মরসুম বদলের এই সময়টায় অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে। জ্বর-জ্বালা তো আছেই, বসন্ত, হাম, ভাইরাল ফিভারও হচ্ছে দেদার। শরীর যাতে খারাপ না হয়, সে জন্য মরসুম বদলের সময়ে তেঁতো রান্না হতো বাড়িতে। তেঁতোর ডাল, নিম-বেগুন ভাজা, করোলার ঝাল, সজনে ফুলের তরকারি, উচ্ছে-আলু-বেগুন দিয়ে চচ্চড়ি, নিম-ঝোল— এমন কতরকম রান্না হত বসন্তের শেষ বেলায়। তেঁতো, যা পেট ঠান্ডা রাখে আবার শরীরেও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান জুগিয়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এত ভাল গুণ সত্ত্বেও তেঁতোর স্বাদেই যত গণ্ডগোল। করোলা খেতে হবে শুনলেই অনেকের মুখের আকৃতি বদলে যায়। তবে চাইলে করোলাও সুস্বাদু হতে পারে। করোলার দোলমা তেমনই এক খাবার।
কী ভাবে বানাবেন?
করোলার দোলমা প্রাচীন বাংলার রান্না। বহু বছর আগে বাঙালি রান্নাঘরে করোলার দোলমা বানানো হত করোলার ভিতরে পাঁঠার মাংসের পুর ভরে। কিন্তু পাঁঠার মাংসের পুর বানানো কিছুটা ঝক্কির। মাংস সেদ্ধ করা, হাড় থেকে মাংস বাছা। তার পরে তাকে মশলা দিয়ে কষে পুর বানানো। তার পরে মূল রান্না। ব্যস্ত সময়ে এত কিছু করার ফাঁক পাওয়া মুশকিল। বদলে করোলার দোলমা বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে চিংড়ি মাছের পুর দিয়ে।

ছবি: ফ্রিপিক।
উপকরণ:
৬টি একটু বড় মাপের করোলা
২০০ গ্রাম চিংড়ি মাছ
১ কাপ নারকেল কোরানো সামান্য জল দিয়ে বেটে নেওয়া
৩-৪টি কাঁচালঙ্কা কুচি
৩ টেবিল চামচ সর্ষের তেল
১ টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো
১ চা-চামচ কালো জিরে
২টি শুকনো লঙ্কা
২টি তেজপাতা
১ চা-চামচ জিরে
২টি ছোট এলাচ
৩টি লবঙ্গ
১ গাঁট মাপের দারচিনি
১ টেবিল চামচ আদা-রসুন বাটা
১টি বড় টম্যাটো কুচি
১ চা চামচ ধনে গুঁড়ো
১ চা-চামচ জিরে গুঁড়ো
২ টেবিল চামচ দই নুন দিয়ে ফেটিয়ে নেওয়া
১ চা-চামচ ঘি
১/২ চা-চামচ গরম মশলার গুঁড়ো

ছবি: ফ্রিপিক।
প্রণালী:
করোলার এক পাশ চিরে চামচের পিছন দিক দিয়ে তার ভিতর থেকে দানা এবং শাঁস বার করে নিন। কড়াইয়ে গরম জল ফুটিয়ে তার মধ্যে সামান্য নুন দিয়ে করেলা ভাপিয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে রেখে দিন।
কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে সামান্য নুন আর আধ চা চামচ হলুদ দিয়ে চিংড়ি মাছ ভেজে তুলুন। তার পরে ভাজা মাছ গুলো মিক্সিতে বেটে নিন।
আবার কড়াইয়ে তেল দিন। কালো জিরে আর শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে তাতে দিয়ে দিন বাটা চিংড়ি, আধ চা-চামচ হলুদ, ১ চা-চামচ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, বেটে রাখা নারকেল, কাঁচালঙ্কা কুচি, স্বাদমতো নুন, সামান্য চিনি। ভাল করে কষিয়ে তেল ছেড়ে আসলে পুর তৈরি। ভাপানো করোলার মধ্যে ওই পুর ভরে কড়াইয়ে সামান্য তেল দিয়ে ভাল করে চার পাশ ভেজে নিন।

ছবি: ফ্রিপিক।
শুকনো করেলার দোলমা খেলে এ ভাবেই খাওয়া যেতে পারে। তা না হলে গ্রেভি বানান। কড়াইয়ে তেল, গেটা গরম মশলা ফোড়ন, আদা-রসুন বাটা, টম্যাটো কুচি, গরম মশলা ছাড়া বাকি গুঁড়ো মশলা দিয়ে ভাল করে কষান। মশলার তেল ছেড়ে এলে তাতে দিন ফেটানো টক দই, তার পরে পরিমাণ মতো জল দিয়ে ফুটিয়ে তার মধ্যে পুর ভরা করোলা দিয়ে কিছু ক্ষণ চাপা দিয়ে আঁচ বন্ধ করুন। উপরে ঘি এবং গরম মশলা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:
-
বসন্তের নানা রোগ তাড়াতে পারে সজনে ফুল, তাই দিয়ে বাটিচচ্চড়ি রাঁধতে জানেন কি?
-
বাজারে পাওয়া যাচ্ছে কচি সজনে ডাঁটা, স্বাস্থ্যকর সব্জি দিয়ে বানিয়ে ফেলুন ঘরোয়া সুস্বাদু বাটিচচ্চড়ি
-
শুধুই ক্যাপসিকাম দিয়ে বানানো যেতে পারে ভাত বা রুটির সঙ্গে খাওয়ার তরকারি! শিখে নিন
-
পুরনো দিল্লির মটন স্ট্যু খেতে আর মোগলাই রেস্তরাঁয় ছুটতে হবে না! বাড়িতেই বানিয়ে নিন