাড়ি লক্ষ্য করলে মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy