গরু, মোষ, ছাগলের দুধ খাওয়ার চল দীর্ঘ দিনের। তালিকায় রয়েছে গাধা বা উটের দুধও। কিন্তু তা বলে আরশোলার দুধ!
ডানা মেলে ফরফরিয়ে সেটি উড়তে শুরু করলে এমনিতেই অনেকের আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হয়। সেই আরশোলার দুধ!
গবেষণা বলছে, আরশোলার দুধ নাকি সুপারফুডের তালিকায় নব সংযোজন! প্রোটিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ঠাসা সেই বস্তুটি নাকি পুষ্টিগুণে গরুর দুধকেও টেক্কা দিতে পারে!
তবে, রান্নাঘরে, ভাঁড়ার ঘরে যে আরশোলা আমরা দেখে অভ্যস্ত, তার দুধের কথা এখানে হচ্ছে না। এই আরশোলা হল ‘প্যাসিফিক বিটল ককরোচ’ যার বিজ্ঞানসম্মত নাম ডিপ্লোটেরা পাঙ্কটাটা। বাদাম, দানাশস্য আর যা যা সুপার ফুডের তালিকায় পড়ে, তার মতোই নাকি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই আরশোলার দুধ। শুনে কারও গা ঘিনঘিন করতে পারে, কেউ অবাক হতে পারেন। তবে এই দুধ তৈরি হয় বাচ্চা আরশোলাদের পানের জন্য। এ নিয়ে নানা রকম গবেষণা চলছে। তাতেই জানা গিয়েছে, গরুর দুধের চেয়েও তা বেশি উপকারী।
আরও পড়ুন:
‘জার্নাল অফ দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ ক্রিস্ট্যালোগ্রাফি’-তে ২০১৬ সালে এ নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষণায় এই দুধ বাচ্চা আরশোলার শরীরে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। দেখা যায়, পাকস্থলীতে যাওয়ার পর তা সাদা দানাদার পদার্থে পরিণত হচ্ছে। গরুর দুধের মতো তরল নয়, ঘন দুধের মতো দেখতে একটি উপাদান নিঃসৃত হয় সেই বিশেষ শ্রেণির আরশোলার শরীর থেকে। গবেষণা বলছে, সেটি গরুর দুধের চেয়ে তিন গুণ বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। এতে প্রোটিন, ফ্যাট, শর্করা— সবই থাকে।
মানুষের খাদ্য আরশোলার দুধ?
বিষয়টি এখনও গবেষণার স্তরেই রয়েছে। পুষ্টিগুণ নিয়ে দ্বিমত না থাকলেও তাকে এখনও মানুষের খাদ্য বলে দাবি করা হয়নি। ওই বিশেষ ধরনের আরশোলা থেকে দুগ্ধ নিষ্কাশনও বেশ কঠিন ব্যাপার। তবে এ নিয়ে গবেষণা আরও এগোলে, ভবিষ্যতে আরশোলার দুধ সাপ্লিমেন্ট হিসাবে খাওয়ার চল হতে পারে।