রসনার সঙ্গে শরীরটি যাতে সঙ্গত দেয়, সে খেয়াল রাখাটা বর্তমান জীবনযাত্রায় বড়ই জরুরি। কিন্তু সেটাই সবক্ষেত্রে হয় না। অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার অভ্যাস, বিশেষ করে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস কেবল ওজন বাড়ায় তাই নয়, বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকিও বাড়ায়। এমনটাই দাবি করেছেন ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর বিজ্ঞানীরা।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, বাইরের খাবার বেশি খেলে কোলেস্টেরল–ট্রাইগ্লিসারাইড, ফ্যাটি লিভার, সবই বাড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে৷ জাঙ্ক ফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা এখনকার ছেলেমেয়েদের বেশি। অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খেলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায় যা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস)-এর কারণ হয়ে ওঠে। জরায়ুতে জমতে থাকা সিস্ট মারাত্মক আকার নিলে তা বন্ধ্যাত্বের কারণও হতে পারে।
আরও পড়ুন:
বেশি খেলে কর্টিসোল নামে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণও বাড়ে। তখন আরও বেশি করে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। ‘সুগার ক্রেভিং’ ভীষণ রকম বেড়ে যায়, যা থেকে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়তে থাকে।
আসক্তি কাটাবেন কী ভাবে?
প্রবল খিদের মুখে হাই ক্যালোরি ভাজা বা প্রসেস্ড ফুডের আসক্তি বাড়ে৷ কাজেই খিদে মাত্রা ছাড়ানোর আগেই স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নিন কিছুটা৷ কখন কী খাবেন তার মোটামুটি একটা পরিকল্পনা যেন থাকে৷
অনেকেই একবেলা বেশি পরিমাণে খাবার খেয়ে বাকি দিনটা না খেয়ে বা অনেকটা দেরিতে কিছু খেয়ে থাকেন। এতে মনে হয় যে কম খাচ্ছেন, ওজন বাড়বে না। এই অভ্যাস অস্বাস্থ্যকর। এতে ভাজাভুজি খাওয়ার ইচ্ছা আরও প্রবল হয়। তাই চেষ্টা করতে হবে সুষম খাবার খাওয়ার। সারা দিনে ছোট ছোট ৬টা মিল খেতে হবে, তাতে যেন সবুজ সব্জি ও মরসুমি ফল থাকে।
শরীরে জলের ঘাটতি না হলে খাই খাইভাব একটু কমই হয়৷ তাই দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার জল খেতেই হবে।
ঘুম কম হলে ভাজা বা মিষ্টির প্রতি আসক্তি বাড়তে পারে৷ মাঝরাত অবধি জেগে থেকে ঘুমোতে যাওয়া, বা রাতভর জেগে মোবাইল-ল্যাপটপে বুঁদ হয়ে থাকলে, স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ আরও বেড়ে যাবে। তাই সময়মতো ঘুম ও পর্যাপ্ত ঘুমই জরুরি।
যা খেতে ইচ্ছে করছে তা না খেলে যদি অসহ্য লাগে ও অন্য উল্টোপাল্টা খাবার খেয়ে ফেলার প্রবণতা বাড়ে, ঠিক করুন, ১৫ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়ামের পর পছন্দের জিনিসটি অল্প করে খাবেন৷ তবে যাঁরা পছন্দের জিনিস খেতে শুরু করলে আর থামতে পারেন না, তাঁদের এ পথে না হাঁটাই ভাল৷