Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Anuttama Banerjee

স্পষ্ট কথা বলার অভ্যাসে শ্বশুরবাড়িতে সকলের অপ্রিয় হচ্ছেন, লোকে কী বলবে? জানালেন মনোবিদ

সংসারে শান্তি বজায় রাখতে গেলে, বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গেলে স্থান-কাল-পাত্র বুঝে খানিক 'অস্পষ্ট' থাকতে হয় বইকি। কিন্তু স্পষ্টবাদীদের ক্ষেত্রে তো সে নিয়ম খাটে না!

Psychologist Anuttama Banerjee discussed about the pros and cons of being outspoken.

মুখের উপর স্পষ্ট কথা বলে দিতে পারি! ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৩৯
Share: Save:

স্পষ্টকথায় কষ্ট কম। ছোট থেকে এ কথা শুনে এসেছেন। পাশের বাড়ির কাকুর সঙ্গে বাবার ঝগড়া দেখে ছোটবেলায় চুপ করে থাকতে পারেনি। ওই বয়সে বাবার হয়ে সওয়াল করেছিলেন বলে বাহবাও জুটেছিল প্রচুর। কিন্তু বড় হয়ে বুঝেছেন, জীবনের সব ক্ষেত্রে এই নিয়ম খাটে না। সংসারে শান্তি বজায় রাখতে গেলে, বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গেলে স্থান-কাল-পাত্র বুঝে খানিক 'অস্পষ্ট' থাকতে হয় বইকি। স্পষ্টকথা বলা সহজ হলেও, তেমন কথা হজম করা কিন্তু ততটা সহজ নয়। উল্টো দিকের মানুষটির সেই কথা শুনতে যে কী কষ্ট হয়, তা হয়তো অনেকেই বোঝেন না। আবার অনেকে হয়তো বলে ফেলার পর অনুতাপ করেন। কিন্তু ঠিক সময়ে নিজেকে আটকাতে পারেন না। ছোটবেলার সেই অভ্যাস বড় হওয়ার পর বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বিড়ম্বনায় ফেলে। ‘ঠোঁটকাটা’ বলে হয়তো অনেকে সমঝেও চলেন। কিন্তু স্পষ্টবাদী হওয়ার বিপদ এড়িয়ে যেতে পারেন না। সেই সমস্ত বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্যই আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউব চ্যানেলে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘লোকে কী বলবে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ সপ্তাহের বিষয় ‘স্পষ্টবাদী’।

প্রতি পর্বের মতো এ সপ্তাহেও অসংখ্য চিঠি এসেছে মনোবিদের দফতরে। নাম প্রকাশে অস্পষ্টতা থাকলেও নিজেদের অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন তাঁরা। বেশির ভাগেরই বক্তব্য, স্পষ্ট কথা মুখ ফুটে বলতে তো ট্যাক্স লাগে না। তাই অভ্যাসবশত বলে ফেলছেন। কিন্তু তার পর? যে সমস্ত সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে, তা সামাল দিতে পারছেন না। বুঝতে পারেন, সমস্যার মুখে পড়তে চলেছেন। কিন্তু ক্ষোভের সাইক্লোন প্রতিহত করার ক্ষমতা অনেকের হাতেই থাকে না। ফলত, সকলের কাছেই অপ্রিয় হয়ে ওঠেন। পরিবারের সকলেই ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকেন। অনেকের ক্ষেত্রেই আবার বাড়িতে, পড়াশোনা করতে গিয়ে কিংবা কর্মক্ষেত্রেও তেমন অসুবিধা হয়নি। তবে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে সকলের অপ্রিয় হয়ে উঠছেন এমন অভ্যাসে। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়? অন্যায় দেখেও কি মুখ বুজে থাকতে হবে? উত্তর দিলেন অনুত্তমা, “প্রতিটি চিঠিতেই একটি দ্বন্দ্ব পরিষ্কার। স্পষ্টকথা না বলে থাকতেও পারছেন না। আবার স্পষ্টকথা বলার যে অভিঘাত, তা সামলাতেও পারছেন না। অনেকেই নিজের কাছে নিজে খুব স্পষ্ট। যে বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখছেন সেই বিষয়টি ভুল নয়, তাঁরা জানেন। তা হলে দ্বন্দ্ব কী নিয়ে? স্পষ্টকথা বলার অভিঘাত নিয়ে, নাকি কী ভাবে বলছেন, তা নিয়ে? এ ক্ষেত্রে বলার ধরনে একটু পরিবর্তন আনতে পারলে, বোধ হয় একটু হলেও সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া যায়। কোনও বিষয়ে সহমত না হলে শুধু মাত্র সেই বিষয় নিয়ে নিজের বক্তব্য জানান। কিন্তু কোনও ব্যক্তিমানুষকে আঘাত না করে। তা হলে হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা বলেও অন্য রকম হতে পারে। রাগ, অভিমান, ক্ষোভের কথা না বলে নিজের অসুবিধে বা অস্বস্তির কথাটুকু বন্ধু-আত্মীয় কিংবা সঙ্গীর কাছে স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরলে অযথা অনেক জটিলতা এড়িয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু বলার ধরনে যেন কোনও রকম ভনিতা বা অস্বচ্ছতা না থাকে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE