ছোটদের বড় হওয়ার সঙ্গে উচ্চতার একটা নিবিড় যোগ। দু’মাস আগে কেনা একটা জামা দেখলেন ঝুলে খাটো হয়ে গিয়েছে। কিংবা কিছু দিন আগে যে জায়গার সে নাগাল পেত না, সেখানে দিব্যি হাত পাচ্ছে। শিশুর উচ্চতা বলে দেয় তার শরীর সুস্থ আছে কি না।
অনেক মায়ের অভিযোগ, তার সন্তান বড় রোগা, কিছুই খায় না। অথচ সে কিন্তু তরতরিয়ে বেড়ে উঠছে। এ সব ক্ষেত্রে শিশু চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের পরামর্শ, ‘‘ওজন আর উচ্চতার ভারসাম্য প্রয়োজন। শিশুর উচ্চতার বৃদ্ধি স্বাভাবিক হলে ঠিক আছে। গ্রোথ চার্ট মেনটেন করা জরুরি। বয়সভেদে নির্দিষ্ট ওজন ও উচ্চতা হয়। শিশু সেই মাপকাঠির আওতায় আছে কি না, তা বাবা-মা ও ডাক্তার দু’জনকেই দেখতে হবে।’’
গ্রোথ চার্টের উনিশ-বিশ হতেই পারে। জোর দিতে হবে শিশুর সার্বিক বৃদ্ধির দিকে। এর জন্য এক্সারসাইজ় এবং সুষম ডায়েট প্রয়োজন। আর একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, শিশুর শারীরিক গঠন কিন্তু অনেকটাই জেনেটিক। তাই জোর করে খাইয়ে বা প্রচুর ব্যায়াম করিয়ে সব সময়ে কাঙ্ক্ষিত ফল না-ও মিলতে পারে।
গ্রোথের জন্য সহায়ক ব্যায়াম
ছ’-সাত বছরের আগে শিশুদের ব্যায়াম করানো মুশকিল। একদম ছোটরা নির্দেশ মেনে ঠিক মতো ভঙ্গিতে ব্যায়াম করতে পারবে না। তাই তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের খেলার মাধ্যমে শারীরিক ভাবে সক্রিয় রাখুন। আপনি যখন ব্যায়াম করছেন ওকে শামিল করে নিন। ও নিজের মতো যা পারে করুক। ছোটাছুটি করে খেলাটাই ওই বয়সে যথেষ্ট। শিশু নাচতে ভালবাসলে, ওকে উৎসাহ দিন। আসল কথা, বাচ্চাকে ফিজ়িক্যালি অ্যাক্টিভ রাখা।
৬ থেকে ১২... এই বয়সটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক মতো ব্যায়াম এই সময়ে শিশুকে বাড়তে সাহায্য করবে। টিনএজারদের শারীরচর্চা আবশ্যিক। ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সৌমেন দাস বাড়ন্ত বয়সের বাচ্চাদের জন্য বেশ কিছু স্ট্রেচিংয়ের পরামর্শ দিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়ন্ত বয়সের বাচ্চাদের জন্য স্ট্রেচিং মাস্ট। এতে সে লম্বাও হবে, ফ্লেক্সিবিলিটিও বাড়বে।’’
*দেওয়ালের দিকে পিঠ রেখে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে কানের পাশ দিয়ে হাত লম্বা করে উপরে তুলে দিতে হবে। এ বার পায়ের আঙুলের উপরে ভর দিয়ে শরীরটা যতটা সম্ভব উপর দিকে টানার চেষ্টা করতে হবে। এক সেটে তিন বার করে তিন সেট। শিশুর হাত কতটা দূর পৌঁছচ্ছে, সেটা পেনসিল দিয়ে দাগ দিয়ে রাখতে পারেন। একমাস পরে দেখবেন, দাগের চেয়ে কতটা উঁচুতে হাত যাচ্ছে।
*মাটিতে পা দুটো ছড়িয়ে বসে, হাত দিয়ে পায়ের আঙুল ধরার চেষ্টা করতে হবে। মাথা নিচু থাকবে।
*বাটারফ্লাই ফিটও ভাল স্ট্রেচিং। মেঝেতে বসে দুটো পায়ের পাতা সামনাসামনি জুড়ে রাখতে বলুন। এ বার হাঁটু অল্প ওঠা-নামা করতে হবে।
*ক্রস লেগ এক্সারসাইজ় এবং ফরওয়ার্ড-ব্যাক বেন্ডিংও ছোটদের জন্য ভাল এবং জরুরি।
*দেওয়াল ধরে দাঁড়িয়ে পায়ের পাতার সামনের অংশের উপর ভর দিয়ে উঁচু হতে হবে। এই অবস্থায় ১০ গুনে আবার পা নামিয়ে নিতে হবে। এটা ১০বার করলেই চলবে, কাফ মাসলের জন্য খুব ভাল ব্যায়াম।
*স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ়ের পাশাপাশি জগিং, স্কিপিং, সাইক্লিং করলে ভাল। সুইমিং, ক্যারাটে, ব্যাডমিন্টন বা অন্য যে কোনও খেলার সঙ্গে শিশুকে যুক্ত করতে পারেন।
করোনার জন্য বাড়িতে বসে থেকে শিশুদের স্বাভাবিক জীবন যেমন নষ্ট হয়েছে তেমনই বৃদ্ধি। তাই বাড়ির মধ্যেই যতটা পারা যায় ওদের ফিজ়িক্যালি অ্যাক্টিভ রাখতে হবে। আপনি এক্সারসাইজ় করলে ওরাও উৎসাহ পাবে। শারীরচর্চার পাশাপাশি সুষম পুষ্টিও প্রয়োজন। প্রোটিন-কার্বোহাইড্রেট-ভিটামিন সব কিছুই যেন থাকে শিশুর রোজকার ডায়েটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy