Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
dress

অতিমারিতে বিক্রি বন্ধ ফুলিয়ায়, তাঁতিদের থেকে শাড়ি কিনে পোশাক তৈরি কলকাতার ডিজাইনারের

তাঁর মনে হয়েছিল, কী করে সাহায্য করা যায় এই অসহায় তাঁতিদের। সেই থেকেই নতুন পোশাকের পশরা তৈরি করলেন কলকাতার ডিজাইনার।

ফুলিয়ার তাঁতিদের করা জামদানি থেকে তৈরি কাব্যের ডিজাইন।

ফুলিয়ার তাঁতিদের করা জামদানি থেকে তৈরি কাব্যের ডিজাইন। ছবি: সংগৃহীত

পৃথা বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ১৬:১৬
Share: Save:

‘দিদি এই শাড়িগুলো থেকে থেকেই ফেঁসে গেল। কে আর কিনবে এগুলো’— অতিমারির পর থেকে ফুলিয়ার তাঁতিভাইদের মুখে এমন কথা বারবার শুনতে হয়েছে কলকাতার ডিজাইনার কাব্য সিংহ কুণ্ডুকে। তখন থেকেই তাঁর মনে হয়েছিল, কী করে সাহায্য করা যায় এই অসহায় তাঁতিদের। সেই থেকেই নতুন পোশাকের পশরা তৈরি করলেন কলকাতার ডিজাইনার। জামদানি শাড়ি, যেগুলো ফুলিয়ায় বিক্রি হয়নি সেগুলো তিনি কিনে নেন। তা থেকেই কেটেকুটি পশ্চিমি ধাঁচে পোশাক তৈরি করে ফেলেন কাব্য। এই পোশাকগুলির নাম দিয়েছেন, ‘আ টেল অ্যাজ ওল্ড অ্যাজ টাইম’।

‘‘অতিমারিতে আমাদের মতো ডিজা‌ইনারের তেমন ক্ষতি হয়নি। লোকে পোশাক-আসাক কিনছে কম। তা-ও কিনছে। আমরা ঝট করে দোকান থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেটমাধ্যমে নিয়ে যেতে পেরেছি। কিন্তু তাঁতিরা তো সেটা পারেননি। কথা বলে বুঝেছি নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁদের, যেগুলির সমাধান তাঁদের হাতে নেই। তাই ভাবলাম আমি যদি সাহায্য করতে পারি। কারখানায় বহুদিন রাখা শাড়ি, যেগুলি একটু নষ্ট হয়ে এসেছে, আমি কিনে নিতাম, ’’ বললেন কাব্য।

গত বছরই চাকরি ছেড়ে নিজস্ব ডিজাইনার ব্র্যান্ড শুরু করেন কাব্য। জানালেন, দাদু-ঠাকুমার পুরনো বাড়িতেই স্টুডিও করেছেন তিনি। সেখানে আলমারিতে প্রচুর পুরনো শাড়ি পেয়েছিলেন। নিজে যেহেতু শাড়িতে খুব একটা স্বচ্ছন্দ নন, তাই শাড়িগুলোকে নিয়ে কী করা যায়, চিন্তাভাবনা করছিলেন। কোনও পোশাকই যে ফেলে দেওয়ার নয়, সেই থেকেই বিশ্বাস করা শুরু করলেন তিনি। এখন বাড়তি কাপড় দিয়ে তিনি মাথার ফিতে, ফেস মাস্ক, বাথরুমের চটি বানাচ্ছেন। এগুলো অবশ্য বিক্রির জন্য নয়। পোশাকের সঙ্গে তিনি এগুলো উপহার দিচ্ছেন খদ্দেরদের। যাতে তাঁরাও বুঝতে পারেন এক টুকরো কাপড়ও আবর্জনা নয়। ‘‘আমি নিজে ডিজাইনার হয়েও বলব, যার যা পোশাক রয়েছে সেগুলো ছেড়ে নতুন কিছু কেনার মানে হয় না। আমি চেষ্টা করি, পুরনো কাপড় সবই ব্যবহার করার। খদ্দেরদের বলি বাড়িতে পুরনো কোনও শাড়ি থাকলে নিয়ে আসতে। ধরুন কোনও ছেলে মায়ের শাড়ি নিয়ে কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না। আমি সেটা নিয়ে তাঁকে কুর্তা বানিয়ে দিতে পারি, ’’ বললেন কাব্য। ফ্যাশন সম্পর্কে তাঁর এই নীতিই ফুটে উঠেছে তাঁর ডিজাইনে।

অন্য বিষয়গুলি:

Fashion dress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE