এমন বেশ কয়েকটি রোগ রয়েছে, যা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ অবহিত নন। তবে সেগুলি মারাত্মক হতে পারে। এমনই একটি রোগ রামসে হান্ট সিন্ড্রোম। এটি একটি ভাইরাসজনিত স্নায়ুর রোগ। ঠিক সময়ে ধরা না পড়লে এটি গুরুতর হতেও পারে।
রামসে হান্ট সিন্ড্রোম কী?
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়ন্ত রায় বললেন, ‘‘চিকেন পক্সের নেপথ্যে যে ভ্যারিসেলা ভাইরাসটি থাকে, সেই গোত্রের একটি ভাইরাস হল হারপিস জস্টার। রামসে হান্ট সিন্ড্রোম রোগটি হয় এই ভাইরাসের কারণে।’’ সহজ করে বললে, ছোটবেলায় যাদের চিকেন পক্স হয়, তাদের শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থেকেই যায় ভ্যারিসেলা ভাইরাসটি। বয়সকালে ওই একই ভাইরাস থেকে হয় হারপিস রোগ। তবে সাধারণত চামড়ার রোগ হল হারপিস। ছোট ছোট ফুসকুড়ির মতো হারপিস মুখ বা শরীরের যে কোনও অঙ্গের চামড়ায় হতে পারে। কানের ভিতরের একটি সংবেদনশীল নার্ভে যখন হারপিস হয়, তখন তাকে বলা হয় রামসে হান্ট সিন্ড্রোম।
কানের কোন নার্ভেহয় এই রোগ?
কানের ভিতরে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ নার্ভের অবস্থান। একটি শোনার জন্য, অন্যটির সঙ্গে মুখের পেশির যোগ রয়েছে। কানের লতির পিছন দিক দিয়ে ওই নার্ভ বেরিয়ে মুখের পেশির সঙ্গে যুক্ত হয়। রামসে হান্ট সিন্ড্রোম হলে কান ও মুখের নার্ভ দু’টিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
উপসর্গ
ডা.রায় বললেন, ‘‘প্রথমে কানে ব্যথা হয়। কানে শুনতে সমস্যা হয়। কানের চামড়ায় (বাইরে থেকে দৃশ্যমান) হারপিস বা জলফোসকার মতো হয়। এর সঙ্গে মুখের পেশির যোগ থাকায় মুখটাও বেঁকে যায়, যা এক ধরনের ফেশিয়াল প্যারালিসিস।’’
তবে এই ধরনের প্যারালিসিসে রোগীর মুখের বেঁকে যাওয়া অংশে সাড় থাকে। পেশিগুলি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় কুলকুচি করতে সমস্যা হতে পারে। চোখের পাতা বন্ধ করতে সমস্যা হয়। অর্থাৎ মুখের পেশি দ্বারা যে কাজগুলি সাধারণত হয়ে থাকে, সেগুলিকে প্রভাবিত করে রামসে হান্ট সিন্ড্রোম। শ্রবণশক্তিও ক্রমশ কমতে পারে।
চিকিৎসা
ডা.রায়ের মতে, ‘‘যত তাড়াতাড়ি ডায়াগনোসিস করা যায়, ততই ভাল। হারপিসের ভাল ওষুধ রয়েছে, যা থেকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগের প্রতিকার সম্ভব।’’ এ ছাড়া মুখের পেশির দুর্বলতার জন্য ফিজ়িয়োথেরাপির প্রয়োজন পড়ে। রোগের গুরুত্বের নিরিখে কারও সারতে বেশি সময় লাগতে পারে, কারও বা খানিক কম। তবে সেরে যায়।
একবার সারলে কি আবার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?
ডা.রায়ের মতে, ‘‘হতে পারে। তবে সম্ভাবনা কম। ফেশিয়াল প্যারালিসিসের যে কেসগুলি আমরা দেখি, তার মধ্যে রামসে হান্ট সিন্ড্রোমের সংখ্যা হাতে গোনা।’’
হারপিস রোগ সাধারণত বয়স্কদের বেশি হয়। তবে রামসে হান্ট সিন্ড্রোম যে কোনও বয়সের মানুষের হতে পারে। হারপিস ভাইরাস একবার শরীরে প্রবেশ করলে তা থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যখন ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তখন হয়তো এই ভাইরাস ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং রামসে হান্ট সিন্ড্রোম হতে পারে।
তাই উপসর্গগুলি দেখলে সময়মতো রোগের চিকিৎসা করানোই সমীচীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy