সন্তানের বায়না সামলাবেন কী করে। ছবি: ফ্রিপিক।
বন্ধুর দেখাদেখি দামি পেনসিল বাক্স কেনার বায়না অনেক শিশুই করে। মোবাইল দেখে আর ভিডিয়ো গেম খেলতে খেলতে আজ এটা, তো কাল সেটা চাই বলে বায়নাও জুড়ে দেয়। প্রায় প্রত্যেক মা-বাবা এই দৃশ্যের সঙ্গে পরিচিত। বাড়ির খুদেটির ইচ্ছে পূরণে উৎসাহী হলেও তাদের বায়নাক্কায় অস্থির। বয়সের সঙ্গেই চাহিদা বাড়তে থাকে ও ধরন পাল্টায়। তাই সব বাবা-মাকেই সতর্ক নজর রাখতে হবে। সন্তানকে এই গোলকধাঁধা থেকে বার করে আনার দায়িত্ব কিন্তু মা-বাবারই। ছোট থেকে রাশ নিজের হাতে না রাখলে খুদের ছোট ছোট বয়নাই বয়ঃসন্ধিতে গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মা-বাবার যা যা করণীয়
ছোটরা বায়না করতেই পারে। কিন্তু মা-বাবার উচিত ধৈর্য ধরে বোঝানো। খুদের ভুল সংশোধন করার আগে বরং ভুলের কারণ জানা জরুরি। সন্তানের সমস্ত চাহিদা কখনওই পূরণ করবেন না। আপনার সাধ্যও ওকে বোঝানো দরকার। টাকাপয়সার গুরুত্ব ওকে বোঝানো দরকার। সন্তানকে শেখাতে হবে কী ভাবে সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
সন্তানের বন্ধুদেরও চিনতে হবে। সন্তান কাদের সঙ্গে মিশছে, তাদের পরিবার কেমন জানার চেষ্টা করুন। অনেক সময়ে বন্ধুদের প্রভাবে পড়েও শিশুদের মধ্যে নেতিবাচক ভাবনা তৈরি হয়। মা-বাবাকে শেখাতে হবে, সন্তান কোনটা গ্রহণ করবে আর কোনটা নয়। এই শিক্ষাই সবচেয়ে আগে দরকার। সন্তানকে বুঝতে হলে তার সঙ্গে বেশি করে সময় কাটান। সময়ের অভাব থাকলে ফোনে তার সঙ্গে কথা বলুন। তাই বলে বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে বারণ করবেন না। জীবনে বন্ধুর প্রয়োজনীয়তাও আছে। তবে নজর রাখুন। মা-বাবা দু’জনেই কর্মরত হলে অনেক সময়েই উপহার দিয়ে শিশুকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন। এতে তার মধ্যে চাহিদা বাড়তে থাকে। অন্যের দেখে জিনিস চাওয়ার প্রবণতাও তৈরি হয়। এই প্রবণতা থেকে সন্তানকে বার করে আনতে মা-বাবাকে বোঝাতে হবে সে কতটা চাইতে পারে। নিজের সাধ্য সম্পর্কে ওর মধ্যে বাস্তব ধারণা তৈরি করতে হবে। নিয়মানুবর্তিতা শেখাতে হবে সন্তানকে। তবে কড়া শাসনে নয়, বরং বন্ধুর মতো মিশে। ওকে আঁকা, নাচ, গান, সাঁতারে অংশ নিতে দিন। এতে সে তার মনের খোরাক পাবে। নতুন জিনিস শেখার জন্য উৎসাহী থাকবে, ফলে মনে নেতিবাচক চিন্তা তৈরি হবে না। বড় হয়ে পেশা নির্বাচনেও সুবিধে হবে।
ছোট বয়সে সন্তানকে ইচ্ছে মতো চালনা করা সহজ। কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার নিজস্ব মতামতও থাকে। সেখানেও সন্তানকে নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিন। সব ব্যাপারে শাসন করতে শুরু করলে সন্তান আরও বেশি জেদি ও একগুঁয়ে হয়ে উঠবে। আপনিই যে সন্তানের সবচেয়ে কাছের বন্ধু, এই ধারণা ওদের মধ্যে ছোট থেকেই বুনে দিতে হবে। তা হলে যে কোনও সমস্যায় পড়লে আপনার কাছেই আসবে। সন্তানের মনের আন্দাজ পাওয়াও সহজ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy