প্রার্থনা জোগান। ছবি: সংগৃহীত
প্রার্থনা জোগান। ২২ বছর বয়স। পেশায় মডেল। সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রামের পাতায় একটি ভিডিয়ো ভাগ করে নিয়েছেন বেঙ্গালুরুর এই কন্যা। তুলে ধরেছেন নিজের জীবনের কাহিনি।
কী সেই কাহিনি?
২০১১ সালে প্রার্থনার যখন ১১ বছর বয়স, তখন ‘ভিটিলিগো’ বা ‘লিউকোডার্মা’ রোগে আক্রান্ত হন। সহজ ভাষায় বললে তাঁর মুখে দেখা দিতে শুরু করে শ্বেতির দাগ। ধীরে ধীরে মুখ ভরে যায় সাদা ছোপে। ছোট থেকেই শ্বেতি নিয়ে বিভিন্ন কটূক্তি শুনতে হয়েছিল তাঁকে। স্কুল, পাড়ায়, বন্ধুবান্ধবদের মহলে শ্বেতির দাগ নিয়ে তাঁর আড়ালে কম কানাঘুষো হয়নি। একটা সময়ের পর প্রার্থনার নিজের প্রতি বিরক্তি চলে এসেছিল। এমন অনেক দিন গিয়েছে যে আয়নায় নিজের মুখ দেখতেও ইচ্ছে করত না। ছোট থেকেই মডেল হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। ম্যাগাজিনের প্রথম পাতায় নিজেকে দেখতে চাইতেন প্রার্থনা।
মাধুরী দিক্ষীত, ঐশ্বর্যা রাইয়ের মতো বলিউডের তাবড় অভিনেত্রীরা ছিলেন প্রার্থনার অনুপ্রেরণা। তাই প্রথম যে দিন মুখে শ্বেতি দেখতে পান, মডেল হওয়ার স্বপ্ন যেন ধাক্কা খায়। তবে একটি সময়ের পর ধীরে ধীরে প্রার্থনা বুঝতে পারেন, সৌন্দর্যের আসল সংজ্ঞা আলাদা। ত্বকের রং, চেহারা কোনও কিছুই সৌন্দর্যের নির্ধারক হতে পারে না। অনেকেই সেই সময়ে প্রার্থনাকে বুঝিয়েছিলেন, শ্বেতি দূর করার জন্য চিকিৎসা শুরু করতে। সেই পরামর্শ উড়িয়ে দেন প্রার্থনা। বরং নিজেকে কী ভাবে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শ্বেতি মুখের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে লাগল। মনে মনে শঙ্কিত হয়ে উঠলেও প্রার্থনা নিজের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছেন। কর্মক্ষেত্রেও অনেক চাপা তিরস্কার সহ্য করতে হয়েছে। শ্বেতির দাগ ঢাকার জন্য চড়া রূপটান করতে বলা হত। কোনও কিছুতেই দমেননি তিনি। ২০১৬ সালে একটি আন্তর্জাতিক মানের ফ্যাশন পত্রিকার প্রচ্ছদে তাঁর ছবি ছাপা হয়। ২০২০-তে আরও একটি পত্রিকার প্রচ্ছদে দেখতে পাওয়া যায় প্রার্থনাকে। এই মুহূর্তে প্রার্থনা বেশ অনেকগুলি ফ্যাশন সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। প্রার্থনা বলছেন, ‘‘শ্বেতি বা অন্যান্য কোনও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যেন স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার নামই সাফল্য।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy