‘লোকে কী বলবে’ অনুষ্ঠানে এই পর্বের বিষয় ‘সমানে নারী, সম্মানে নারী’। ছবি- সংগৃহীত
দেশের রাষ্ট্রপতি এক জন নারী। আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদেও মহিলার নাম। কিন্তু একবিংশ শতকে দাঁড়িয়েও কি সমাজের সর্ব ক্ষেত্রে মেয়েদের স্থান ততটাই স্পষ্ট? প্রশ্ন অনেক। সম্মান বা সমানাধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নারী কি আদৌ সফল? যে সম্মান তাঁর সহজে পাওয়ার কথা, তা আদায় করার জন্য তাঁদের এত লড়াই করতে হবে কেন? ‘লোকে কী বলবে! সঙ্গে অনুত্তমা’-র নারী দিবস উপলক্ষে দ্বিতীয় পর্বে মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লেখিকা সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়।বিষয় ‘সমানে নারী, সম্মানে নারী’।
প্রথম পর্বে আলোচনা হয়েছিল নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিয়ে। দ্বিতীয় পর্বে সেই একই বিষয় নিয়ে কথা হল কিন্তু আরও বিস্তারিত ভাবে। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা, সেখানেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেয়েদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যে পদে আগে পুরুষদের আধিপত্য ছিল, সেখানে এখন মেয়েরা রাজ করলেও পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সব ক্ষেত্রে পুরুষদের জন্য যে সমাদর থাকে, ওই একই ভূমিকায় মেয়েদের সমান গুরুত্ব থাকে কি? সম্পাদক সম্রাজ্ঞীর কথায়, “বছর দেড়েক আমি কৃত্তিবাসের হয়ে কাজ করেছি। ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে কোনও বৈষম্যের মুখোমুখি হতে হয়নি। কিন্তু ব্যতিক্রম তো থাকেই। তেমনই একটি দিনের কথা এখানে না বললেই নয়। প্রুফ চেক করতে আমার এবং আমার এক পুরুষ সহকর্মীর শিয়ালদহতে একটি প্রেসে যাওয়ার কথা। আমি আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছি কিন্তু অন্য জন তখনও এসে পৌঁছতে পারেননি। যত ক্ষণ না তিনি এলেন, তত ক্ষণ পর্যন্ত আমার হাতে কিন্তু পাতা দেওয়া হয়নি। আমাকে কিন্তু সেখানে কেউ অসম্মান করতে চাননি। কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম যে আমার আগে কৃত্তিবাসের হয়ে কেউ প্রেসে যাননি। কৃত্তিবাসের ইতিহাস কিন্তু সে কথা বলে না। সেই সময়ে স্বাতীদি কৃত্তিবাসের সম্পাদক এবং কবিতা সিংহ, বিজয়া মুখোপাধ্যায়ের তো আছেনই। অথচ তা সত্ত্বেও মানুষের মনে কিন্তু ‘কৃত্তিবাস’ বলতেই শক্তি-সুনীল-শরতের মুখই ভেসে ওঠে।”
মনোবিদের প্রশ্ন, বদল অবশ্যই আসছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে কি এমন মনে হয় না যে, মেয়েদের পদটি সাম্মানিক। এই ভাবনাও কি থেকে যাচ্ছে না? সম্রাজ্ঞীর উত্তর, “আসলে এমন ভাবনা তৈরি না হওয়া কিন্তু খুব অস্বাভাবিক নয়। ধরা যাক রাজনীতির ক্ষেত্রে, হয়তো কোনও মহিলাকে প্রতিনিধি হিসাবে দাঁড় করানো হচ্ছে। কিন্তু তাঁর হয়ে সব কাজ করে দিচ্ছেন ওই মহিলার পরিচিত কোনও পুরুষ। এই প্রথা তো বহু যুগ ধরেই চলে আসছে। হয়তো সব পেশায় এমনটা হচ্ছে না। কিন্তু সাধারণ মানুষের ধারণা এমন ভাবেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলতে আমার জীবনে বাবা এবং স্বামী, যে দু’জন পুরুষ আছেন, নিজের পথ চলার জন্য আমি তাঁদের থেকে কোনও সুবিধা নিইনি। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে থাকার জন্য অসুবিধাগুলি নিতে হয়েছে। কষ্ট হয়েছে, কিন্তু মেনে নিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy