বছর দেড়েকের বার্ডি এবং তার মা রেগান। ছবি- সংগৃহীত
প্রতি দিনের মতোই ৯ মাসের কন্যাসন্তানের ভিজে ‘ডায়াপার’ বদলাতে গিয়েছিলেন মা। কিন্তু তার পর রীতিমতো ভিরমি খাওয়ার জোগাড় মায়ের।
বছর ৩৮-এর সারা রেগান দেখেন, তাঁর মেয়ে বার্ডির ডায়াপার ভেসে যাচ্ছে রক্তে। কোথা থেকে আসছে এত রক্ত? দীর্ঘ ক্ষণ ডায়াপার পরে থাকার কারণে কিডনিতে কোনও সংক্রমণ হল না তো?
বুঝতে না পেরে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছুটে যান রেগান। নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা রেগানকে জানান, বয়স ৯ মাস হলেও বার্ডির শরীরে হাড়ের গঠন বছর দুয়েকের শিশুর মতো। শুধু তা-ই নয়, এই রক্তপাত তাঁর আগাম বয়ঃসন্ধির লক্ষণও বটে।
বার্ডির মা রেগান সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “ডায়াপারের ওই রক্ত আসলে ওর প্রথম ঋতুস্রাব। আমি এর আগে কোনও দিন এমন অদ্ভুত ঘটনার কথা শুনিনি।”
ঋতুস্রাব হওয়ার আগে এবং পরে সাধারণ ভাবে যে যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়, বার্ডির ক্ষেত্রে তার একটিও প্রকাশ পায়নি বলে জানিয়েছেন বার্ডির মা। এমনকি ঋতুস্রাব চলাকালীন ওর শরীরে কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা বোঝার বা বলার মতো বয়সই হয়নি বার্ডির।
চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, সংখ্যায় কম হলেও নির্দিষ্ট বয়সের আগেই ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার এমন অনেক উদাহরণই আছে। তবে মাত্র ৯ মাসে এই ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া সত্যিই বিরল।
বার্ডি ছাড়াও আরও দুই সন্তানের মা রেগান বলছেন, “দিনের বেলা অনেকটা সময় বার্ডি ক্রেশ-এ থাকে। ওর যাঁরা দেখাশোনা করেন, প্রত্যেক বার তাঁদের মনে করিয়ে দিতে হয় বার্ডির এই বিশেষ অবস্থার কথা। সঙ্গে চিকিৎসকের দেওয়া নথিপত্রও রাখতে হয়। যাতে সঠিক সময়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কারণ, এই কঠিন পরিস্থিতির কথা বার্ডি নিজেও বুঝে উঠতে পারে না।”
প্রথম ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পর যেহেতু বাইরে থেকে চোখে পড়ার মতো তার পরিবর্তন আসেনি, তাই বার্ডির শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলির অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন কতটা দ্রুত হচ্ছে তা বোঝার জন্য ‘এক্স-রে’, ‘আলট্রাসাউন্ড’ এবং নানা রকম হরমোনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
বার্ডির শরীরে হরমোনের এই দ্রুত পরিবর্তনের গতিকে স্লথ করার জন্য চিকিৎসকরা তাকে হরমোন থেরাপি করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। যার সাহায্যে সাময়িক হলেও বয়ঃসন্ধির লক্ষণগুলি কম প্রকাশ পাবে।
মেয়েদের মতো প্রতি মাসে এক বার স্বাভাবিক ঋতুস্রাব হয় না বার্ডির। যখন তখন চাপ চাপ রক্ত দেখা যায় পোশাকে বা ডায়াপারে। শিশু বয়সের এই অনিশ্চিত ঋতুস্রাব যেন ভবিষ্যতে কোনও শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি না করে সে দিকেও লক্ষ রেখেছেন চিকিৎসকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy