নভজোৎ কউর-নভজোৎ সিংহ সিধু। ছবি: পিটিআই।
স্বামী নভজোৎ সিংহ সিধু সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করলেন, তাঁর স্ত্রী নভজোৎ কউর কর্কট রোগের চতুর্থ পর্যায়ের সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন। এক বছর ধরে কঠিন লড়াইয়ের পর নভজোৎ কউর এখন পুরোপুরি সুস্থ। সিধু বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা বলে দিয়েছিলেন নভজোতের বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ৩ শতাংশ রয়েছে। কিন্তু কঠোর ডায়েট, আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্য নভজোৎ অসম্ভবকেও সম্ভব করেছে।’’
২০২৩ সালের মার্চ মাসে এক্সে নিজের ক্যানসার ধরা পড়ার কথা জানান সিধুর স্ত্রী নভজোৎ কউর। সিধু তখন জেলবন্দি। ২০২২ সালে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় সিধুর এক বছর জেলের সাজা ঘোষণা করে শীর্ষ আদালত। সিধু সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘আমাদের ছেলের বিয়ের পর নভজোতের শরীরে ক্যানসার ফিরে আসে। তবে নভজোৎ কখনও ভেঙে পড়েনি, সাহসের সঙ্গে ক্যানসারের মোকাবিলা করেছে।’’ পাতিয়ালার রাজেন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ নামক সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা হয় সিধুর ঘরণীর।
ক্যানসারের চিকিৎসার সময় কেমন ছিল স্ত্রী নভজোতের ডায়েট, তা বিস্তারিত ভাবে বলেন সিধু। কেমন ছিল সেই ডায়েট প্ল্যান? দিনের শুরুতে লেবুজল খেতেন নভজোৎ। তার আধ ঘণ্টা পর ১০-১২টি নিমপাতা চিবিয়ে খেতেন। তিনি নিয়মিত কাঁচা হলুদ ও অ্যাপ্ল সাইডার ভিনিগার খেতেন। এ ছাড়া তাঁর ডায়েটে থাকত কুমড়ো, বেদানা, আমলকি, বিট, আখরোট, লেবুজাতীয় ফল ও বিভিন্ন ধরনের বেরি। বেরিজাতীয় ফল ক্যানসারের খুব ভাল দাওয়াই, এমনটাই বলেছেন সিধু। নভজোতের সমস্ত রান্না হত নারকেল তেল কিংবা আমন্ড অয়েলে। দারচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, গোলমরিচ ও গুড়ের মতো মশলাপাতি তাঁর রোজের ডায়েটে রাখা হত বলে জানিয়েছেন সিধু। সন্ধে সাড়ে ৬টায় দিনের শেষ খাবারটা খেয়ে ফেলতেন নভজোত, পরের দিন সকাল সাড়ে ১০টার আগে আর কিছুই খেতেন না। মূলত ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ ডায়েট মেনে চলতেন তিনি। নভজোৎ যে জল খেতেন তার পিএইচ মাত্রা ৭ হওয়া ছিল বাধ্যতামূলক। কার্বহাইড্রেটজাতীয় খাবার, যেমন ভাত, রুটি, চিনি একেবারেই খেতেন না সিধু-পত্নী। সিধু বলেন, ‘‘আমাদের কাছে অনেক টাকা-পয়সা আছে বলে নভজোৎ ক্যানসারকে হারাতে সক্ষম হয়নি, নিয়মানুবর্তিতা ও কঠোর রুটিন মেনে চলেছিল বলেই ও আজ সুস্থ হতে পেরেছে।’’
কড়া ডায়েট করেই কী ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব?
ক্যানসারের রোগীদের কড়া ডায়েটে থাকাটাই কাম্য, এমনই মনে করেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরা। চিকিৎসক রাকেশ কুমার শর্মা এই বিষয় বলেন, ‘‘নভজোৎ কউর স্টেজ ৪ ক্যানসারের সমস্ত চিকিৎসা করিয়েছিলেন। উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার সাহায্যে কিছু কিছু চুতুর্থ পর্যায়ের ক্যানসারের ক্ষেত্রে রোগী সুস্থ হয়ে ফিরছেন। যদিও বেশ কিছু গবেষণা দাবি করেছে যে, হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন যৌগ ক্যানসার রোগ সারিয়ে তুলতে কিংবা এই রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম, তবে এই দাবি মানুষের শরীরে কতটা কার্যকর তার যথাযথ কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি।’’ চিকিৎসক পুনিত গুপ্ত বলেন, ‘‘কেবলমাত্র ডায়েটের উপর নির্ভর করেই ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব নয়। তবে ক্যানসার নিরাময় করতে ডায়েট যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ক্যানসারের চিকিৎসার সময় রোগীর ওজন কমে যায়, অ্যানিমিয়া হয়, শরীরে ইলেট্রোলাইটের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। সেই সব পরিস্থিতিতে শরীর চাঙ্গা রাখতে কড়া ডায়েটের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy