Advertisement
E-Paper

পোষ্যের ‘আধার কার্ড’ করিয়েছেন? বাড়ির সারমেয়টির পরিচয়পত্র কী ভাবে করাতে হয়, জানেন?

শহরে এখন এমন অনেক রেস্তরাঁ, হোটেল হয়েছে, যেখানে পোষ্যদের নিয়ে ঘুরতে, খেতে যাওয়া যায়। তবে নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র দেখাতে না পারলে কিন্তু সেখানে প্রবেশের অনুমতি মিলবে না।

Pet License

কুকুরদের পরিচয়পত্র কোন কাজে লাগে? —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৫১
Share
Save

বাড়িতে নতুন সদস্য এসেছে। জোরকদমে চলছে তার দেখাশোনা। তবে এই সদস্যটি চারপেয়ে, সারমেয়। যত্নআত্তির দিক থেকে সে মানবশিশুর চেয়ে কোনও অংশে কম যায় না। নাম তো আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। সে বাড়িতে পা রাখামাত্রই খাবার, পোশাক, ডায়াপার, খেলনা, শোয়ার জন্য আলাদা গদি— সবেরই ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর কয়েকটা দিন গেলেই আসবে ওষুধ-ইঞ্জেকশন পর্ব। কিন্তু পোষ্যটি যে আপনারই, সে প্রমাণ কই? মানবশিশু হলে না হয় হাসপাতাল থেকে জন্মের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যেত। যথাসময়ে শিশুদের আধার কার্ডও করানো ব্যবস্থা রয়েছে এ দেশে। কিন্তু পোষ্যদের কি তেমন কোনও পরিচয়পত্র থাকে?

১৯৮০ সালের কলকাতা পুরসভা আইনের ৫২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, শহরে যত সারমেয় রয়েছে তাদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য লিপিবদ্ধ করা আবশ্যিক। রাস্তাঘাটে অলিপিবদ্ধ, অর্থাৎ ‘আনরেজিস্টার্ড’ সারমেয়কে অবাঞ্ছিত ভাবে বিচরণ করতে দেখলে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নিজেদের অধীনে রেখে দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। সপ্তাহখানেকের মধ্যে কেউ যদি নির্দিষ্ট ওই সারমেয়টির অভিভাবকত্ব স্বীকার না করেন, সে ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভা তাকে ‘অনাথ’ বলে দাগিয়েও দিতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক, দত্তক নেওয়া সারমেয়র ক্ষেত্রেও কিন্তু একই নিয়ম প্রযোজ্য।

পোষ্য হারিয়ে গেলে নির্দিষ্ট এলাকার পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ জানানো প্রয়োজন। পরিচয়পত্র না থাকলে তা-ও সম্ভব নয়। তাকে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে গেলেও কিন্তু এই পরিচয়পত্র আবশ্যক। শহরে এখন এমন অনেক রেস্তরাঁ, হোটেল হয়েছে, যেখানে পোষ্যদের নিয়ে ঘুরতে, খেতে যাওয়া যায়। তবে নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র দেখাতে না পারলে কিন্তু সেখানে প্রবেশের অনুমতি মিলবে না। পোষ্যকে নিয়ে ট্রেন বা প্লেনে সফর করলেও ‘আইডেন্টিটি কার্ড’ প্রয়োজন। টিকিট কাটতে গেলেও সেটি দেখাতে হবে।

রেজিস্ট্রেশনের পাশাপাশি, প্রতিটি পোষ্যের জন্য নির্দিষ্ট ‘ইউনিক আইডেন্টিটি’ বা ‘পেট আধার’ করিয়ে রাখাও প্রয়োজন। রেজিস্ট্রেশনের শংসাপত্রে যে সমস্ত তথ্য দেওয়া হবে, সেই সবই ভরা থাকবে মাইক্রোচিপের মধ্যে। সারমেয়দের গলায় ‘কলার ব্যান্ড’-এর সঙ্গে ঝোলানো থাকবে ‘কিউআর’ কোডটি। সেটি স্ক্যান করলে যেন সেই পোষ্যের সমস্ত তথ্য সহজে পাওয়া যায়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। ‘পেট আধার’ নামে পরিচিত হলেও এর সঙ্গে ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’র কোনও সম্পর্ক নেই। বেশ কিছু বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তত্ত্বাবধানে গোটা দেশেই এই কাজ শুরু হয়েছে।

কলকাতার পোষ্যের জন্য পরিচয়পত্রের আবেদন করবেন কী ভাবে?

১) ফোন বা কম্পিউটারে গুগ্‌ল সার্চ থেকে প্রথমে কলকাতা পুরসভার নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট, অর্থাৎ www.kmcgov.in -এ যেতে হবে।

২) পাতাটির ডান দিকে ‘কুইক লিঙ্ক’ নামক একটি তালিকা থাকবে।

৩) সেখান থেকে ‘ডগ রেজিস্ট্রেশন’ অপশনে ক্লিক করতে হবে।

৪) আবেদনকারী নতুন হলে প্রথমে নাম, ফোন নম্বর দিয়ে নিজেকে রেজিস্টার করাতে হবে। তার পর নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে একটি ‘ওটিপি’ বা ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ আসবে।

৫) নাম রেজিস্টার করার ফর্মে সেই ‘ওটিপি’ দিয়ে ‘এন্টার’ করলে আরও একটি পাতা খুলে যাবে। সেখানে দিতে হবে আবেদনকারীর বিস্তারিত তথ্য।

৬) নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, এলাকা বা ওয়ার্ড নম্বর, নিজের যে কোনও একটি পরিচয়পত্রের নম্বর— এই সমস্ত তথ্য দিয়ে ক্লিক করলে পরের পাতাটি খুলে যাবে।

৭) সেখানে দিতে হবে পোষ্য সারমেয়টির বিস্তারিত তথ্য। নাম, বয়স, প্রজাতি, রং, চোখে দেখা যায় এমন জন্মচিহ্ন থাকলে তারও বিবরণ দিতে হবে সেখানে। সাম্প্রতিক কালে কোনও টিকা নেওয়া হয়ে থাকলে, তারও বিবরণ দিয়ে রাখতে হবে।

৮) প্রমাণস্বরূপ পোষ্যের অভিভাবকের পরিচয়পত্র এবং পোষ্যের টিকাকরণ সংক্রান্ত নথির স্বপ্রত্যয়িত নকল ‘আপলোড অ্যাটাচমেন্ট’ অপশনে ক্লিক করে আপলোড করতে হবে।

৯) এর পর সাবমিট করার পালা। কিন্তু, তার আগে যাবতীয় তথ্য খুঁটিয়ে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। কোনও তথ্য কিংবা নামের বানান ভুল হলে তা শুধরে নেওয়ার অবকাশ নেই।

১০) ভাল করে খুঁটিয়ে দেখে সাবমিট অপশনে ক্লিক করলেই ‘ডিমান্ড নোটিস’ তৈরি হয়ে যাবে। লাইসেন্স পেতে হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হয়।

১১) পেমেন্ট অপশনে ক্লিক করার আগে ‘ডিমান্ড নোটিস’ প্রিন্ট করিয়ে নিতে ভুলবেন না। ক্রেডিট, ডেবিট, ইউপিআই কিংবা নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। খরচ ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মতো।

১২) প্রথম বারের চেষ্টায় যদি টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়াটি সফল না হয়, তা হলে অবশ্যই দ্বিতীয় বার চেষ্টা করতে হবে। তবে একটু অপেক্ষা করার পর। না হলে অ্যাকাউন্ট থেকে দু’বার টাকা কেটে নেওয়া হতে পারে।

১৩) পেমেন্ট সফল হলে সঙ্গে সঙ্গে টাকা জমার দেওয়ার রসিদ এবং স্বীকৃতিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

১৪) নির্দিষ্ট দিনে কলকাতা পুরসভার নির্দিষ্ট বিভাগ থেকে রসিদ দেখিয়ে থেকে শংসাপত্র তুলে নিলেই কাজ শেষ। বাড়ির বাইরে যেখানেই যাবেন সঙ্গে করে পরিচয়পত্রটি নিয়ে যেতে হবে।

Pet Care Tips Pet Aadhaar

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}