প্রতীকী ছবি।
বাইরের আমিষ খাবার বিছানায় বসে খাওয়া যাবে না। খেলেই দক্ষযক্ষ বেধে যাবে। তাই অফিস থেকে ফিরে আয়েস করে বিছানায় বসে পছন্দের খাবার খাওয়ার শখ কোনও দিন পূরণ হয় না নীলের। শতাব্দী শেষ কবে বাড়িতে চা বানিয়েছেন মনে করতে পারেন না। তাঁদের বাড়ির নিয়ম, সন্ধেয় পোশাক বদলে রান্নাঘরে ঢোকা। ঘন ঘন পোশাক বদলানোর ঝক্কি আর নিতে চাননি তিনি। এই ঘটনাগুলির সঙ্গে কমবেশি পরিচিত অনেকেই। যিনি এই নিয়মগুলি মানতে বাধ্য করছেন, তাঁর এই বাতিকের কারণে বিরক্ত হয়ে পড়ছেন বাকিরা। কিন্তু এই বাতিকের উৎস কী? কেন সব সময় মনের মধ্যে নিয়ম মানার খেলা চলে? এমন আচরণ কি আদৌ ইচ্ছাকৃত, না কি মনের গহীনে অন্য কোনও অন্ধকার বাসা বেঁধে রয়েছে? এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহের মতো এ পর্বেও ‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের বিষয় ছিল ‘অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজ়অর্ডার’। এই পর্বেও অনুত্তমার সঙ্গী ছিলেন মনোবিদ শ্রীময়ী তরফদার।
এমন সমস্যার নেপথ্যে শারীরবৃত্তীয় কোনও কারণ থেকে যাচ্ছে কি? কিংবা ‘ওসিডি’-র সমস্যা কমাতে কেন দরকার পড়ছে ওষুধের? অনুষ্ঠানের শুরুতেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অভিরুচি চট্টোপাধ্যায়ের কাছে প্রশ্ন রাখলেন মনোবিদ। অভিরুচি বলেন, ‘‘মস্তিষ্কের কোন কোষগুলি ‘অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজ়অর্ডার’ বা ওসিডির জন্য দায়ী, সেটা খুঁজে বার করতে বিজ্ঞানীরা কিছুটা হলেও সফল। আগে মনে করা হত, ওসিডি দুঃশ্চিন্তার অসুখ। কিন্তু বার বার একই চিন্তা কিংবা একই কাজ করার সঙ্গে দুঃশ্চিন্তার কোনও সম্পর্ক নেই। মাথার বিভিন্ন কোষ অনেক সময় ভারসাম্য হারালে এমন হতে পারে। সাইকোথেরাপির মাধ্যমে সুস্থ হওয়া সম্ভব। আবার সেরে ওঠার জন্য বিভিন্ন ওষুধও রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চললে ওসিডি কমে যায়।’’
ওসিডির সমস্যায় নানা রকমের চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। একই চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকেন আক্রান্ত ব্যক্তি। অনেকেই আবার এই কারণে অপরাধবোধে ভোগেন। কেউ এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেই চিকিৎসা করানো শুরু করছেন। কিন্তু একইসঙ্গে তিনি এটাও মনে করছেন, চিকিৎসা করিয়ে মিলবে না মুক্তি। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে এগোনো সম্ভব? মনোবিদ দ্বিতীয় প্রশ্ন রাখলেন শ্রীময়ীর কাছে। শ্রীময়ী বলেন, ‘‘চিকিৎসা শুরু হয়েছে মানে তো অনেকটা দূর এগিয়েছেন। এখানে বাড়ির লোকেরও একটা ভূমিকা রয়েছে। পরিজন যদি বার বার করে বলেন যে, এটা তো মনেরই চিন্তা। একই জিনিস বারংবার না ভাবলেই হয়। এটা বললে হয়তো প্রাথমিক একটু জোর পেতে পারেন। তবে চিন্তা তো আটকানো যায় না! মূল্যবোধ অনুসারে চিন্তার অভিমুখও বদলে যায়। তাই চিন্তা থেকে দূরে সরে থাকার একটা চেষ্টা করে যেতেই হবে। সেই সঙ্গে চিকিৎসা তো রয়েছেই। সুস্থ হয়ে ওঠার পথ তাতে সহজ হবে আরও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy